সেটে চলছে স্যানিটাইজ়েশন
করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন পর শুটিং শুরু হওয়ার কথা ছিল বুধবার, ১০ জুন থেকে। কিন্তু মঙ্গলবার দিনভর টানাপড়েনের পরে গভীর রাতে পাল্টে যায় সেই সিদ্ধান্ত। নতুন করে অচলাবস্থার জেরে এখনই ছন্দে ফিরতে পারছে না টালিগঞ্জ। কিন্তু শুটিং শুরু করতে না পারা গেলেও প্রস্তুতিতে কোনও ঢিলেমি নেই। অতিমারি পরিস্থিতিতে শুটিং ফের শুরু করার জন্য কতটা তৈরি টলিপাড়া?
সুরক্ষাবিধি মেনে শুটিংয়ের জন্য কতটা তৈরি হয়েছে স্টুডিয়োগুলো, স্বচক্ষে দেখতেই এসে পড়া দাসানিতে। সবুজ গেট পেরতেই চোখে পড়ল, স্টুডিয়ো মালিক অমিতাভ দাসানি স্টাফদের মাস্ক বিতরণ করছেন। কাজের দায়িত্বও ভাগ করে দিলেন নিরাপত্তারক্ষী থেকে সাফাইকর্মীকে।শুটিং শুরু হলে অপ্রিয় ঘটনার মুখোমুখি হলে সোশ্যাল ডিসটেন্সিং মেনে কীভাবে সামলাবেন কর্মচারীরা, আগাম গাইডলাইনও দিলেন তিনি। বোঝালেন কর্মচারীদের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে মাস্ক, গ্লাভস, ফেস শিল্ড পরা বাধ্যতা। মোটকথা, শুটিংয়ের যুদ্ধে নামতে তৈরি দাসানি। অমিতাভর কথায়, ‘‘শুটিং শুরু হলে দাসানি ও দাসানি ওয়ান স্টুডিয়োর কর্মচারীদের যে-কোনও পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত করতেই এই বৈঠক। স্টুডিয়ো স্যানিটাইজেশনের কাজ শেষ। দু-তিন রকম কেমিক্যাল দিয়ে স্টুডিয়োচত্বর, ফ্লোর, মেকআপরুম, ড্রেসাররুম, বাথরুম পরিস্কার করা হয়েছে। কোনও জায়গা বাকি রাখিনি।’’ ‘শ্রীময়ী’, ‘মোহর’-এর শুটিংফ্লোর দাসানি। আবার ‘সিংহলগ্না’, ‘আলোছায়া’, ‘কপালকুন্ডলা’ সহ আরও পাঁচটি ধারাবাহিকের শুটিংফ্লোরে পৌঁছে বুঝলাম, অপেক্ষা কেবল লাইট, সাউন্ড, ক্যামেরা, অ্যাকশনের...।
আবার টালিগঞ্জ থেকে আনোয়ারশাহ রোড ধরে ডানহাতে ভারতলক্ষ্মী স্টুডিয়োতে ঢুকতেই শোনা গেল, নির্দিষ্ট জায়গায় গাড়ি ছাড়তে হবে। বাকি পথ হেঁটেই ফ্লোরে ঢুকতে হবে। অবশ্যই থার্মাল চেকিং, হাত স্যানিটাইজ় করার পরই। প্রফেশনাল বিশেষজ্ঞ দিয়ে স্টুডিয়ো স্যানিটাইজ় করার কাজ চলছিল ‘জয় বাবা লোকনাথ’-এর ফ্লোরে। চোখ আটকাল বেশ কয়েকটা বেসিন ফিটিংসে।‘‘ প্রতি এক ঘন্টা অন্তর শুটিংচলাকানীন হাত ধোওয়ার ব্যবস্থা করতেই প্রতি ফ্লোরের পাশে দু’টো বেসিন রাখছি, প্রয়োজনে আরও বাড়াব। ক্যান্টিংয়ের পরিকাঠামোয় পরিবর্তন করেছি।’’ বললেন ভারতলক্ষ্মী স্টুডিয়োর মালিক জ্যোতি চৌখানি।
শুটিং শুরু হলে এইসমস্ত সুরক্ষাবিধি মানা হচ্ছে কিনা, বুঝবেন কী করে? ‘‘প্রতি ফ্লোরে মনিটর করতে একজন কোভিড ইন্সপেক্টরকে নিয়োগ করা হবে। তিনি নজর রাখবেন প্রতিটি বিষয়ে।’’ জানালেন জ্যোতি।
শুটিং শুরু হলে স্টুডিয়োতে প্রবেশ করলেই কীভাবে সুরক্ষাবিধি পালন হবে, গাইড লাইন পেলাম এন টি ওয়ান স্টুডিয়োয় পৌঁছেই।‘‘প্রতি ধারাবাহিকের প্রডাকশন ম্যানেজারের কাছ থেকে লিখিত নাম চেয়েছি। নাম না থাকলে স্টুডিয়োতে প্রবেশ করতে পারবেন না। শিল্পী-টেকনিশিয়ানসরা থার্মাল চেকিং ও হাত স্যানিটাইজ় করেই প্রবেশ করবেন ফ্লোরে। মেকআপ রুম,বাথরুম কমকরে দু’বার পরিষ্কার হবে। একটি ইউনিটের শুটিং শেষেই ফ্লোরও স্যানিটাইজ় হবে। একটি রেস্তরার সঙ্গে ট্রাইআপ করে প্যাকড ফুডের ব্যবস্থা হয়েছে। আগের মতো থালা-বাসন ব্যবহার চলবে না,’’ বললেন এন টি ওয়ানের মালিক সৈগত নন্দী। এখানেই ‘সর্বমঙ্গলা’র শুটিং হয়। স্টুডিয়োচত্বর স্যানিটাইজ় করার প্রস্তুতি চোখে পড়ল।
সবচেয়ে আটোসাঁটো ব্যবস্থা ইন্দ্রপুরি স্টুডিয়োয়। একটি জনপ্রিয় পিরিয়ড ড্রামা ও মহিলা ডাক্তারের জীবনী নিয়ে ধারাবাহিকের শুটিংফ্লোর এখানেই। স্টুডিয়োতে অপ্রয়োজনীয় ব্যক্তির প্রবেশ নিষেধের বেড়া ডিঙিয়ে ফ্লোরে ঢুকতেই চোখে পড়ল, সেটের কাজ চলছে জোরকদমে। প্রডাকশনের ব্যস্ততা এতটাই যে লোকজনদের মধ্যে পারস্পরিক দুরত্ব বেশ কম।
স্টুডিয়োয় প্রবেশের কড়া নিয়ম, সমস্ত সুরক্ষাবিধি মানলেও, তিন ফুটের দুরত্ববিধি মেনে শুটিং করার যে নির্দেশিকা রয়েছে, তা বাস্তবে কতটা সম্ভব, এবার প্রশ্ন সেটাই!
আরও পড়ুন: গডফাদার সঞ্জয়কে চটিয়ে বলিউড থেকে মুছে যেতে বসেছিলেন, সংসার চালাতে হোটেলে কাজ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy