কনীনিকা ও কিয়া, শাহিদার সঙ্গে সুদীপ্তা
মাতৃদিবস উপলক্ষে সন্তানদের সঙ্গে ছবি পোস্ট করেছেন অভিনেত্রী লিজ়া রে। লক্ষণীয় সে ছবির ক্যাপশন। সেখানে তিনি উস্কে দিয়েছেন অত্যন্ত জরুরি একটি প্রশ্ন। লিজ়া লিখেছেন, ‘‘আমি রাঁধতে ভালবাসি না... বাচ্চাদের আধো বুলিতেও খুব খুশি হই না। প্রি-স্কুল টাইমটেবল নয়, বরং আমি শিল্প, রাজনীতি নিয়ে চর্চা করতে ভালবাসি। ‘মা’-এর তথাকথিত সংজ্ঞা আমার জন্য জুতসই নয়।’’ তা হলে ‘মা’-এর সংজ্ঞা কী? মাকে কি হতেই হবে ত্যাগের মূর্তি? তাঁর কি থাকতে নেই নিজস্ব জগৎ? কী বলছেন টলিউডের তারকা-মায়েরা?
বিদীপ্তা চক্রবর্তী বললেন, ‘‘আমার রান্না করতে একদম ভাল লাগে না। তার চেয়ে মেয়েদের গান শেখাতে ভাল লাগে। মেঘলা, ইদাও জানে বাড়িতে মা থাকলেই যে রান্না করবে, এমনটা নয়। বরং আমি থাকলে মেয়েদের নিয়ে ভাল সিনেমা দেখি, গান শেখাই, বই পড়াই।’’ সহজের সঙ্গে সিনেমা দেখে, গান শুনে সময় কাটাতে ভালবাসেন প্রিয়ঙ্কা সরকারও। প্লেলিস্ট নিয়ে দু’জনের ঝগড়াও হয়। ‘‘সহজের আর আমার আলাদা প্লেলিস্ট আছে। ও এখন র্যাপ শুনতে ভালবাসে। আমার সব সময়ে সেটা ভাল লাগে না। ওর প্লেলিস্ট খানিকক্ষণ চলার পরে আমি বলি, এ বার আমার যেটা ভাল লাগে, সেটা শুনব। এটা ওকে শিখতে হবে। না হলে পরে আর পাঁচজনের সঙ্গে মিলেমিশে চলবে কী করে?’’ বললেন প্রিয়ঙ্কা। তবে সাত বছরের ছেলের সঙ্গে নিজের মনখারাপের কথাও ভাগ করে নেন তিনি। সন্তানের কাছে সৎ থাকাটা জরুরি বলে মনে করেন প্রিয়ঙ্কা, যা তিনি শিখেছেন নিজের মায়ের কাছ থেকেই। মায়ের ভূমিকা পালন করতে পারার সব কৃতিত্বই নিজের মাকে দিলেন অভিনেত্রী।
‘মাতৃত্ব’ শব্দের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে সমাজ নির্দেশিত ত্যাগস্বীকারের ভাবনাও। সেখানেই আপত্তি কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর কথায়, ‘‘মায়েদের আমরা টেকেন ফর গ্রান্টেড ধরে নিয়েই চলি। কিন্তু নিজে মা হওয়ার পরে বুঝেছি মা আমার জন্য কত আত্মত্যাগ করেছেন। এখন নিজেই মাকে বলি, ‘এত স্যাক্রিফাইস কোরো না তো!’ আমি নিজে করি না। আমিও তো একটা মানুষ। আমারও তো কিছু চাহিদা আছে।’’ মা নিজে ভাল থাকলে তবেই তো সন্তান সেই নির্যাসটুকু পাবে।
সন্তানকে বড় করার সঙ্গে সমান তালে রয়েছে পেশা। মেয়ে বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজের জগতে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন কনীনিকা। আর তখনই টের পাচ্ছেন কাজটা কত কঠিন আর কতটা জরুরি। তাই কাজের জগতে প্রতিষ্ঠিত হওয়াটা আধুনিক তারকা মায়েদের কাছে প্রায়রিটিও বটে। কারণ নিজেরা প্রতিষ্ঠিত হলে তবেই তো সন্তানদের চোখে তাঁরা হয়ে উঠবেন রোল মডেল। ‘‘চব্বিশ ঘণ্টা ছেলেমেয়ের দিকে নজর দিয়ে বসে থাকলেই যে মায়ের কর্তব্য পালন করা হয়, তা নয়। এখনকার ছেলেমেয়েরা যেহেতু বাইরে ওয়ার্কিং উওম্যান দেখতে অভ্যস্ত, তাই ওরাও মায়ের কর্মপরিচয়ে গর্ব বোধ করে,’’ মত সুদীপ্তা চক্রবর্তীর।
সন্তান জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ঠিকই, কিন্তু তার জন্য পেশাকে কোনও ভাবেই হেলাফেলা নয়। তাই অসুস্থ ইদাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েও শুটিং করতে গিয়েছেন বিদীপ্তা। ‘‘ওর তখন শরীর খুব খারাপ, হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। কিন্তু আমার শুটিং কমিট করা ছিল,’’ বললেন বিদীপ্তা। তার জন্য সন্তানের প্রতি তাঁর ভালবাসা বা দায়িত্ব কমেনি। ‘‘কাজ থাকলে সন্তানদের জন্য ব্যবস্থা করেই তা সারব। কারণ কাজটাও গুরুত্বপূর্ণ সেটা সন্তানদের বোঝাতে হবে,’’ বললেন অভিনেত্রী।
‘মা’-এর তথাকথিত সংজ্ঞা থেকে বেরিয়ে মাতৃত্বকে ব্যাপ্তি দিয়েছেন আধুনিক মায়েরা। সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার পাশাপাশি নিজের জগতেও আজ তাঁদের সমান বিচরণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy