মেয়েরা ধর্ষিত হবেন বলেই খোলামেলা পোশাক পরেন? প্রশ্নে উরফি জাভেদ। ছবি: সংগৃহীত।
মেয়েরা শরীর ঢাকলেই নাকি নিরাপদ! এমন তথ্য বা বক্তব্য বহু বার বহু জন বলেছেন। বিশেষ করে ধর্ষণের মতো ঘটনা প্রকাশ্যে এলে। একই বক্তব্য ফের শোনালেন উদ্যোগপতি মান্নান দত্ত। তিনি পেশায় আত্মরক্ষা প্রশিক্ষক, মার্শাল আর্ট অ্যাকাডেমির একটি শাখার কর্ণধার। মেয়েদের মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বলেন, “বিপজ্জনক রাস্তায় মেয়েরা যদি খোলামেলা পোশাক পরে হাঁটেন তা হলে তাঁদের বিপদে পড়তেই হবে!” তাঁর এই বক্তব্য ঝলক আকারে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই নজরে আসে উরফি জাভেদের। সঙ্গে সঙ্গে তিনি প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। প্রশ্ন তোলেন, “মেয়েরা কি ইচ্ছাকৃত ভাবে ছোট পোশাক পরে বিপজ্জনক রাস্তায় হাঁটেন, ধর্ষণের শিকার হবেন বলে?” আফসোস তাঁর, ধর্ষককে শাস্তি দেওয়ার বদলে ধর্ষিতার পোশাক নিয়ে প্রশ্ন তোলা বোধ হয় আজও বেশি সহজ।
একুশ শতকেও পুরুষতান্ত্রিক সমাজে যখনই ধর্ষণের মতো বিষয় নিয়ে কথা ওঠে তখনই নারী সমালোচিত তার পোশাক নিয়ে। একই কথা শোনা গিয়েছে উদ্যোগপতি মান্নানের মুখেও। তিনি মেয়েদের আত্মরক্ষার জন্য মার্শাল আর্ট শেখার সঙ্গে পোশাকের উপরে যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এ-ও জানিয়েছেন, এ কথা বললেই মেয়েরা প্রতিবাদ জানান। তাঁদের পাল্টা যুক্তি, গা- ঢাকা পোশাক পরেও চার বছরের শিশু কিংবা বোরখায় ঢাকা নারী ধর্ষিত হন। তাঁদের মতে, পোশাক ধর্ষণের অন্যতম কারণ নয়। সেই মত মেনে নিয়ে মান্নানও কিছু যুক্তি দেখিয়েছেন। তাঁর মতে, যে রাস্তায় চুরি-ছিনতাই বেশি হয় সেই রাস্তা দিয়ে কেউ যদি দামি ঘড়ি, ফোন বা ব্যাগভর্তি টাকা হাতে হাঁটেন— তাঁর বিপদ হবেই। এই নিয়ম নারীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝে পোশাক নির্বাচন করলে হয়তো কিছুটা হলেও নিন্দনীয় ঘটনা আটকানো সম্ভব।
উদ্যোগপতির এই ভাইরাল বক্তব্য চোখে পড়তেই প্রতিবাদে ফেটে পড়েন উরফি। জানতে চান, কোনও ব্যাঙ্কে কম নিরাপত্তারক্ষী মানেই কি সেই ব্যাঙ্ক ডাকাতদের অবাধে লুটপাট চালানোর আমন্ত্রণ জানাচ্ছে? এ-ও বলেন, “৯০ শতাংশ ধর্ষিতা কিন্তু তাঁদের ধর্ষকদের চেনেন। অর্থাৎ, পরিচিতরাই তাঁদের সঙ্গে এমন ঘৃণ্য ঘটনা ঘটিয়েছেন। এটাই প্রমাণ করে দিচ্ছে, পোশাকের বিষয়টা কোনও কারণই নয়। পাশাপাশি, এখনও শহরের থেকে গ্রামাঞ্চলে ধর্ষণ বেশি ঘটে।” ফের প্রশ্ন তোলেন, রাস্তায় খুনি ওত পেতে থাকবে— এই আশঙ্কা থেকে কি কেউ স্বাধীন ভাবে রাস্তাঘাটে চলাফেরা করবেন না?
উরফি উদ্যোগপতি মান্নানের মতো পুরুষদের থেকে অনুরাগীদের (বিশেষ করে মহিলা অনুরাগী) দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। সাফ জানান, ২০২৫ সালে নারীর পোশাকের দিকে আঙুল তোলা পুরুষ প্রশিক্ষকের অস্তিত্ব থাকার চেয়ে না থাকা ভাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy