চিয়া ডিম কী জানেন, কখনও খেয়েছেন কি? ছবি: সংগৃহীত।
ডিম বললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে সাদা ডিম্বাকার আকৃতি। আকারে ছোট-বড়, স্বাদে তার রকমফের হতেই পারে। তবে ডিম বলতে এটাই বোঝায়।
হাঁস, মুরগি, কোয়েল— সাধারণত যে যে ডিম লোকে খেয়ে থাকে, সেগুলি এমনই। প্রোটিনে ভরপুর, পুষ্টিতে ঠাসা। কিন্তু এর বাইরেও যে নিরামিষ ডিম হয়, তা জানেন কি?
ভাবছেন বুঝি ভাঁওতা দেওয়ার চেষ্টা? ছানা দিয়ে, সন্দেশে রং মাখিয়ে ডিমের আকার দিয়ে, ডিম বলে চালানোর চেষ্টা? তা কিন্তু মোটেই নয়। ভিগান, মানে যাঁদের ‘অতি নিরামিষাশী’ বলা চলে, তাঁদের জন্যই এই ডিমের কদর।
বিষয়টি ঠিক কী? এ হল চিয়া-ডিম। স্বাস্থ্যসচেতন মানুষজনেরা চিয়া বীজের শুধু নাম জানেন তা নয়, জলখাবার থেকে রাতের খাবারে মাঝেমধ্যেই এই বীজ ছড়িয়ে নেন। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, প্রোটিন, ফ্যাটি অ্যাসিডে ভরা এই বীজের গুণ যে অনেক। সেই চিয়া বীজের ডিম হল চিয়া ডিম, যা নাকি ভিগানদের রান্নায় ব্যবহার হচ্ছে। প্রশ্ন উঠতেই পারে চিয়া বীজের আবার ডিম হয় কী করে?
আসলে চিয়া বীজ কয়েক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখলে নরম হয়ে জেলের মতো পদার্থ তৈরি হয়। ডিমের ভিতরের অংশের সঙ্গে যার কিঞ্চিৎ মিল পাওয়া যেতে পারে। ডিমের বাইরে সাদা অংশ থাকে, তার ভিতরে কুসুম। সাদা অংশটি কাঁচা অবস্থায় যেমন হরহরে হয়, এটিও তেমন। পুষ্টিবিদ সামরিন সানিয়া বলছেন, ‘‘যাঁদের ডিমে অ্যালার্জি বা যিনি ডিম খান না, তাঁর জন্য চিয়া ডিম হতে পারে ভাল বিকল্প।’’ আমেরিকার কৃষি দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ১০০ গ্রাম চিয়া বীজে ১৭ গ্রাম প্রোটিন, ৫৯৫ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম, ৩২৬ মিলিগ্রাম ম্যাগনেশিয়াম, ৬৯১ মিলিগ্রাম ফসফরাস থাকে। অন্য দিকে, ১০০ গ্রাম ডিমে ১০.৭ গ্রাম প্রোটিন মেলে। সেই বিচারে এগিয়ে চিয়া ডিম, মানে জলে ভেজানো চিয়া বীজ।
চিয়া ডিমের কদর বাড়ছে কেন?
১. চিয়া বীজে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার মেলে। ফাইবার হজমে সহায়ক, পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। স্বাস্থ্য ভাল রাখতে পুষ্টিবিদ থেকে চিকিৎসকেরা ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে বলেন।
২. চিয়া বীজে থাকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে এটি সাহায্য করে।
৩. শরীরের জন্য অপরিহার্য হল প্রোটিন। প্রাণিজ প্রোটিন না খেলে উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের প্রয়োজন পড়ে। চিয়ায় প্রচুর প্রোটিন মেলে।
অনেকেই আছেন যাঁরা ডিম, মাছ, মাংস খান না অর্থাৎ নিরামিষাশী, তাঁরা খেতে পারেন চিয়া ডিম। আবার এক দল আছেন, যাঁরা শুধু ডিম, মাছ, মাংস খান না তা-ই নয়, প্রাণিজ কোনও খাবারই ছুঁয়ে দেখেন না, তাঁদের বলে ভিগান। ভিগানরা যেমন প্রাণিজ দুধ, তা থেকে তৈরি খাবারও খান না।
সে ক্ষেত্রে ভিগানদের জন্য কেক বা রকমারি খাবার কী ভাবে তৈরি হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে যায়। কেকে যদি ডিম দেওয়া না হয়, বদলে দুধ, ক্রিম, নিদেনপক্ষে দই দিয়ে কেক বানানো হয়। কিন্তু ভিগানরা সে সবও খান না। সে কারণে চিয়া ডিমের চল। ভিগানদের কেক বানানোর সময়ে এমনি ডিমের বদলে চিয়া ডিম ব্যবহার করা হয়।
কী ভাবে বানাবেন চিয়া ডিম?
দেড় কাপ জলে আধ কাপ চিয়া বীজ ভিজিয়ে রাখুন। ৭-৮ ঘণ্টা বাদে বীজ জলে পেয়ে ফুলে উঠবে। সে সময়ে চামচ দিয়ে নাড়াচাড়া করে নিলেই জেলের মতো দেখতে হয়ে যাবে। এটি চিয়া ডিম। স্মুদি বা প্যান কেক তৈরির সময়ও এই মিশ্রণ ব্যবহার করা যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy