খুশির হাওয়া শিল্পী মহলে।
খুশির হাওয়া শিল্পী মহলে। অবশেষে খোলা মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অনুমতি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার রাজ্য সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়, সামাজিক দূরত্ব মেনে উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান করতে পারবেন সাংস্কৃতিক এবং যাত্রা-শিল্পীরা। সিনেমা হলের মতোই খোলা মঞ্চের পাশাপাশি সভাগৃহ বা অডিটোরিয়ামেও ৫০ শতাংশ দর্শক নিয়ে অনুষ্ঠান করতে পারবেন তাঁরা।
প্রেক্ষাগৃহ খোলার পরেই সঙ্গীত, নাটক-সহ শিল্পকলার সঙ্গে যুক্ত বাকি শিল্পীদের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ ছিল, এ বার তাঁদেরও অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেওয়া হোক। অতিমারির কারণে, লকডাউনে দীর্ঘ দিন সমস্ত আয়োজন বন্ধ থাকায় উপার্জনে ভাটার টান শিল্পী এবং অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষের। এ দিন রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সবুজ সঙ্কেত মিলতেই খুশি সবাই। মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে এ রকম ইতিবাচক পদক্ষেপই আশা করেছিলেন তাঁরা, এমনটাই শিল্পীদের বক্তব্য।
এ দিন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উৎসব মরসুম এ বছরের মতো শেষ। চালু হয়েছে লোকাল ট্রেনও। পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেকটাই স্বাভাবিক। রাজ্য সরকার এ বার তাই নজর দিচ্ছে গান, বাজনা, আবৃত্তি, লোকশিল্পীদের রুজি-রোজগারের দিকে।’’ তাঁর বক্তব্য, এই পরিপ্রেক্ষিতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা, অতিমারিতে সাময়িক স্তব্ধ আবৃত্তি, গান, বাজনা, নাচ, যাত্রা, মেলার মতো বহু সংস্কৃতি, যা থেকে সংসার চলে বহু মানুষের। আলাপনের কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী সভাগৃহ বা অডিটোরিয়ামে ৫০ শতাংশ থেকে বড় জোর ২০০ জন পর্যন্ত দর্শক নিয়ে এবং উন্মুক্ত স্থানে সামাজিক দূরত্ব মেনে, স্যানিটাইজেশন ও মাস্ক ব্যবহার করে জায়গার আয়তন অনুযায়ী অনু্ষ্ঠান করতে পারবেন পারফর্মিং আর্টের শিল্পীরা।’’
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সবুজ সঙ্কেত মিলতেই খুশি সবাই। ছবি ওজাস রাওয়ালের টুইটার থেকে।
ঘটনাচক্রে শনিবারই শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী কৌশিকী চক্রবর্তী আনন্দবাজার ডিজিটালকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, উন্মুক্তস্থানে অনুষ্ঠান এবং লাইভ স্ট্রিমিংয়ের মধ্যে দিয়েই ঘুরে দাঁড়াতে পারে ইন্ডাস্ট্রি। শনিবার বিকেলে মুখ্যসচিবের ওই ঘোষণার পর কৌশিকীর বক্তব্য, ‘‘আমি খুব খুশি। আমি আমাদের শিল্পী সমাজের সবার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি যা বলেছিলাম, তার পর এত দ্রুত ফল মিলবে আশা করিনি। নিশ্চয়ই আমাদের সবার পক্ষ থেকে যে কথা বলেছিলাম, তা কোথাও একটা পৌঁছেছে। তাই এই সিদ্ধান্ত।’’ সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘গান-বাজনা যাঁরা করেন, তাঁদের সঙ্গে অসংখ্য মানুষ যুক্ত। যাঁরা স্টেজ সাজান, সাউন্ড করেন, আলোর কাজ করেন এমন অসংখ্য মানুষের কথা অবিলম্বে ভাবা প্রয়োজন। সেটাই হয়েছে বলে সত্যি ভাল লাগছে।’’
জাতীয় পুরস্কারজয়ী শিল্পী রূপঙ্কর বাগচী বলেন, ‘‘এই শীতের সময়েই আমাদের অনুষ্ঠান বেশি হয়। সে ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশে সারা শিল্প জগৎ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। ওঁকে ধন্যবাদ।’’
সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ইতিমধ্যেই মুক্ত মঞ্চে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান করেছেন লোপামুদ্রা মিত্র। তিনি অনেক দিন থেকেই খোলা মঞ্চে, হলে করোনার যাবতীয় নিয়ম মেনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছিলেন। সেই আশা পূর্ণ হওয়ায় খুশি তিনি। মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বললেন, ‘‘জয় হোক গান, বাজনা, নাটক, যাত্রার সব শিল্পীর। মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। তবে শুধু মুখ্যমন্ত্রী নয়, হল খুললে উদ্যোক্তা আর শ্রোতাদের এগিয়ে আসতে হবে।’’
আরও পড়ুন: মাদকযোগে কমেডিয়ান ভারতী সিংহকে গ্রেফতার এনসিবির
জাতীয় পুরস্কারজয়ী গীতিকার-সুরকার-গায়ক অনুপম রায়ের গলাতেও উচ্ছ্বাস। তিনি বললেন, ‘‘আমরা মঞ্চে যাওয়ার জন্য তৈরি। শুধু ডাকের অপেক্ষায়।’’
খুশি আর এক জাতীয় পুরস্কারজয়ী শিল্পী ইমন চক্রবর্তীও। তিনি বললেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানাই শিল্পীদের জীবিকার ক্ষেত্র খুলে দেওয়ার জন্য। তবে অনেক সময় অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পেলেও পুলিশ অনুমতি দেয় না। আশা করি এই সমস্যা আর হবে না।’’
প্রশাসন যাতে শিল্পীদের অনুষ্ঠানের পথে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, তার জন্য ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী ভিডিয়ো কনফারেন্সে কথা বলেছেন নগরপাল, রাজ্যের ডিজি-সহ সমস্ত পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে। রাজ্য সরকার-নির্দিষ্ট নিয়মাবলী মেনে শিল্পীরা অনুষ্ঠান করতে চাইলে যেন তাঁরা পাশে পান প্রশাসনকে।
আরও পড়ুন: নতুন হেয়ার স্টাইলে মুগ্ধ শুভশ্রী রাজকে আদরে ভরিয়ে দিলেন
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy