গত জুন মাসের দশ তারিখ থেকে যাত্রা শুরু করেছিল ধারাবাহিক ‘শ্রীময়ী’। প্রায় সাড়ে চার মাসেই টিআরপি বেড়ে ‘কে আপন কে পর’ সিরিয়ালকে টপকে স্টার জলসা চ্যানেলের এক নম্বরে ‘শ্রীময়ী’। সব চ্যানেলের মিলিত রেটিং-এও ধারাবাহিকটির উত্থান চোখে পড়ার মতো। চলতি সপ্তাহের তালিকায় চার নম্বরে ‘শ্রীময়ী’। এত দ্রুত তালিকার ওপরের দিকে জায়গা করে নেওয়ার কারণ কী?
ধারাবাহিকের ‘শ্রীময়ী’ ইন্দ্রাণী হালদার মনে করেন, “শ্রীময়ীর যে ধরনের সমস্যা দেখানো হচ্ছে তার কোনও না কোনও সমস্যার সঙ্গে দর্শক নিজেদের মিল খুঁজে পায়। এটা এক নম্বর কারণ। আর ‘শ্রীময়ী’-র ঘটনাটা অত্যন্ত বাস্তবধর্মী। আর পাঁচটা সিরিয়ালের থেকে ‘শ্রীময়ী’ এখানেই আলাদা। ‘শ্রীময়ী’র চরিত্রগুলো অত্যন্ত রিয়েলিস্টিক। সেই কারণে মানুষ প্রত্যেকটি চরিত্র... তা নেগেটিভ বা পজেটিভ যা-ই হোক না কেন, সবার সঙ্গেই একটা নৈকট্য অনুভব করছে। তা ছাড়া লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা। লেখাতে তো খুব পারদর্শিনী তিনি। শি ইজ ওয়ান অব দ্য বেস্ট রাইটারস ইন টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রি। ওনার লেখা, ওনার গল্পের বাঁধুনি সবটাই ভীষণ জোরদার। সবটা মিলিয়ে ‘শ্রীময়ী’র পুরো প্যাকেজটা একটা অত্যন্ত ভাল প্যাকেজ। সে জন্য ‘শ্রীময়ী’ মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে।”
প্রযোজক, লেখক লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের মতে, “সব মেয়ে তার নিজের জীবনে না হলেও মায়ের জীবনে শ্রীময়ীকে দেখেছেন। এই জেনারেশনের থেকেও মায়েরা গল্পটা খুব বেশি করে রিলেট করতে পারেন। আর তাঁরাই আমাদের ভিউয়ার মেনলি। সেই কারণেই তাঁদের কোথাও মনে হচ্ছে ‘আমার গল্প’। নিশ্চয় এটাই টিআরপি বেড়ে যাওয়ার কারণ।”
আরও পড়ুন:সেলুলয়েডের পুরস্কারে দুই বাংলার সেতুবন্ধ
‘শ্রীময়ী’য়ের শুটিংয়ে ব্যস্ত সুদীপ-ইন্দ্রানী
শ্রীময়ীর স্বামী অনিন্দ্যর চরিত্রে সুদীপ মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথাতেও লীনার মতের প্রতিধ্বনি, “শ্রীময়ীর মধ্যে আমি আমার মাকে দেখতে পেয়েছি। মা সারা জীবন সংসার করে গেছেন। আমি সে ভাবে কানেক্ট করতে পেরেছি। যাঁরা দেখছেন তাঁরা কিন্তু নিজেদের বা মায়েদের দেখতে পান। আমার কাছে প্রচুর মেসেজ আসে। ‘আমার মা শ্রীময়ীর মতো’ বা ‘বাবা অনিন্দ্যর মতো, খুব খারাপ ব্যবহার করে মায়ের সঙ্গে,’ এ রকম।”
শ্রীময়ী খুব সাধারণ এক গৃহবধূ। তাকে পেরতে হয় রোজকার জীবনের নানান সমস্যা। ছেলেমেয়ে, স্বামী, সংসারের বাইরে যেন কিছুই তার ভাবার নেই। উদয়াস্ত পরিশ্রম করেও নেই শ্রমের মূল্য। গৃহশ্রমের মূল্য নিয়ে প্রথম সরব হয়েছিলেন জার্মান নারী আন্দোলনের নেত্রী ক্লারা জেটকিন। কিন্তু গৃহশ্রম এক বেগার খাটনি হয়েই থেকে গিয়েছে আজও। তাই শ্রীময়ীদের নেই তেমন সামাজিক মূল্য। উপরন্তু, স্বামীর দ্বিতীয় সম্পর্কের কথা জেনেও স্বামীর অসুস্থতার সময় সব কর্তব্য করে শ্রীময়ী।
‘শ্রীময়ী’য়ের একটি দৃশ্যে উষসী-সুদীপ
আরও পড়ুন: বাঙালদের মতো রান্না কেউ পারে না, ঢাকায় বললেন ঋতাভরী
শ্রীময়ীর স্বামীর লাভ ইন্টারেস্ট জুন এবং চরিত্রটি অসম্ভব স্বাবলম্বী। শ্রীময়ীর ঠিক বিপরীতে দাঁড়িয়ে জুনের জীবনেও আছে আলো-অন্ধকার। সেই চরিত্রে ঊষসী চক্রবর্তী। তালিকার ওপরে উঠে আসার কারণ হিসেবে তিনি বললেন, “অবশ্যই লীনাদির লেখা এবং মামণিদির (ইন্দ্রাণী) অসাধারণ পারফর্ম্যান্স। আর অবশ্যই আমাদের সবার টিম এফর্ট।”
সব মিলিয়ে ‘শ্রীময়ী’র যাত্রার গ্রাফ ক্রমশ ওপরের দিকে উঠছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy