ছবির একটি দৃশ্যে স্বস্তিকা মুখার্জি।
‘‘--দিদি দিদি নামটা বলুন
---ডলি বাগরি’’----
তুখোড় সেলসম্যান এই নামের মালকিন! পাড়ার সব বয়সের সমস্ত মেয়ে নতুন জীবন ফিরে পায় ডলির জিয়ন কাঠির ছোঁয়ায়। ডলি যেন অসাধ্য সাধন করতে পারে। যে বেঁচে থাকে, হাড়ভাঙা খাটনি খাটে নিজের ভাল থাকার জন্য। পরিচালক অর্জুন দত্তের পুজো উপহার গুলদস্তার তিন ফুলের এক ফুল ডলি। বাকি দুই শ্রীরূপা আর রেণু।
মহাভারতের অর্জুন লক্ষ্যভেদ করে দ্রৌপদীকে জিতেছিলেন। একুশের অর্জুন দত্ত এক ফ্রেমে বন্দি করেছেন এমন তিন নারীকে যাঁরা ‘এ বলেন আমায় দেখ, ও বলেন আমায়'! তিন নারী-ই বড় এবং ছোট পর্দা মিলিয়ে ক্ষুরধার তরবারি। এঁরা অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়, দেবযানী চট্টোপাধ্যায় এবং স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। ‘অব্যক্ত' অর্জুন দত্তের পরের ছবির তিন ফুল।
গল্প অনুযায়ী ছবিতে অর্পিতা 'শ্রীরূপা'। ঘরে-বরে যিনি ঘোরতর সংসারী। এবং আপাতদৃষ্টিতে সম্পূর্ণা। আপাত দৃষ্টিতে কথাটা এই জন্যেই, সব থেকেও কী যেন নেই-এর তাড়নায় সারাক্ষণ ভোগেন শ্রীরূপা। কী সেই অভাব? ক্রমশ প্রকাশ্য। তবে ছবি নিয়ে ভীষণ উত্তেজিত টলিউডের ফার্স্ট লেডি। নিজের চরিত্র নিয়ে বলতে গিয়ে বলেন, 'অর্জুনের সঙ্গে এটা আমার দ্বিতীয় কাজ। আগের ছবি 'অব্যক্ত'-র থেকে এই চরিত্র একেবারেই আলাদা। ইন্দো-জার্মান ফিল্মউইক সম্মান ২০১৯ পাওয়ার পর থেকেই পরিচালকের প্রতি বিশ্বাস এবং প্রত্যাশা আগের থেকে আরও বাড়ল আমার। দর্শকেরও। আর স্বস্তিকার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে। ওঁর অভিনয়, ব্যক্তি স্বস্তিকা---দুজনকেই ভীষণ শ্রদ্ধা করি।'
পরিচালক অর্জুন দত্তের পুজো উপহার গুলদস্তার তিন ফুলের এক ফুল ডলি
ছবির দ্বিতীয় ফুল রেণু। সংসারে সমর্পিত প্রাণ। ভীষণই সাদামাঠা। চট করে ‘রা’ কাড়েন না। সংসার রয়েছে তাঁরও। রয়েছে ছেলেকে নিয়ে সমস্যাও। চরিত্র নিয়ে বলতে গিয়ে দেবযনী জানালেন, ‘'ছোটপর্দায় সবাই আমাকে ‘খল’ হিসেবে চেনেন। নয়তো ভীষণ আউট স্পোকেন, স্মার্ট, মর্ড মহিলা। রেণু একেবারেই তার বিপরীত। বলতে পারেন ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে পর্দায় প্রতিফলিত হব আমি। নিজেকে নতুন ভাবে চেনাতে তাই ঠিক করেছি, মেকআপ করব না একেবারেই। আর ভালো লাগছে এই নিয়ে তৃতীয়বার অর্জুনের ছবিতে থাকতে পেরে। এতদিন বড়পর্দা ডাকেনি আমায়। অর্জুন লেডি লাক বলে সম্বোধন করে ওঁর ছবিতে অর্পিতা, স্বস্তিকার পাশে আমায় জায়গা দিয়ে সেই সম্মান দিলেন।'’
আরও পড়ুন: ‘টাইগার শ্রফের মতো সিক্স প্যাকওয়ালা নায়কের গলায় অভিজিৎ দা প্লে ব্যাক করলে কেমন লাগবে!’
ছবির তৃতীয় ফুল ডলি বাগরি। মাড়ওয়াড়ি সেলস উওম্যান। শুরুতে যার কথা ছিল। ডলির কথা বলতে গিয়ে স্বস্তিকার দাবি, ডলি অনেক ক্ষেত্রে তাঁর মতোই। তিনিও কাজ ছাড়া থাকতে পারেন না। তিনিও নিজেকে ভালবেসে বাঁচেন। একই সঙ্গে স্বস্তিকাও উদগ্রীব অর্পিতার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করতে।
ছবিতে দেবযানীর ছেলের ভূমিকায় দেখা যাবে অনুভব কাঞ্জিলালকে। অর্পিতার স্বামী অর্ণব হয়েছেন ইশান মজুমদার। তিনি একইসঙ্গে উৎসাহিত এবং টেনশনে কাঁপছেন। অর্পিতার বিপরীতে অভিনয় করতে পেরে। জানালেন, 'ছবিতে আমি কর্পোরেট চাকুরে। অর্পিতা হাউসওয়াইফ। বরাবরই অর্পিতার কাজ আমার ভালো লাগে। নিজেকে তৈরি করতে আরও বেশি করে ওঁর অভিনয় দেখছি।' ছবির আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র রিয়া-র ভূমিকায় দেখা যাবে অনুরাধা মুখোপাধ্যায়কে। অতিথি চরিত্রে থাকছেন অভিজিৎ গুহ।
লাস্ট বাট নট দ্য লিস্ট, পরিচালক অর্জুন দত্ত। যিনি প্রথম ছবি থেকেই দর্শকদের প্রত্যাশাকে বাড়িয়ে দিয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর দ্বিতীয় ছবি নিয়ে সবারই আগ্রহ থাকবে। অর্জুন যদিও খুব সহজ কথায় জানালেন, 'প্রথম ছবিতে মা-ছেলের সম্পর্কের কথা বলেছি। এবার বলব তিন নারীর কথা। যাঁরা ভিড়ে মিশে গিয়েও নিজেদের আলাদা পরিচিতি তৈরি করে নেয়।
এ বারের পুজোয় সিনেমা হলে যে মাত্র ৫০ জন দর্শক! তাতে কি? শেষ পর্যন্ত ছবি যে বড় পর্দায় মুক্তি পাচ্ছে, অনেকটা পাওনা। অর্জুন তাই খুশি। সঙ্গে আশা, ‘গুলদস্তা’র সুগন্ধ রোজ ৫০ জনের মুখে মুখে ৫০০ জনের কাছে পৌঁছে যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy