‘ডেমোডেক্স ফলিক্যুলোরাম।’ ছবি: সংগৃহীত
রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় মুখের উপরই পরস্পর সঙ্গমে লিপ্ত হয় এক দল প্রাণী। শুনে চমকে ওঠার মতোই একটি বিষয়। সম্প্রতি ‘মলিকিউলার বায়োলজি অ্যান্ড ইভোলিউশন’ নামক মেডিক্যাল পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এই গবেষণাটি সম্পর্কে জানা গিয়েছে। এই অতি ক্ষুদ্রকায় প্রাণীগুলির নাম ‘ডেমোডেক্স ফলিক্যুলোরাম।’ অনুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে চাক্ষুষ করতে হয় এমন প্রাণীগুলির দৈর্ঘ্য ০.৩ মিলিমিটার। মানুষের চুলে এবং মানবদেহের ত্বকের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এই প্রাণীগুলির আস্তানা। ত্বকের কোষে জমে থাকা সেবাম বা তেল এই প্রাণীগুলির প্রধান খাদ্য। চোখের পলকে, নাক, স্তনবৃন্ত এবং ভ্রু-সংলগ্ন অংশে মূলত এই প্রাণীগুলি আত্মগোপন করে থাকে।
গবেষণা বলছে, মানুষের মতো শারীরিক চাহিদাও এই প্রাণীগুলির একটি স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। রাত হলে ত্বকের গভীর থেকে বার হয় এরা। খুঁজে নেয় সঙ্গী। আর তার পরেই উত্তাল যৌনতায় মিলিত হয় তারা। সঙ্গম শেষে ডিম পাড়ে। বংশবৃদ্ধি হয়। সেই ভ্রূণগুলি বড় হয়। ত্বকের রন্ধ্রে বাস করে। যৌনতায় লিপ্ত হয়। ডিম পাড়ে। আমৃত্যু চক্রাকারে এই ভাবে আবর্তিত হয়। ৯০ শতাংশ মানুষের মুখেই বসবাস করে এই প্রাণীগুলি।
কী ভাবে মানবদেহে প্রবেশ করে এই প্রাণীগুলি?
স্তন্যপান করানোর সময়ে মায়ের স্তনবৃন্ত থেকে এই প্রাণীগুলির দেহের অভ্যন্তরে আগমন। এই ভাবে এক শরীর থেকে অন্য শরীরে প্রবেশ করে। গবেষকরা বলছেন, এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্রাণীগুলি ত্বকের কোষ পরিষ্কার রাখে। তবে এই প্রাণীগুলি ধীরে ধীরে অবলুপ্তির পথে হাঁটছে। তার অন্যতম বড় কারণ হল ‘ইনব্রিডিং’।
একই মানুষের দেহে প্রজনন এবং ওই ব্যক্তির মৃত্যুর আগে পর্যন্ত প্রায় ১২০০ প্রজন্ম পর্যন্ত বংশবৃদ্ধি করে। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে এই প্রাণীগুলিকে রক্ষা করত যে ডিএনএ-সেটিও এই ইনব্রিডিং-এর ফলে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এই কারণে দিনের বেলা ত্বকের রন্ধ্র ছাড়া এরা বেরোতে পারে না। গবেষকদের মতে, এই প্রাণীগুলি যত বেশি মানবদেহে নিজেদের অভিযোজিত করবে, তত এই প্রাণীগুলি রন্ধ্র থেকে বেরোনোর ক্ষমতা হারাবে। ফলে সঙ্গমেও লিপ্ত হওয়ার সুযোগ থাকবে না। হবে না বংশবৃদ্ধিও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy