সৃজিত মুখোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
সৃজিত মুখোপাধ্যায় এ বার বাবুরাম সাপুড়ে! কারণ, তাঁর বাড়িতে এখন পাইথনের বাস!
বৃহস্পতিবার রাতে জানা যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায় পাইথন পুষছেন। তিনি সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টে লেখেন, ‘‘উলুপীকে বাড়িতে স্বাগত। আমাদের জীবন চিরকালের জন্য বদলে গেল।’’ এই পোস্টের পরেই পরিচালকের পরিবারে নতুন অতিথি কে, তা নিয়ে টলিপাড়ায় জল্পনা ছড়ায়। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, সৃজিত বাড়িতে একটি পোষ্য এনেছেন। আর সেই পোষ্যটি কোনও সারমেয় নয়, সেটি একটি পাইথন! পরিচালক নাকি সুদূর কলম্বিয়া থেকে এই পাইথনকে আনিয়েছেন। ‘উলুপী’ শব্দের অর্থ কী? ‘মহাভারত’ ছাড়াও বিষ্ণু পুরাণ এবং ভগবত পুরাণে নাগকন্যা উলুপীর উল্লেখ রয়েছে। কথিত আছে, বনবাসে থাকাকালীন অর্জুনের সঙ্গে উলুপীর বিবাহ হয়।
টলিপাড়ায় কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, দীর্ঘ দিন ধরেই সাপ পোষার শখ সৃজিতের। সেই মতো তিনি উদ্যোগী হন। সূত্রের খবর, দিন দশেক আগে সৃজিত তাঁর নতুন পোষ্যটিকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। তবে বাড়িতে পাইথন পোষা যায় কি না, তা নিয়ে রয়েছে ধন্দ। যদিও টলিপাড়া সূত্রে খবর, সৃজিত বন দফতর থেকে যাবতীয় প্রযোজনীয় অনুমতি নিয়েই পাইথনটিকে বাড়িতে নিয়ে এসেছেন। তবে পোষ্যকে আপাতত অনুরাগীদের নজরের আড়ালেই রেখেছেন পরিচালক। ছবি দেখানোর অনুরোধ করলে সৃজিত উত্তরে মজা করে বলেছেন, ‘‘বাচ্চাদের ছবি দেওয়া ঠিক নয়। আর একটু বড় হোক, দেব।’’
সাপ পোষা কি আইনসম্মত? দেশের আইন কী বলছে? ১৯৭২ সালের ভারতীয় বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন অনুসারে দেশে সাপ ধরা, মারা বা সাপের শরীরের কোনও অংশের তৈরি জিনিসপত্রকে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। স্থানভেদে (সংরক্ষিত অরণ্যে বা তার বাইরে) সাজার তারতম্য রয়েছে। ভারতে মূলত তিনটি প্রজাতির পাইথন পাওয়া যায়। বিনা অনুমতিতে কেউ এদের মধ্যে একটিকে ধরলে, হত্যা করলে বা বাড়িতে পুষলে, তাঁর ১০ বছর পর্যন্ত জেল এবং জরিমানা হতে পারে। অন্য দিকে, বিদেশ থেকে যদি পাইথন আমদানি করা হয়, সে ক্ষেত্রে রাজ্য বন দফতর থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি নেওয়া আবশ্যিক। প্রয়োজনীয় নথিপত্র না থাকলে বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বিধি ‘সাইটস’ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ করতে পারে রাজ্য বন দফতর। সে ক্ষেত্রে জেল বা জরিমানা বা দুটোই হতে পারে।
বিদেশ থেকে কোনও সাপকে আমদানি করে বাড়িতে পোষ্য হিসেবে রাখার প্রক্রিয়াটি কিন্তু খুব সহজ নয়। রাজ্য বন দফতরের স্পেশ্যাল ডিউটি অফিসার কল্যাণ দাস আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, ‘‘যে কোনও প্রাণী দেশ থেকে রফতানি বা আমদানির ক্ষেত্রে ভারত সরকারের নির্দিষ্ট নিয়মকানুন রয়েছে। অনুমতি পাওয়ার পর সাপটিকে যে রাজ্যে আনা হয়েছে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বন দফতরের চিফ ওয়ার্ডেনের থেকেও অনুমতি নিতে হবে। অন্যথায় তা বেআইনি।’’ তিনি আরও জানালেন, ‘সাইটস’ (দ্য কনভেনশন অন ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইন এনডেনজার্ড স্পিশিস অফ ওয়াইল্ড ফনা অ্যান্ড ফ্লোরা)-এ উল্লেখ্য প্রাণীদের বিদেশ থেকে ভারতে বা দেশ থেকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট একাধিক দফতরের তরফে অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন। বিদেশ থেকে কোনও পাইথনকে দেশে আনতে গেলে কত দিন সময় লাগতে পারে? কল্যাণের কথায়, ‘‘বলা কঠিন। কারণ কোথা থেকে আসছে, সেই দেশের সরকারের তরফে অনুমতি পাওয়া, কী ভাবে আনা হচ্ছে, তার উপর সময় নির্ভর করবে। তবে চিড়িয়াখানা বা ব্যক্তিগত সংগ্রহে রাখা, উভয় ক্ষেত্রেই একই নিয়ম রয়েছে।’’
শোনা যাচ্ছে, যা যা অনুমতি প্রয়োজন, সৃজিত সে সব আগেই নিয়ে রেখেছেন। তবে শুধু অনুমতি নিলেই তো হবে না। সাপ পোষার তো ঝক্কিও অনেক। পরিচালক কী ভাবে সামলাচ্ছেন? সৃজিত বললেন, ‘‘পাইথন খুবই শান্ত প্রাণী। এ আর ঝক্কি কী! তবে আমি অনেক ছোট থেকেই সাপখোপ সামলাতে পারি। আমার কোনও ভয় নেই। বরং এই উপমহাদেশে সাপ নিয়ে বড্ড কুসংস্কার। সেগুলো ভাল লাগে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy