সকালে উঠে কেউ চা খান, কেউ বাদাম ভিজানো, কেউ আবার বেছে নেন ফলও। কিন্তু খালি পেটে টক দই কি খাওয়া চলে? পুষ্টিবিদেরা কেউ বলেন, দিনের বেলা টক দই খাওয়া ভাল। কারও মত, দু’টি খাবারের মাঝে টক দই খাওয়া ভাল।
তবে, মুম্বইয়ের শরীরচর্চা প্রশিক্ষক নীপা আশ্রম ইনস্টাগ্রাম ভিডিয়োয় পরামর্শ দিয়েছেন, সকালে খালি পেটে টক দই খাওয়ার। নীপার যুক্তি, বদহজম, অম্বলের ধাত থাকলেও এই অভ্যাস সাহায্য করবে। কারণ দইয়ে থাকা প্রোবায়োটিক বৃহদন্ত্রে গিয়ে হজমক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়, যার জন্য পেটের সমস্যা দূরে থাকে। কিন্তু সত্যিই কি তাই? দিনের শুরুটা দই দিয়ে হতে পারে?
ভিটামিন, প্রোটিন, খনিজে ভরপুর টক দই বা ইয়োগার্ট খাওয়ার চল বিশ্ব জুড়ে। পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে দই বিশেষ কার্যকর। অন্ত্রে থাকে ভাল এবং খারাপ ব্যাক্টিরিয়া। ভাল ব্যাক্টিরিয়া হজমে সহায়ক। দইয়ে থাকা প্রোবায়োটিক অন্ত্রের ভাল ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। পুষ্টিবিদ গরিমা গোয়েল বলছেন, ‘‘পেট বা অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে, রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে দই।’’
দইয়ের উপকারিতা
প্রোবায়োটিকের পাশাপাশি এতে ক্যালশিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিন বি মেলে। ক্যালশিয়াম হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে। দইয়ে থাকা জলীয় উপাদান শরীরে জলের ঘাটতি দূর করতেও সহায়ক।
উপকারিতা থাকলেও খালি পেটে দই খাওয়ার ব্যাপারে কিছুটা ভিন্নমত রয়েছে পুষ্টিবিদদের মধ্যে। পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলছেন, খালি পেটে দই খাওয়াই যায়। সকালে উঠে দইয়ের ঘোল করে খেলে হজমশক্তি বাড়ে। তবে অম্বলের ধাত থাকলে খালি পেটে দই খাওয়া ঠিক নয়। একই যুক্তি পুষ্টিবিদ গরিমা গোয়েলেরও। তিনিও বলছেন, প্রোবায়োটিক পেটের জন্য উপকারী হলেও, খালি পেটে খেলে কারও কারও ক্ষেত্রে দইয়ে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড হজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে। খালি পেটে টক দই খেলে পাকস্থলীর অভ্যন্তরে থাকা অ্যাসিডের প্রভাবে প্রোবায়োটিক নষ্টও হতে পারে।এমনকি, ঠান্ডা লাগা বা সাইনাসের ধাত থাকলেও খালি পেটে দই খেলে সমস্যা হতে পারে।
তা হলে কী ভাবে দই খাবেন?
শম্পা বলছেন, অনেকেই সকালে টক দইয়ের সঙ্গে চিঁড়ে, খই খান। কেউ দইয়ের সঙ্গে ভাতও খান। অনেকেই শসা মিশিয়েও খান। দই-ভাত যেমন হজমে সহায়ক। তেমনই শসা, চিয়া বীজ দইয়ে মিশিয়ে খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হবে। চাইলে কেউ ফলের সঙ্গেও দই খেতে পারেন। তবে একই সঙ্গে গরিমার পরামর্শ, দই খেতে হবে চিনি ছাড়া, ঠান্ডা নয়। ঘরের তাপমাত্রায় থাকা দই-ই বেছে নেওয়া দরকার।