শ্রীময়ী চট্টরাজ।
তারকার জনপ্রিয়তা জনতার আশীর্বাদে। জনতার আশীর্বাদে প্রার্থীরা ভোটে জেতেন। এঁদের কাছেই নেতা এবং অভিনেতাকে দাঁড়াতে হয়। তা হলে ভোটের আগে নেতা-অভিনেতা একজোট হলে সমস্যা কোথায়? শাসকদলের প্রচারে অংশ নেওয়া অভিনেত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজ প্রশ্ন রাখলেন আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে
প্রশ্ন: তৃণমূলের রাজনৈতিক প্রচারে দেখা যাচ্ছে আপনাকে...
শ্রীময়ী: আমি রাজনীতিতে নেই। প্রচারে আছি।
সেটা কেমন?
শ্রীময়ী: আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্ধ ভক্ত। মুখ্যমন্ত্রী শিল্পীদের জন্য অনেক কিছু করেছেন। ওঁকে সমর্থন করতেই প্রচারে অংশ নেওয়া। শুধু এ বছরে নয়, আগের বছরেও শাসকদলের প্রচারে আমায় দেখা গিয়েছিল।
আগেরবার প্রচার করেও এ বারে টিকিট পেলেন না...
শ্রীময়ী: আমি চাইনি ও ভাবে রাজনীতি করতে।
প্রশ্ন: আপনি মদন মিত্রেরও ঘনিষ্ঠ...
শ্রীময়ী: আমি মদন মিত্রকে চিনতামই না। অভিনেতা নীল ভট্টাচার্য, রাজীব বসু বরং প্রাক্তন মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ। এক বছর দুর্গাপুজোয় মেদিনীপুরে শো করতে গিয়েছিলাম। রাত করে ফেরার সময় প্রচণ্ড অরাজকতার মুখে পড়ি। সেই সময় দাদাকে ফোন করায় উনি সঙ্গে সঙ্গে তা মিটিয়ে দেন। আমি কৃতজ্ঞ দাদার কাছে। পরে মদনদা-ই আমায় কয়েকটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানান। কৃতজ্ঞতাবশত আমি গিয়েছি সেখানে।
প্রশ্ন: প্রচারে বেরিয়ে কী দেখছেন, বাংলার ছবি কী রকম?
শ্রীময়ী: যে ক’টা জনসভায় গিয়েছি সব ক’টায় মানুষের ঢল। সবাই দিদিকে ভালবেসেই এসেছেন। বাংলার মানুষ তাঁকেই সমর্থন করেন। তাঁকেই চান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হলে সুবিধে অনেক। উনি নারী, উনি সবার সমস্যা বোঝেন। দিদি মাটির কাছাকাছি থাকার রাজনীতিতে বিশ্বাসী। তাই দরকারে অ-দরকারে যখনই সরাসরি যোগাযোগ করেছি, দিদি ফোন ধরেছেন।
প্রশ্ন: মুখ্যমন্ত্রীর নামে তো বিরোধী শিবিরের অজস্র অভিযোগ...
শ্রীময়ী: বিরোধী শিবিরের কথা বলতে পারব না। ওদের সম্বন্ধে কিচ্ছু জানি না। যোগাযোগও নেই। তাই প্রচারে বিরোধীদের নিয়ে একটা কথাও বলি না।
প্রশ্ন: তাহলে কী বলেন?
শ্রীময়ী: মুখ্যমন্ত্রী যা যা করেছেন সেগুলো তুলে ধরি। যেমন, একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত দেখেছি বাচ্চা মেয়েদের পরিচারিকার কাজে বহাল করা হত। অর্থের অভাবে তাদের পড়াশোনা হত না। অনেকের অল্পবয়সে বিয়েও হয়ে যেত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, মিড ডে মিলের দৌলতে লেখাপড়া, খাওয়াদাওয়ায় আর কোনও অভাব নেই রাজ্যের মেয়েদের। শুধু মেয়ে নয় ছেলেদের জন্য যুবশ্রী, সবুজ সাথী প্রকল্প রয়েছে। দীর্ঘ দিন আমার গাড়ি ছিল না। অন্যদের মতো আমিও ট্যাক্সিতে যাতায়াত করতাম। আমাদের মতো মানুষদের কথা ভেবেই দিদি-র ‘গতিধারা’ ট্যাক্সির সূচনা। এই কথাগুলোই আমি প্রচার সভায় জানাই।
প্রশ্ন: অনেকেই বলেন, প্রচারে তারকার ভাষণ নাকি বাড়তি গ্ল্যামার?
শ্রীময়ী: আমার এই কথায় ভীষণ আপত্তি। আমাদের জনপ্রিয়তা জনতার আশীর্বাদে। জনতার আশীর্বাদে প্রার্থীরা ভোটে জেতেন। এঁদের কাছেই নেতা এবং অভিনেতাকে দাঁড়াতে হয়। তা হলে ভোটের আগে আমরা নিজেদের ইচ্ছেয় এক হয়ে কিছু বললে সমস্যা কোথায়? শাসকদল কিন্তু জোর করে আমাদের প্রচারে ডেকে নিয়ে যায় না। আমরা ভালবেসে দিদির পাশে আছি।
প্রশ্ন: আগামী নির্বাচনে বাংলায় পালাবদল ঘটবে?
শ্রীময়ী: বলতে পারব না। আমি অন্তত চাই না। বাংলার বাইরে থেকে আসা মানুষেরা বাংলার নাড়ির স্পন্দন বুঝবেন? জানি না। আমি চাইব, বাংলার মানুষই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হোন।
প্রশ্ন: আগামী দিনে রাজনীতিতে আসবেন?
শ্রীময়ী: শুরুতেই বলেছি, আমি রাজনীতি বুঝি না। রাজনীতি বুঝতে গেলে অনেক পড়াশোনা করতে হয়। আমার সেটা নেই। প্রচণ্ড পরিশ্রমী হতে হয়। আমি পারব না। মুখ্যমন্ত্রীর আমলে আমরা মেয়েরা ভীষণ নিরাপদ। তাই তাঁর সমর্থনে যা যা উন্নয়ন দেখেছি সে কথা জনসভায় তুলে ধরি। আমার জন্য এ টুকুই যথেষ্ট।
প্রশ্ন: বাংলায় বিজেপি এলে নারীর নিরাপত্তা থাকবে না বলছেন?
শ্রীময়ী: সম্প্রতি দিল্লি গিয়েছিলাম মাকে নিয়ে। রাত ৩টের সময় যখন গাড়ি বুক করছি ওখানকার বাসিন্দারাই বলছেন, এত রাতে রাস্তায় না বেরোনোই ভাল। বাকিটা আপনারাই বুঝে নিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy