তনুশ্রী চক্রবর্তী।
নারী দিবসে বিজেপি-তে যোগদান। তার পরেই আনন্দবাজার ডিজিটালের মুখোমুখি। কেন গেরুয়া শিবিরে? শক্তিশালী বিরোধীপক্ষ বলে? ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জন্য? নাকি, পদ্মবনে তারকাদের ঢল দেখে? অন্তরঙ্গ সাক্ষাৎকারে রাখঢাক রাখলেন না তনুশ্রী চক্রবর্তী।
প্রশ্ন: জীবনের আরও একটা নতুন অধ্যায়ের সূচনা.... তাই নারী দিবস বেছে নিলেন?
তনুশ্রী: অনেক কিছুর জন্য এই দিন বেছেছি। যদিও নির্দিষ্ট একটা দিন নারীদের জন্য নয়। আমার মতে, জীবনের বিশেষ মুহূর্ত উদযাপনের জন্য বিশেষ দিন দরকার। আমার জীবনের এই বিশেষ মুহূর্তকে স্মরণীয় করে রাখার দরকার ছিল। পাশাপাশি, এক জন নারী স্বাধীন চিন্তায় অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেকে মানুষের কাজে লাগাতে চাইছেন। সেটাও যাতে উদাহরণ হয়ে উঠতে পারে তার জন্যেও এই বিশেষ দিন বেছে নেওয়া।
প্রশ্ন: গুঞ্জন, যে সব তারকা তুলনায় কম ব্যস্ত, তাঁরা নাকি রাজনীতিতে? আপনার হাতে তো অনেক কাজ...
তনুশ্রী: (হেসে ফেলে) এ ক্ষেত্রে সচিন তেন্ডুলকরের একটা কথা ধার করব। কিংবদন্তি ক্রিকেটার বলেছিলেন, পেশার শীর্ষে থাকতে থাকতে সরে যাওয়া উচিত নয়। নিজের সেরা সময় পেশাকে দেওয়া উচিত। যদিও আমি সরছি না। পছন্দসই চিত্রনাট্য পেলে অবশ্যই অভিনয় করব। এটা আমার পালাবদল ঘটছে। মনে হয়েছে, রাজনীতিতে আসার এটাই উপযুক্ত সময়। আর মানুষের জন্য যখনতখন যে কোনও কাজে ঝাঁপিয়ে পড়া যায়।
প্রশ্ন: নিন্দুকেরা বলেন, গেরুয়া শিবির রক্ষণশীল। বিশেষত ধর্ম এবং লিঙ্গের ক্ষেত্রে। সেই দলে যোগ দিয়ে অভিনয়ে থাকা সম্ভব?
তনুশ্রী: কেন নয়? বাংলার একাধিক অভিনেত্রী বিজেপি-তে যোগ দিয়েও অভিনয় করছেন। আমিও সেটাই করব। তবে আপাতত আমি মানুষের পাশে দাঁড়াতেই বেশি আগ্রহী। এত দিন নীরবে দাঁড়িয়েছি। এ বার সবাই জানতে পারবেন, দেখতে পারবেন আমার কাজ।
প্রশ্ন: বিজেপি-ই কেন?
তনুশ্রী: বিজেপি প্রচণ্ড সুশৃঙ্খল। ওদের লক্ষ্যও পরিষ্কার। ‘সোনার বাংলা’ গড়ব। বাংলাকে বিশ্বের দরবারে নিয়ে যেতে চায় এই দল। এই দলের ভিতরে কোনও দুর্নীতি নেই। অন্তর্দ্বন্দ্ব নেই। এই পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি আমাকে খুব আকৃষ্ট করেছে। মনে হয়েছে, এই সময়ে দলের পাশে থাকলে আরও উন্নতি হবে বাংলার। দলেরও উপকার হবে।
প্রশ্ন: দলও কি তাই-ই ভাবছে?
তনুশ্রী: আমার ভাবনার কথা জানালাম। দলও নিশ্চয়ই আমাকে যোগ্য মনে করেছে। তাই দলীয় পতাকা হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তার জন্য আমি আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞ।
প্রশ্ন: যে দলের প্রতিনিধিরা গোমাংস খাওয়া, ধর্ম নিয়ে প্রতিক্রিয়াশীল, সেই দল বাংলা এবং বাংলার নারীর কতটা উন্নতির সহায়ক হতে পারবে?
তনুশ্রী: প্রতিক্রিয়াশীলদের দলে আমাকে ফেলবেন না। সকলেই জানেন, যাঁদের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছিল, আমি তাঁদের পাশে ছিলাম। এবং আমার দলের মাথায় যাঁরা বসেছেন, তাঁরা কিন্তু এই ধরনের মন্তব্য করেননি, করবেনও না। আমি তাঁদের দেখে দলে যোগ দিয়েছি। কাউকে গালাগালি দিতে নয়, ‘সোনার বাংলা’ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছি। বাকি, নারীদের অবস্থান। প্রধানমন্ত্রী অনেক যোজনা শুধু নারীর উন্নতির কথা ভেবে চালু করেছেন। আগামী দিনেও করবেন। বিজেপি নারীদের সম্মান দেয় বলেই দলে নারীর সংখ্যা বাড়ছে। আমার সঙ্গে ৫ বিধায়ক যোগ দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মহিলাও আছেন। তা ছাড়া, কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকা একটি দল যদি রাজ্যের শাসক হয়, আখেরে সেই রাজ্যের লাভ। কারণ, সেই দলকে দেখে সেই রাজ্যে বিনিয়োগ বাড়বে। শিল্প আসবে। কর্মসংস্থান বাড়বে। উপার্জন বৃদ্ধি পাবে। সাধারণের জীবনযাত্রার মান বাড়বে।
প্রশ্ন: দলে যোগ দেওয়া ৫ বিধায়ক কিন্তু ক্ষমতাচ্যুত। বহু তারকাও ’২১-এর নির্বাচনের আগে একই ভাবে দল বদলেছেন...
তনুশ্রী: (হাসি) আমি সেই দলেরও নই। আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। সাদামাঠা জীবন কাটাই। অভিনেত্রী হয়েছি বলে বাড়ি বদলাইনি। আমার কোনও লোভ নেই। তাই স্বার্থসিদ্ধি বা অন্য কারণে রাজনীতিতে এসেছি এটাও আমার সম্বন্ধে বলা যাবে না।
প্রশ্ন: দল প্রার্থী করছে?
তনুশ্রী: দলে সদ্য যোগ দিলাম। তবে এই ভাবনা আমার নয়। পুরোটাই দল ভাববে। আমাকে যা করতে বলা হবে, সেটাই করব।
প্রশ্ন: প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে জিতলে টলিউডের জন্য কী করবেন?
তনুশ্রী: টলিউডে এই মুহূর্তে লগ্নি দরকার। সবের আগে সে দিকে জোর দেব। পাশাপাশি, বিক্রির বিষয়টিও সমান গুরুত্ব পাবে। ছবি বিক্রির দায়িত্বে যে সমস্ত হল মালিক, তাঁরা সর্বভারতীয়। বিজেপি এলে তাঁদের আগ্রহ বাড়বে। এই দিকটাও খুলে যাবে। একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ সমস্যা মিটলে টলিউড ফের প্রাণ ফিরে পাবে। কাজের পরিমাণ, উপার্জনও বাড়বে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy