রাতে বাড়ির সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়তেন, সুদীপ বইঠাসা ঘরের ছোট্ট একফালি জায়গায় যোগব্যায়াম এবং শরীরচর্চা শুরু করেন। ছবি—সংগৃহীত
অভিনয়ে আসা মানেই জিমে গিয়ে চেহারা বানানোর ছবি দেওয়া এ প্রজন্মের চেনা ছন্দ। তার মধ্যেই চমকে দিলেন অভিনেতা সুদীপ মুখোপাধ্যায়। বাড়িতে ব্যায়াম করে বানানো সুস্থ স্বাভাবিক পেশিবহুল চেহারাও যে পৌরুষের গর্বিত উদ্যাপন হতে পারে তা তিনি দেখিয়ে দিলেন। জীবনে যা কোনও দিন করেননি, তা-ই করলেন সুদীপ। পরিবার-পরিজনদের অনুরোধে ফেসবুকে তিনটি শার্টলেস ছবি পোস্ট করে নিজের অঙ্গসৌষ্ঠব প্রকাশ্যে আনলেন ‘শ্রীময়ী’ ধারাবাহিকের অনিন্দ্য।
অভিনেতা জানালেন, করোনা আবহে কয়েক মাসে প্রায় ৩০ কেজি ওজন ঝরিয়েছেন জিমে না গিয়েই। ফলাফল চোখের সামনে। লিখেছেন, “শরীর মন্দিরের মতো, প্রতি দিন ৩০ মিনিট করে পুজোর জন্য রাখো।” সুদীপের সেই পোস্ট দেখে প্রশংসার বন্যা। কেউ লিখলেন, ‘‘আমাদের হিম্যান, পুরনো দিনের কথা মনে করিয়ে দিলে।’’ আবার কেউ বললেন, ‘‘বাংলার অ্যার্নল্ড, বাংলার গর্ব।” কী ভাবে ১১০ কিলোর চেহারা থেকে ৮০ তে নামলেন সুদীপ? জানালেন আনন্দবাজার অনলাইনকে।
দরাজ কণ্ঠে সুদীপ বললেন, “বাঙালির কাছে ভাল চেহারা মানে তো মোটা, ভুঁড়িওয়ালা চেহারা। সে কারণেই তিরিশ কেজি ওজন কমার পরে অনেকে আশঙ্কা করেছিলেন, আমার সুগার হয়েছে।” তেমন কিছুই নয়, লকডাউনেই নিজেকে ফিরে পেয়েছেন সুদীপ।
২০০৩-০৪ সাল নাগাদ সুদীপ যখন টলিউডে কাজ শুরু করেন, বলিষ্ঠ চেহারার কারণেই প্রত্যাখ্যাত হতে হয়েছে অনেক সময়। বললেন, “ খুব নামকরা পরিচালক আমায় বলেছিলেন, এই চেহারা নিয়ে বাংলা ছবিতে আমার কিছু করা সম্ভব নয়। পরে মুম্বইয়ের পেশিবহুল চেহারার অনুকরণ বাংলাতেও আসে।”
বরাবরই সুঠাম চেহারার অধিকারী সুদীপ। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওজনও বাড়ছিল। পুলিশ অফিসারের চরিত্রই পেতেন বেশির ভাগ। অনুপ্রেরণার অভাবে এবং কাজের চাপে তিনিও শরীরের যত্ন নেওয়া বন্ধ করে দেন বলে জানান সুদীপ। তাঁর কথায়, “আমিও ১১০ কিলো ওজনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছিলাম। ২০১০ সালে যখন ‘এরাও শত্রু’ ধারাবাহিক হচ্ছে, তখন দ্বিতীয় বার দুর্ঘটনায় পড়ি। চিকিৎসক বলেন, ওজন না কমালে সুস্থ হওয়া সম্ভব নয়। ডায়েট চার্ট পেলাম। খেতে খুব ভালবাসি আমি, দেখলাম এ দিয়ে আমার চলবে না। নিজেই নিজের ডায়েট চার্ট বানিয়ে নিলাম। পছন্দের সব খাবার রইল সেই তালিকায়, শুধু তেলের বদলে দইয়ে ভাপানো শুরু করলাম। ”
লকডাউনে ঘরে বসে থেকে অবসাদ গ্রাস করছিল সুদীপকে। তখনই ঘুরে দাঁড়ান। রাতে বাড়ির সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়তেন, সুদীপ বইঠাসা ঘরের ছোট্ট একফালি জায়গায় যোগব্যায়াম এবং শরীরচর্চা শুরু করেন। সুদীপের মতে, অভিনয় আর মাল্টিজিম কখনওই সমার্থক নয়। কলকাতা খুব সাইকেল-বান্ধব শহর না হলেও নিয়মিত সাইকেল চালিয়ে সেটে যান তিনি। তাঁর কথা, ‘‘যত দিন বাঁচি, যেন সুস্থ ভাবে বাঁচি।’’ বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে নবীন প্রজন্মের মধ্যেও ছড়িয়ে দিতে চাইলেন সেই বার্তাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy