Sourced by the ABP
‘এ ব্যথা কী যে ব্যথা’... সত্যি তাই!
সদ্য পেরোনো পুজোয় অনেক মনের ব্যথায় মলম লেগেছে, অনেকে ব্যথা পেয়েছে নতুন করে। কিন্তু দেহের ব্যথা যাঁদের নিত্যসঙ্গী, তাঁদের মনের ব্যথার খবর রাখার সময় কোথায়!
রোজ হাঁটু মুড়ে ঘর মোছা, ঘাড়ে-কনুইয়ের জোড়ের নির্দিষ্ট জায়গায় রোজ একই ভাবে চাপ লাগা ডেকে আনে বিপদ। ব্যথার রকমফেরের মধ্যে বার্সাইটিস এর অন্যতম কারণ। চিকিৎসকদের মতে, আমাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক নড়াচড়ার জন্য হাড় ও পেশির জোড়ের (জয়েন্ট) মাঝে এক ধরনের তরল (ফ্লুইড) ভরা থলি থাকে, যাকে বলা হয় ‘বার্সা’। এই থলি আসলে জোড়গুলোকে আগলে রাখে। কিন্তু ক্রমাগত চাপ পড়লে সেখানে প্রদাহ হয়। শুরুতে সতর্ক না হলে বার্সা নষ্টও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ব্যথা আরও চেপে বসবে শরীরে।
চিকিৎসক অনিন্দ্য বসুর কথায়, “নিয়মিত ওজন বওয়া, জিম করা, বিশেষ করে অ্যাথলিটদের ক্ষেত্রে বার্সাইটিস দেখা যায়। হাঁটু মুড়ে বসে ঘর মোছেন যাঁরা, তাঁদেরও হতে পারে এ রোগ। এ ছাড়াও প্রার্থনার জন্য হাঁটু মুড়ে বসার থেকেও বার্সাইটিস হতে পারে। আবার কোনও ট্রমা, জোরে আঘাত লাগলে বা আর্থ্রাইটিস থাকলে, তাঁদেরও আঁকড়ে ধরতে পারে এই সমস্যা। বলা যায়, আঘাত বা শরীরের কোনও জোড়ের অতিরিক্ত ব্যবহার বার্সাইটিসের কারণ হতে পারে।” তবে শুরুতেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে দু’-তিন সপ্তাহেই ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। যে কারণে সমস্যা হচ্ছে, সেই কাজটা বন্ধ রাখা জরুরি। তার পরে বিশ্রাম, ঠান্ডা সেঁক, ক্রেপ ব্যান্ডেজ বেঁধে রাখার মতো পরামর্শ দেওয়া হয়। হাঁটুতে সমস্যা হলে হাঁটু মুড়ে কাজ করায় নিষেধ করা হয়। পরিস্থিতি আরও একটু গুরুতর হলে ওই থলি থেকে ফ্লুইডটা বার করে বা থলিটাই বার করার মতো পদক্ষেপ নেন চিকিৎসকেরা।
আমাদের হাঁটু, কনুই, ঘাড়, নিতম্ব সব জায়গাতেই বার্সা থাকে। হঠাৎ করে কয়েক দিন ধরে প্রচণ্ড ব্যথা, ফুলে যাওয়া বার্সাইটিসের অন্যতম লক্ষণ। ঘাড়ে সব সময়ে ফোলাটা বোঝা যায় না। তবে চিকিৎসকের কাছে গেলে সাধারণ আর বার্সাইটিসের মধ্যে ফারাক তিনি বুঝতে পারেন সহজেই। চিকিৎসকদের মতে, বাতের ব্যথা যেমন অনেক দিন ধরে আস্তে আস্তে হয়। বার্সাইটিসের ফোলা ভাবটা চোখে পড়ার মতো হয়।
তার সঙ্গে শরীরের সেই অংশ লাল হয়ে যাওয়া, কোনও নির্দিষ্ট ভঙ্গিতে দীর্ঘক্ষণ বসে বা দাঁড়িয়ে থাকলে ব্যথা বাড়তেও দেখা যায়। এক্স-রে নয়, বার্সাইটিস বোঝা যায় ইউএসজি করলে। প্রয়োজনে এমআরআই করাতে হয়। অর্থোপেডিক সার্জন রঞ্জন কামিল্যার কথায়, “রোগী ডায়াবেটিক কি না, কিডনিতে কোনও সংক্রমণ রয়েছে কি না, এ সব দেখে নেওয়া জরুরি। এই দুই রোগে বার্সাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। চিকিৎসায় কাজ না হলে পুরো থলিটাই বার করে দিতে হয়। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বার্সাইটিস সারিয়ে তোলা যায়। স্বাভাবিক ভাবে কাজকর্ম করাও যায়। শুধু যে অঙ্গের সুরক্ষা-কবচ (বার্সা) ক্ষতিগ্রস্ত, তা আগলে রাখতে হয় একটু বেশি।”
মন খারাপ হলে, মন ভাঙলে যেমন মনের যত্ন নিতে হয়। তেমনই ‘শরীরের নাম মহাশয়’ বলে ‘যা সহাবে, তাই সয়’ ভেবে না নেওয়াটাই বাঞ্চনীয়। শরীরে কষ্ট হলে সে বিষয়ে সাবধান হতে হবে বইকি!
অরিতা ধারা ভট্ট
মডেল: ভারতী লাহা
ছবি: জয়দীপ মণ্ডল
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy