খাস কলকাতায় বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ গিয়েছে এক বৃদ্ধের। সে গাড়ির চালকের আসনে ছিলেন এক মদ্যপ। ঠাকুরপুকুর-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত টেলি-পরিচালক সিদ্ধান্ত দাস ওরফে ভিক্টো আপাতত পুলিশি হেফাজতে। যদিও স্থানীয় বাসিন্দারা সে দিন তাঁর গাড়ি থেকে নামিয়ে এনেছিলেন শ্রিয়া বসু নামে এক মহিলাকেও। জানা যায়, তিনি এক বেসরকারি চ্যানেলের কার্যকরী প্রযোজক। প্রথম থেকেই প্রশ্ন উঠেছে, শুধু চালক নয়, গাড়িতে মত্ত অবস্থায় যাঁরা ছিলেন সকলকে কেন শাস্তি দেওয়া হবে না?
গত রবিবার সকাল ৯টা নাগাদ ঠাকুরপুকুর বাজারে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে ছ’জনকে পিষে দেন ভিক্টো। ১০ এপ্রিল পর্যন্ত তাঁকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে আদালতের নির্দেশে। কিন্তু আপাতত মুক্ত শ্রিয়া বসু। উল্লেখ্য, একটি বেসরকারি চ্যানেলের নতুন ধারাবাহিক ‘ভিডিয়ো বৌমা’-র পরিচালক ভিক্টো এবং সেখানেই কর্মরত শ্রিয়া। ওই ধারাবাহিকের সাফল্য উদ্যাপন করতেই নৈশ জমায়েতে শামিল হয়েছিলেন ভিক্টো, শ্রিয়া-সহ ধারাবাহিকের নায়ক আরিয়ান ভৌমিক, অভিনেতা ঋ সেনগুপ্ত এবং স্যান্ডি সাহা।
দুর্ঘটনার পর ভিক্টো এবং শ্রিয়াকে যখন পুলিশ ভ্যানে তোলা হচ্ছিল তখনও মত্ত অবস্থায় ছিলেন কার্যনির্বাহী প্রযোজক। হাঁটা দূরের কথা, সোজা হয়ে দাঁড়াতেও পারছিলেন না! পুলিশের গাড়িতে উঠতে গিয়ে একাধিক বার পড়ে যান তিনি। সেই বেসামাল মুহূর্তের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে যায় সমাজমাধ্যমে! জানা গিয়েছে, ভিক্টো পুলিশি হেফাজতে থাকলেও মুক্তি পেয়েছেন শ্রিয়া।
আরও পড়ুন:
কিন্তু তাঁর কি কোনও শাস্তিই হবে না? সমাজমাধ্যমে বা সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলেছেন টলিপাড়ার অনেক অভিনেতাই। তাঁদের প্রশ্ন, ভিক্টোর সঙ্গে যাঁরা গাড়িতে ছিলেন তাঁরা কেন পরিচালককে মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোয় বাধা দিলেন না? পরিচালক কথা না শুনলে তাঁরাই বা কেন গাড়ি থেকে নেমে গেলেন না? অভিনেতা রাহুল সরাসরি সমাজমাধ্যমে দাবি করেছিলেন, অভিযুক্ত এবং তাঁর সঙ্গীদের যেন আর কাজ না দেওয়া হয়।
সত্যিই কি শ্রিয়ার কাজ চলে যাবে? না কি চ্যানেল কর্তৃপক্ষ তাঁকে পুনর্বহাল করবেন?
এ বিষয়ে জানতে আনন্দবাজার ডট কম যোগাযোগ করেছিল চ্যানেল কর্তৃপক্ষের (এইচআর আধিকারিক) সঙ্গে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি বলেন, “শ্রিয়া এখনও কাজে যোগ দেননি। ওঁকে পুনর্বহাল করা হবে কি না, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। আমি কলকাতার বাইরে। ফিরে এসে জানাতে পারব কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।”
রবিবার দুর্ঘটনার পর থেকে আনন্দবাজার ডট কম যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল শ্রিয়ার সঙ্গেও। তিনি ফোন ধরেননি। শোনা গিয়েছে, দুর্ঘটনার দিন ভিক্টোর পাশাপাশি তাঁকেও মারধর করা হয়েছিল।