Bengali movies that potrayed independence day as a theme dgtl
Indepence Day
Independence Day Movie: স্বাধীনতা প্রাপ্তির বিভিন্ন গল্প বার বার ফুটে উঠেছে বাংলা সিনেমায়
সংগৃহীত প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২২ ০৭:২৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১১
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে বাংলার অবদান যে কতটা তা কম বেশি সকলেরই জানা। যদিও দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও নানা ধরনের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশবাসীকে এগোতে হয়েছে। দেশের প্রতি সেই ভালবাসা থেকে দেশের জন্য আত্মবলিদান, ভারতের স্বাধীনতা প্রাপ্তির বিভিন্ন গল্প বার বার ফুটে উঠেছে বাংলা সিনেমায়। আট থেকে আশি, এই সিনেমাগুলি সহজেই সকলের মন জয় করেছে।
০২১১
‘চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠন’: ‘চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠন’ ছিল ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল সংঘটিত সূর্য সেনের নেতৃত্বে কয়েক জন স্বাধীনতাকামী বিপ্লবীর ব্রিটিশ পুলিশ ও সহায়ক বাহিনীর চট্টগ্রামে অবস্থিত অস্ত্রাগার লুন্ঠনের প্রয়াস। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই তৈরি হয়েছিল চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠন সিনেমাটি। বিপ্লবী সূর্য সেন, যিনি জনপ্রিয় ছিলেন ‘মাস্টারদা’ নামে। তিনি ঢাকার চট্টগ্রামের অস্ত্রাগার লুঠ করার পরিকল্পনা করেন তাঁর ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে। তাঁদেরকে নিজে হাতে প্রশিক্ষণও দিয়েছিলেন তিনি। সেই অভিযান শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হলেও ভারতবাসীর মনে দাগ কেটে গিয়েছিল। এই ঘটনাটি স্বাধীনতার ইতিহাসে গায়ে কাঁটা দেওয়া এক অধ্যায়। দেশাত্ববোধক বাংলা সিনেমা হিসেবে এই সিনেমাটির গুরুত্ব অন্যতম।
০৩১১
‘সব্যসাচী’: ‘সব্যসাচী’ সিনেমাটি ১৯৭৭ সালে মুক্তি পায়। শরৎচন্দ্রের রাজনৈতিক উপন্যাস ‘পথের দাবী’ থেকেই অনুপ্রেরণা নিয়ে তৈরি হয়েছিল এই সিনেমাটি। সিনেমাটির পরিচালক ছিলেন পীযূষ বসু। এই সিনেমায় অভিনয় করেন মহানায়ক উত্তমকুমার। বরাবরের মতই এই ছবিতেও তার অভিনয় ছিল দেখার মতন। জাতীয়তাবাদী নেতার সঙ্গে দেশের ভালোবাসা নিয়েই এই গল্পের প্রেক্ষাপট।
০৪১১
‘আনন্দমঠ’: ঊনবিংশ শতাব্দীতে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত কালজয়ী বাংলা উপন্যাস হল ‘আনন্দমঠ’। উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় ১৮৮২ সালে। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে এই উপন্যাসের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। এই উপন্যাসটি ছাপার বিরূদ্ধে ব্রিটিশ সরকার আইন পাশ করে, তবে এর হস্তলিখিত গুপ্ত সংস্করণ জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। আর এই বিতর্কিত উপন্যাসকেই তুলে ধরা হয়েছিল রূপোলি পর্দায়। এখানেই ছিল সেই বিখ্যাত ‘বন্দেমাতরম’ গানটি।
০৫১১
‘দেবী চৌধুরানী’: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা আরও একটি কালজয়ী উপন্যাস ‘দেবী চৌধুরানী’। ১৮৮৪ সালে প্রকাশিত হয় এই উপন্যাসটি। ‘আনন্দমঠ’-এর পর বঙ্কিমচন্দ্র পুনরুজ্জীবিত ভারতের আহ্বান করে এটি রচনা করেন। এতে প্রধান চরিত্র ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের নিপীড়নের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের ভিতর থেকে শক্তির সঙ্গে লড়াই করে। এই রচনা ভারতীয় সাধুতা, নিষ্ঠা এবং নিঃস্বার্থতার ঐতিহ্যবাহী মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে লেখা। এটি বাংলা ও ভারতীয় সাহিত্যের ইতিহাসে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাস। স্বাধীনতার পর ভারত সরকার পরবর্তীতে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। আর তীব্র লড়াইয়ের সেই গল্পই তুলে ধরা হয় রূপোলি পর্দায়। ১৯৭৪-এ মুক্তি পায় এই ছবিটি। এই গল্প তৈরি হয়েছে নারী কীভাবে ব্রিটিশদের শাসনকে ভয় পেয়েছিলেন তার উপরে ভিত্তি করে। সাধারণ গৃহবধূ প্রফুল্ল থেকে দেবী চৌধুরানীতে কী ভাবে রূপান্তরিত হয়েছিলেন তাই নিয়ে এই গল্প। এই সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সুচিত্রা সেন।
০৬১১
‘বিয়াল্লিশ’: দেশাত্ববোধক সম্পর্কিত বাংলা ছবির মধ্যে ‘বিয়াল্লিশ’র জনপ্রিয়তা কিন্তু একেবারে অন্যরকম। ছবির নাম থেকেই স্পষ্ট যে, ১৯৪২ সালে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের দৃশ্যকেই তুলে ধরা হয়েছে এই সিনেমায়। এই ছবির গুরুত্ব কিন্তু অনেকখানি। কারণ ১৯৪২-এর কিছু বছর পরেই আমাদের দেশ স্বাধীনতা লাভ করে। এই ছবিতে দুর্দান্ত অভিনয় করেছিলেন বিকাশ রায়। এই ছবি স্বাধীনতার ইতিহাসে দাগ কাটার মতো একটি ছবি যা সকলেরই দেখা উচিত।
০৭১১
‘সুভাষচন্দ্র’: সুভাষচন্দ্র বসু-র জীবনের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল এই বাংলা ক্লাসিক সিনেমাটি। সিনেমা বিশেষজ্ঞরা বলেন আজ পর্যন্ত যে যে ভাষায় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসকে নিয়ে যেক’টি ছবি তৈরি হয়েছে তার মধ্যে এটি সব থেকে নিখুঁত ভাবে নির্মিত। যেখানে তরুণ নেতাজির জীবন, শৈশবকাল কলেজের দিন, আইসিএস পাস করা, রাজনৈতিক চর্চা, এবং পরবর্তীতে তাঁকে পুলিশ কী ভাবে গ্রেফতার করে সেটি দেখানো হয়েছে।
০৮১১
‘রাজকাহিনী’: সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের পরিচালিত অন্যতম জনপ্রিয় হল ‘রাজকাহিনী’। ১৯৪৭ এ দেশভাগের প্রেক্ষাপটে নির্মিত এই চলচ্চিত্রে এক ঝাঁক অভিনেতা-অভিনেত্রী অভিনয় করেছেন। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, জয়া আহসান, পার্নো মিত্র, প্রিয়াঙ্কা সরকার, সোহিনী সরকার, সায়নী ঘোষ, ঋধিমা ঘোষ, দিতিপ্রিয়া রায়, এনা সাহা, কৌশিক সেন, আবীর চট্টোপাধ্যায়, যীশু সেনগুপ্ত, নাইজেল আকারা, কাঞ্চন মল্লিক, রুদ্রনীল ঘোষ, রজতাভ দত্ত, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী সহ আরও অনেকে অভিনয় করেছেন এই চলচ্চিত্রে। ২০১৫-র ১৬ই অক্টোবর এই চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়। র্যাডক্লিফ রেখার দেশ বিভাজনের নিরীখে অদম্য লড়াই এই সিনেমার মূল আকর্ষণীয় বিষয়। এই ছবিতে বেগম জানের নেতৃত্বে অভিনয়করে আরও একবার নিজের জাত চিনিয়ে ছিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
০৯১১
‘ফেরারি ফৌজ’ উৎপল দত্তের বিখ্যাত নাটক অবলম্বনে তৈরি হয় ‘ফেরারি ফৌজ’। পরিচালনায় প্রশান্ত বল। এই ছবিতে মূল চরিত্রে অভিনয় করেন মিঠুন চক্রবর্তী, দেবশ্রী রায়, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। একঝাঁক বিপ্লবীদের দেশের প্রতি, দেশের ভালবাসার প্রতি আত্মত্যাগ এবং দেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ বিসর্জনের কাহিনীকেই এই গল্পে তুলে ধরা হয়েছে।
১০১১
‘মহাবিপ্লবী অরবিন্দ’ বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষ পরবর্তীকালে পরিচিত হন ঋষি অরবিন্দ নামে। আর তাঁকে নিয়েই এই ছবির নির্মাণ। বিদেশে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন ঋষি অরবিন্দ। কিন্তু পরবর্তীকালে উচ্চশিক্ষিত অরবিন্দ ঘোষ জড়িয়ে পড়েন বিখ্যাত আলিপুর বোমার মামলায়। তার ট্রায়াল চলে দীর্ঘদিন। এই মামলা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর সশস্ত্র আন্দোলন থেকে সরে যান তিনি এবং পরবর্তীতে সন্ন্যাস নিয়ে পণ্ডিচেরী চলে যান। দেশাত্মবোধক চলচ্চিত্রে এটিও একটি সাড়া ফেলে দেওয়া অধ্যায়।
১১১১
‘আবার আসব ফিরে’ ছবির পরিচালক রবি ওঝা। একটি রোম্যান্টিক গল্পের মোড়কে তিনি সেই যুগের ইতিহাস তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন। এই গল্পে পুনর্জন্মেরও একটি দিক উনি রেখেছেন যা সত্যিই ছবিটিকে এক নতুন রাংতায় মুড়েছে। দেশাত্মবোধক সিনেমা হিসেবে এটিও অত্যন্ত জনপ্রিয়।