প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে সমস্ত অলঙ্কার রেখে বিদায় নিয়েছেন বাপ্পিদা।
সোনার গয়না ছাড়া বাপ্পি লাহিড়ি? এমন দিনও যে আসতে পারে, বোধহয় দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেননি সুরকার-শিল্পী স্বয়ং। তাই তাঁর অঙ্গ জুড়ে সর্ব ক্ষণ শোভা পেত নানা ধরনের অলঙ্কার। গলায় রত্ন খচিত নানা ধরনের পেনডেন্ট, হার। ১০ আঙুলে ১০ রকমের আংটি। কব্জি জুড়ে চওড়া মণিবন্ধ। শেষ জন্মদিনে নিজেই নিজেকে উপহার দিয়েছিলেন সোনার পেয়ালা!
নিজেকে সোনায় মুড়ে রাখা অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলে বাপ্পিদার। সোনা তাঁর কাছে ছিল সৌভাগ্যের প্রতীক। সংস্কার আর স্বর্ণপ্রেম তাই মিলেমিশে একাকার। প্রতিটি অলঙ্কার যাতে যত্নে থাকে, তার জন্য আলাদা করে দেখভালের লোকও নিযুক্ত করেছিলেন। বাপ্পিদার সেই সহকারী নিয়মিত গয়নাগুলোর রক্ষণাবেক্ষণও করতেন। শোনা যায়, একটি করে অ্যালবাম মুক্তি পেলেই একটি করে সোনা বা হিরের গয়না কিনতেন বাপ্পি। সংস্কার ছিল, তা হলেই তাঁর গান সোনার মতোই চমকাবে সবার হৃদয়ে। প্রতিটি গয়নার জন্য আলাদা করে বাক্সও ছিল। যেখানে দিনের শেষে পরিচ্ছন্ন করে রেখে দেওয়া হত যাবতীয় গয়না।
বাপ্পিদা যেমন গয়না ছাড়া থাকতে পারতেন না, তেমনই তাঁর অলঙ্কার অন্য কেউ স্পর্শ করবে, সেটাও সহ্য করতে পারতেন না। এক বার তাঁর এক সহকারী তাঁর গয়নার সঙ্গে ছবি তুলতে চেয়েছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বিনয়ের সঙ্গে তাঁকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন সুরকার। অনেকেই নতুন গয়না ছুঁয়ে দেখতে পছন্দ করেন। বাপ্পিদার তাতেও আপত্তি ছিল। কেউ যাতে তাঁর শরীর এবং গয়না স্পর্শ করতে না পারে, তার জন্য সবার থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলতেন।
প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে সমস্ত অলঙ্কার রেখে বিদায় নিয়েছেন বাপ্পিদা। অনুরাগীদের মনে কোটি টাকার প্রশ্ন, এ বার তাঁর সেই সাধের গয়নাগুলোর কী হবে? কে পাবেন প্রয়াত শিল্পীর এত অলঙ্কার?
বাপ্পিদার এক পারিবারিক বন্ধু জানিয়েছেন, শিল্পীর দুই সন্তান বাপ্পা আর রেমা ঠিক করেছেন বাবার বাকি জিনিসের মতোই গয়নাগুলোও তাঁরা সংরক্ষণ করবেন। দু’টি ভাগে রাখা হবে সমস্ত কিছু। একটি ভাগে থাকবে তাঁর রোজের পরার গয়না। যত্ন করে সাজানো থাকবে বাক্সে। অন্য ভাগে থাকবে তুলে রাখা গয়না। সেগুলোর বাক্স আলাদা। এ ছাড়াও, এই সোনাপ্রীতির জন্যই বাপ্পিদা নানা জনের থেকে সোনার গয়না, মূর্তি বা টোকেন উপহার পেতেন। সেগুলোও সংরক্ষিত থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy