কী কী ব্যায়াম করলে বয়সের ছাপ পড়বে না। ছবি: ফ্রিপিক।
পঞ্চাশ পেরিয়ে যাওয়া মানেই যে শরীর-মনে বার্ধক্য এসে চেপে বসবে, তা কিন্তু একেবারেই নয়। বয়স বাড়বে কালের নিয়মেই। কিন্তু শরীরকে যদি সেই ভাবে চালনা করা যায়, তা হলে পঞ্চাশের পরেও তারুণ্য ধরে রাখা সম্ভব। একটা বয়সের পর গিয়ে ওজন কমানোর আশা প্রায় ছেড়েই দেন অনেকে। শরীরচর্চা করার অভ্যাসও চলে যায়। ফলে হার্টের রোগ, লিভারের সমস্যা, কিডনির অসুখ এবং বাতের ব্যথাবেদনা হানা দেয় পঞ্চাশ থেকে ষাটের মধ্যেই। তখন হাঁটতে চলতে সমস্যা, সিঁড়ি ভাঙতে গেলে আতঙ্ক আর ব্যায়ামের কথা শুনলেই আলস্য এসে চেপে ধরে। ফিটনেস প্রশিক্ষকেরা বলছেন, ষাটের কাছাকাছি এসেও কিন্তু ওজন ঝরানো সম্ভব। এমন কিছু ব্যায়াম রয়েছে, যাতে বেশি দৌড়ঝাঁপ করার দরকার নেই। কিন্তু নিয়ম মেনে করতে পারলে শরীর সুস্থ ও সবল থাকবে এবং আর্থ্রাইটিস, ডায়াবিটিস, হার্ট ও কিডনির অসুখ চট করে কাছ ঘেঁষবে না।
পঞ্চাশ থেকে ষাটের মধ্যে কী ভাবে শরীরচর্চা করবেন?
বার্ধক্যজনিত সমস্যাগুলিকে দূরে রাখতে তিনটি বিষয়ের উপর জোর দিতে হবে— শরীরচর্চা, ডায়েট ও মানসিক স্বাস্থ্য। চল্লিশের পর থেকেই হাড়ের ক্ষয় হতে শুরু করে একটু একটু করে। যাঁরা সারা দিন বসে কাজ করেন অথবা যাঁদের কায়িক শ্রম একেবারেই হয় না, তাঁদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা আরও বেশি। বিশেষ করে, অবসরের পরে আলস্য আরও বেড়ে যায়। তখন শুয়েবসেই বেশির ভাগ সময় কাটান অনেকে। প্রশিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, এই সময়েই নিয়ম করে পায়ের জন্য স্কোয়াট, স্টেপ আপের মতো ব্যায়াম করতে হবে। যদি হার্টের সমস্যা না থাকে, তা হলে পুশ আপ, কম ওজনের ডাম্বেল নিয়ে শোল্ডার প্রেস করা যেতে পারে। এই ব্যায়ামগুলি করলে পেশির শক্তি বজায় থাকে, শরীরও টানটান থাকে।
একটা বয়সের পর হঠাৎ দৌড়োলে হাড়ের সংযোগস্থলে চাপ পড়তে পারে। কিন্তু হাঁটা সবচেয়ে ভাল ব্যায়াম। ধীরে হলেও হাঁটুন। তার পর অভ্যাস হয়ে গেলে হাঁটার গতি বাড়াবেন। প্রত্যেক দিন আধ ঘণ্টা হাঁটলেই অনেক শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। অবশ্য যদি আর্থ্রাইটিস থাকে, তা হলে বেশি হাঁটলে আবার উল্টো ফল হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন ১৫-২০ মিনিট করে হাঁটতে পারেন। চেষ্টা করুন ২ মিনিট জোরে এবং ১ মিনিট আস্তে হাঁটতে। পঞ্চাশের পর থেকেই হাঁটুর সমস্যা ভোগায় অনেককে। সে ক্ষেত্রে স্কোয়াট, ক্রাঞ্চ জাতীয় ব্যায়াম করা সম্ভব হয় না। তাই পায়ের জোর বাড়াতে লেগ প্রেস করতে পারেন। পেটের মেদ কমাতে ও পেশি টানটান রাখতে কিছু যোগব্যায়ামের অভ্যাস করুন। প্রশিক্ষকের থেকে শিখে নিয়ে করতে পারেন ভুজঙ্গাসন, মৎস্যাসন, উষ্ট্রাসন। এই ব্যায়ামগুলিতে পেশির নমনীয়তা বাড়বে, গাঁটে গাঁটে ব্যথা দূর হবে। হার্ট ও লিভারের অসুখ যদি না থাকে এবং শরীর সুস্থ থাকে, তা হলে ময়ূরাসন অভ্যাস করতে পারেন। এতে শরীরের ভারসাম্য বজায় থাকবে, বয়সকালে হরমোনজনিত সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন।
ফুসফুসের জোর বাড়াতে শ্বাসের ব্যায়াম করা খুব জরুরি। সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দু’হাত দেহের দু’পাশে রাখুন। চোখ বন্ধ করে দু’হাত ধীরে ধীরে মাথার উপরে তুলুন। হাত তোলার সঙ্গে সঙ্গে খুব ধীরে ধীরে শ্বাস নিন। আবার ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে দু’হাত নামিয়ে আনুন। এ ভাবে অভ্যাস করুন। নিয়মিত যোগাভ্যাস কোষের আয়ু বৃদ্ধি করে, শরীরের প্রতিটি অঙ্গের কার্যকারিতা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy