Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Pregnancy Care

সময়ের আগেই সন্তান প্রসবের নেপথ্যে মানসিক উদ্বেগ বড় কারণ, দাবি গবেষণায়

বিভিন্ন কারণে সময়ের আগেই সন্তান প্রসব করেন অনেকে। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় যাঁরা বেশি উদ্বেগে ভোগেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটার প্রবণতা ততটাই বেশি।

অন্তঃসত্ত্বাদের অন্যান্য স্বাস্থ্য পরীক্ষার ম‌তোই নির্দিষ্ট সময় অন্তর তাঁদের মানসিক অবস্থা কেমন, তা যাচাই করা ভীষণ জরুরি।

অন্তঃসত্ত্বাদের অন্যান্য স্বাস্থ্য পরীক্ষার ম‌তোই নির্দিষ্ট সময় অন্তর তাঁদের মানসিক অবস্থা কেমন, তা যাচাই করা ভীষণ জরুরি। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২২ ১৮:০৪
Share: Save:

অনেক ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের ঢের আগেই শিশুর জন্ম হয়। ভারতে এখন প্রায় ২১ শতাংশ শিশু অপরিণত অবস্থায় জন্ম নেয়। দু’-এক সপ্তাহ এ দিক-ও দিকে বিশেষ ক্ষতি হয় না। কিন্তু ৩৭ সপ্তাহের আগেই যে শিশু জন্ম নেয়, তাকে চিকিৎসার পরিভাষায় বলে ‘প্রি-ম্যাচিয়োর বেবি’।

প্রি-ম্যাচিয়োর শিশুর ক্ষেত্রে অনেক সময়ে কিছু জটিলতা দেখা যায়, কারণ তাদের সিস্টেম ঠিক ভাবে কাজ করার মতো পরিণত হয় না। অনেক সময়ে হাইপোথার্মিয়া, জন্ডিস, গ্লুকোজ় কমে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয় এই শিশুদের ক্ষেত্রে। আবার অনেক সময়ে ফুসফুস ঠিকমতো তৈরি হতে পারে না বলে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। লিভার ঠিকমতো কাজ না করায় জন্ডিস দেখা যায়। খাদ্যনালী অপরিণত অবস্থায় থাকায় সে সব রকমের খাবার সহ্য করতে পারে না। এবং শরীরে ইমিউন সিস্টেমও ঠিকমতো তৈরি না হওয়ায় সংক্রমণের আশঙ্কা অনেক গুণ বেড়ে যায়।

বিভিন্ন কারণে মহিলারা প্রি-ম্যাচিয়োর শিশুর জন্ম দিতে পারে। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় যাঁরা বেশি উদ্বেগে ভোগেন, তাঁদের প্রি-ম্যাচিয়োর শিশুর জন্ম দেওয়ার প্রবণতা ততটাই বেশি।

হেলথ্ সাইকোলজি জার্নালে সম্প্রতি প্রকাশিত এই গবেষণাটি অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কখন মহিলাদের মানসিক পরীক্ষা করানোর কতটা প্রয়োজন, সেই পথ দেখায়। এই গবেষণাটি প্রি-ম্যাচিয়োর শিশুর জন্ম আটকানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া লস অ্যাঞ্জেলেসের বিজ্ঞানীরা এই গবেষণাটি করেছেন। প্রধান গবেষক ক্রিস্টিন ডানকেল শেটার বলেছেন, ‘‘অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় উদ্বেগ মোটেও ভাল নয়। এই উদ্বেগের কারণেই অধিকাংশ মহিলা সময়ের আগেই সন্তানের জন্ম দিয়ে বসেন। ফলে শিশুদের প্রাণনাশের আশঙ্কাও বাড়ে। অন্তঃসত্ত্বাদের অন্যান্য স্বাস্থ্য পরীক্ষার ম‌তোই নির্দিষ্ট সময় অন্তর তাঁদের মানসিক অবস্থা কেমন, তা যাচাই করা ভীষণ জরুরি। ’’

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় যাঁরা বেশি উদ্বেগে ভোগেন, তাঁদের প্রি-ম্যাচিয়োর শিশুর জন্ম দেওয়ার প্রবণতা ততটাই বেশি।

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় যাঁরা বেশি উদ্বেগে ভোগেন, তাঁদের প্রি-ম্যাচিয়োর শিশুর জন্ম দেওয়ার প্রবণতা ততটাই বেশি। ছবি: সংগৃহীত

মোট ১৯৬ জন মহিলা এই গবেষণাটির জন্য প্রয়োজনীয় সমীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এই সমীক্ষায় তাঁদের উদ্বেগ সম্পর্কিত নানা প্রশ্ন করা হয়। তাঁদের উদ্বেগের আসল কারণ কি গর্ভাবস্থা, না কি অন্য কোনও কারণে তাঁরা চিন্তায় পড়েছেন, নানা প্রশ্নের অছিলায় তা-ও জানতে চাওয়া হয়।

অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, প্রথম দিকে উদ্বেগ না থাকলেও অন্তঃসত্ত্বা অবস্থার শেষ পর্যায় এসে অনেক মহিলা উদ্বেগ করতে শুরু করেন, যার প্রভাব পড়ে গর্ভস্থ শিশুর উপর। তাই গবেষকরা অন্তঃসত্ত্বা অবস্থার প্রাথমিক পর্যায় থেকেই মহিলাদের মেন্টাল স্ক্রিনিং করানোর পরামর্শ দিচ্ছেন, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের সম্মতি নিয়ে।

অন্য বিষয়গুলি:

Pregnancy Care Mental Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE