বাজার চলতি প্রোটিন শেক আদৌ কি উপকার করে? ছবি: সংগৃহীত।
বছর তিনেক আগে, ২০২০ সালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল ১৬ বছরের লন্ডনের বাসিন্দা রোহন গোধানিয়া নামে এক কিশোরের। প্রাথমিক ভাবে মৃত্যুর কারণ নিয়ে একটা ধোঁয়াশা ছিল। পরে মৃতদেহের ময়নাতদন্তের পরে জানা যায় আসল কারণ। প্রোটিন শেক খেয়েই মৃত্যু হয়েছে রোহনের। জানা গিয়েছে, ওই কিশোর অপুষ্টিতে ভুগছিল। পেশি সবল হচ্ছিল না। অনেক সমবয়সিদের চেয়ে খানিক দুর্বল ছিল রোহন। সেই কারণে তার বাবা দোকান থেকে প্রোটিন শেক কিনে এনে খাওয়াতে শুরু করেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরে প্রোটিন শেক খাওয়ার ফলে রোহন ‘অর্নিথাইন ট্র্যান্সকার্বোমাইলেস’(ওটিসি)-এর মতো একটি বিরল রোগে আক্রান্ত হয়। যার ফলে ধীরে ধীরে ওই কিশোরের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা নষ্ট হতে শুরু করে। একটা সময় মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দেওয়ায় তার মৃত্যু হয়। রোহনের মৃত্যুর কারণ প্রকাশ্যে আসতেই লন্ডনে প্রোটিন শেক খাওয়া নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হয়। সে দেশের অনেক চিকিৎসকই প্রোটিন শেক খেতে নিষেধ করা শুরু করেন।
পেশি সবল হবে মনে করে এবং শরীরের যত্ন নিতে অনেকেই নিয়মিত প্রোটিন শেক খান। সাময়িক ভাবে ভিতর থেকে শক্তিও জোগায় এই পানীয়। সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রোটিন অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান। প্রোটিনের ঘাটতি নানা রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। শরীরে প্রোটিনের পরিমাণ পর্যাপ্ত রাখার জন্য প্রোটিন শেক খাওয়া কি সত্যিই জরুরি? চিকিৎসক সুর্বণ গোস্বামী বলেন, ‘‘মাছ, মাংস, ডিম, দুগ্ধজাত খাবারে ভরপুর প্রোটিন রয়েছে। প্রোটিনের ঘাটতি মেটাতে সেগুলি খাওয়াই শ্রেয়। প্রাকৃতিক প্রোটিন যত খাওয়া যায়, তত বেশি উপকার। তবে প্রোটিন পাউডার যে খাওয়া যায় না, তেমন নয়। এই পাউডারগুলি কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা হয়। ফলে নানা রকম উপাদান মেশানো হয়। তাই স্বাস্থ্যগুণের দিক থেকে মাছ, ডিমের কাছাকাছিও যায় না প্রোটিন পাউডার। অপুষ্টিতে যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের অনেক সময় প্রোটিন পাউডার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকি। তা-ও সেটা ফর্মুলা বুঝে। তবে কোনও কারণ ছাড়া প্রোটিন শেক না খাওয়াই ভাল।’’
শরীর সুস্থ রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম, সাঁতার জগিংয়ের পাশাপাশি খাওয়া নিয়েও সতর্ক থাকা জরুরি। যাঁরা জিমে যাওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত কড়া ডায়েটে থাকেন, তাঁদের শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি পূরণের জন্য প্রোটিন শেকের শরণাপন্ন হতে দেখা যায়। তবে মাপ বুঝে যদি খাওয়া যায়, তা হলে প্রোটিন পাউডার খেলে খুব একটা সমস্যা হওয়ার কথা নয়। সে ক্ষেত্রে বাজারচলতি প্রোটিন পাউডার না খাওয়াই ভাল। বাড়িতেও কিন্তু নিজের মতো করে বানিয়ে নিতে পারেন প্রোটিন পাউডার।
উপকরণ:
চিয়া বীজ: ৪ চামচ
তিসি বীজ: ৩ চামচ
কুমড়ো বীজ: ৪ চামচ
ব্রাউন রাইস পাউডার: ৩ চামচ
প্রণালী:
প্রতিটি উপকরণ মিহি করে মিক্সিতে গুঁড়িয়ে নিন। তার পর দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। তবে দুধে সমস্যা থাকলে গরম জলে গুলেও খাওয়া যেতে পারে।
কত দিন অন্তর খাবেন সেটা নির্ভর করছে শারীরিক পরিশ্রমের পরিমাণের উপর। যদি নিয়মিত জিমে ৩-৪ ঘণ্টা শরীরচর্চা করেন, সেক্ষেত্রে রোজ খেতে পারেন। তবে মাঝেমাঝে শরীরচর্চার অভ্যাস থাকলে রোজ না খাওয়াই ভাল। শরীরে প্রোটিনের দরকার আছে। কিন্তু প্রোটিনের পরিমাণের অত্যধিক হয়ে গেলে মুশকিলে পড়তে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy