জ্যাকি শ্রফ। ছবি: সংগৃহীত।
নম্বইয়ের দশকে মহিলা অনুরাগীদের হৃদয়ে ঝ়়ড় তুলতে পেরেছিলেন যাঁরা, সে তালিকায় প্রথম দিকেই আসে জ্যাকি শ্রফের নাম। ‘দুশমনি’, ‘আল্লা রাখা’, ‘পরিন্দা’ ‘শপথ’, ‘কুদরত কা কানুন’— একের পর এক ছবিতে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন বলিউডের বর্ষীয়ান এই অভিনেতা। ইদানীং অবশ্য কাজ কমিয়ে দিয়েছেন বলিপাড়ার ‘জগ্গু দাদা’। এই নামেই বেশি পরিচিত জ্যাকি। বলিপাড়ার অনেকেরই এমন আদুরে নাম আছে। শাহরুখ খানকে যেমন ‘বাদশা’ কিংবা ‘কিং খান’ নামে ডাকা হয়। আবার সলমন খানকে অনেকেই ‘সল্লু ভাই’ বলে। তবে জ্যাকির ‘জগ্গু দাদা’ হয়ে ওঠার নেপথ্যে অবশ্য অন্য এক কাহিনি রয়েছে। অনেকেরই তা অজানা।
জ্যাকির জীবনের অনেকটা সময় কেটেছে মুম্বইয়ের একটি বস্তিতে। বড় দাদা এবং বাবা-মায়ের সঙ্গে ছোট থেকে সেখানেই থাকতেন তিনি। জ্যাকির দাদা ছিলেন অত্যন্ত পরোপকারী। বস্তির দরিদ্র মানুষগুলির পাশে থাকতেন তিনি। যে কোনও সমস্যায় ঝাঁপিয়ে পড়তেন তিনি। নিজের সাধ্যের বাইরে গিয়ে অন্যকে সাহায্য করার চেষ্টা করতেন। সাক্ষাৎকারে ছোটবেলার কথা কথা উঠলেই জ্যাকি স্মৃতি হাঁতড়ে জানাতেন, দাদাই ছিল জীবনের হিরো। তিনি দাদার মতো হতে চাইতেন। মানুষের জন্য কাজ করতে চাইতেন। বস্তিতে জ্যাকির দাদাই আসলে ‘জগ্গু দাদা’ বলে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু হঠাৎই এক দিন দুর্যোগ নেমে আসে তাঁদের পরিবারে। একটি দুর্ঘটনায় দাদাকে চিরকালের মতো হারিয়ে ফেলেন জ্যাকি।
নিজে সাঁতার জানতেন না, কিন্তু বন্ধুকে ডুবে যেতে দেখে সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়েছিলেন অভিনেতার দাদা। বন্ধুকে পাড়ে পৌঁছে দিলেও, নিজে তলিয়ে যান অতলে। জ্যাকি তখন বছর বারোর কিশোর। চোখের সামনে দাদাকে জলে ডুবে যেতে দেখেছেন তিনি। বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পারেননি। দাদাকে নিজের চোখে মরতে দেখেছিলেন। সেখানে দাঁড়িয়েই জ্যাকি মনে মনে শপথ করেছিলেন, দাদার অবর্তমানে তিনিই বস্তির মানুষগুলির পাশে দাঁড়াবেন। সেই মতোই দাদার পথ অনুসরণ করেন। তখন থেকেই তাঁর নাম হয়ে যায় ‘জগ্গু দাদা’।
এক সাক্ষাৎকারে জ্যাকি বলেছিলেন, ‘‘দাদার মারা যাওয়াটা আমার কাছে একটা বিরাট বড় ধাক্কা। আমি এক ধাক্কায় অনেকটা বড় হয়ে গিয়েছিলাম। আমি মনে করতাম শুধু বাবা-মা নয়, বস্তির মানুষগুলির দায়িত্বও আমার। দাদার পর ওই নামে আমাকে সকলে ডাকে ঠিকই, কিন্তু আসল ‘জগ্গু দাদা’ আসলে আমার দাদা। যাঁর সঙ্গে আমার আর কখনও দেখা হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy