‘বাওয়াল’ ছবিতে জাহ্নবী কপূর ও বরুণ ধওয়ান। ছবি: সংগৃহীত।
প্রথম ঝলক প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই বিতর্কে জড়িয়েছিল নীতেশ তিওয়ারি পরিচালিত ছবি ‘বাওয়াল’। বরুণ ধওয়ান ও জাহ্নবী কপূর অভিনীত এই ছবিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ঘটে যাওয়া হলোকস্টের সঙ্গে এক যুগলের সম্পর্কের টানাপড়েনের তুলনা টেনেছেন পরিচালক। হলোকস্টের মতো নির্মম এক ঐতিহাসিক অধ্যায়কে বলিউডি রোম্যান্টিকতার ছাঁচে ফেলাটা কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে আগেই তৈরি হয়েছিল জল্পনা। ওটিটি প্ল্যাটফর্মের ছবি মুক্তি পাওয়ার পরে তা নিয়ে আলোচনা আরও বেড়েছে। এ বার ছবির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের আর্জি ইহুদি মানবাধিকার সংস্থা সাইমন ওয়াইসেনথল সেন্টারের।
নীতেশ তিওয়ারি পরিচালিত এই ছবিতে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের গ্যাস চেম্বারের ভিতরে শুট করা একটি দৃশ্যে জাহ্নবীর মুখে যে সংলাপ শোনা যায় তার তর্জমা করলে দাঁড়ায়, ‘সব সম্পর্কই এক সময় আউশভিৎজ়ের মতো পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যায়’। এই সংলাপ শুনে হতভম্ব দর্শকের একটা বড় অংশ। ছবির এই আদ্যোপান্ত অসংবেদী সংলাপে ক্ষুব্ধ ইহুদি মানবাধিকার সংস্থাও। ওই সংস্থার তরফে ছবির সমালোচনা করে প্রকাশিত হয়েছে একটি বিবৃতিও। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘ছবির মুখ্য চরিত্রের মাধ্যমে এই সংলাপ পরিবেশন করে নীতেশ তিওয়ারি প্রায় ৬০ লক্ষ ইহুদির স্মৃতিকে অমর্যাদা করেছেন। শুধু তা-ই নয়, অ্যাডলফ হিটলারের গণহত্যা তথা হলোকস্টের মর্মান্তিক পরিণতিকে লঘু করেছে এই ছবি।’’ সংস্থার অন্যতম আধিকারিকের দাবি, ‘‘আউশভিৎজ় কোনও উপমা নয়, এটা এক ঐতিহাসিক নিষ্ঠুরতার দলিল। স্রেফ প্রচার পাওয়ার উদ্দেশ্যে যদি পরিচালক এই ছবি তৈরি করে থাকেন, তা হলে সেই লক্ষ্যে তিনি সফল হয়েছেন।’’ নীতেশ তিওয়ারির এই ছবির মাধ্যমে যে ব্যবসা করছে সংশ্লিষ্ট ওটিটি কর্তৃপক্ষ, তা বন্ধ করার আর্জি জানিয়েছে ইহুদি মানবাধিকার সংস্থা।
গত ২১ জুলাই জনপ্রিয় একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে ‘বাওয়াল’। ছবি মুক্তির পরে এত দিন ছবির প্রশংসাকেই ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে প্রচার করছিলেন বরুণ ও জাহ্নবী। তবে সমাজমাধ্যমের পাতায় সমালোচনা আরও তীব্র হওয়ায় দিন কয়েক আগে এই প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন বরুণও। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বরুণ বলেন, ‘‘আমি অনেকের থেকেই শুনছি যে কিছু দর্শকের আমাদের ছবি দেখে গায়ে লেগেছে। আমি বুঝতে পারছি না কেন। অনেক ইংরেজি ছবিতেই তো এমন অনেক কিছু দেখানো হয়। হলিউড বলে ওদের যা ইচ্ছা তাই করার স্বাধীনতা রয়েছে। আর আমরা কোনও কিছু করলেই তাতে অসুবিধা!’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি জানি এমন অনেককে যাঁরা সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া একটি ভীষণ জনপ্রিয় ছবির একটি দৃশ্য দেখে বিরক্ত হয়েছেন। ওই দৃশ্যটা আমাদের দেশের সংস্কৃতির জন্য বেশ গুরুতর। তাতে কারও কোনও অসুবিধা নেই। তখন সবার সমালোচনার ভাষা হারিয়ে যায়!’’ নাম উল্লেখ না করলেও বরুণ যে ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ওপেনহাইমার’-কেই কটাক্ষ করেছেন, তা স্পষ্ট তাঁর মন্তব্য থেকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy