সম্প্রতি অরিত্রের পোস্ট করা ‘ওয়েবলেন্থ’ ছবির লুক দেখে বিস্ময় প্রকাশ করলেন অনেকেই। তাঁর এ ভাবে ফিরে আসাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মন্তব্যের বন্যা। ছবি: সংগৃহীত।
পরনে আকাশনীল ফতুয়া আর পাজামা। উপরে চাপানো কোট। সারা গায়ে কালি মাখা, ত্বকের উপর এখানে-সেখানে ক্ষত। যেন হঠাৎ বিস্ফোরণের পর ল্যাবরেটরি থেকে বেরোলেন অরিত্র দত্ত বণিক। শুধু বেরোলেন নয়, নতুন অভিব্যক্তি নিয়ে বেরোলেন। আগের সেই ফাজিল, পাকা পাকা কথা বলা শিশুশিল্পীটি আর নেই। চশমার আড়ালে পরিণত, অনুসন্ধিৎসু দৃষ্টি অভিনেতার। এ কোন অরিত্র? কলকাতার বুকেই কি নেমে এল তবে আপোক্যালিপস?
সমাজমাধ্যমে পোস্ট করা কিছু ছবি দেখে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল অরিত্রের সঙ্গে। তিনি বললেন, ‘‘১৭ বছরের অভিনয় জীবনে এটিই আমার সর্বশ্রেষ্ঠ কাজ। রুদ্রজিৎ রায় পরিচালিত ‘ওয়েবলেন্থ’ ছবির মূল চরিত্র হয়ে উঠতে আমি দু’বছর ধরে নিজেকে ভেঙেছি। যে লুক এবং মনস্তত্ত্ব আমি আয়ত্ত করেছি, তা বিশেষ প্রাপ্তি।’’
‘ডান্স বাংলা ডান্স’ জুনিয়র (২০০৭)-এ মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে টক্কর দিয়ে ছোট্ট অরিত্র সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন। দর্শকের মন জয় করেছিলেন ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ থেকে শুরু করে ‘চ্যালেঞ্জ’ কিংবা ‘খোকাবাবু’-র মতো বাণিজ্যিক বাংলা ছবিতে। তার পর যত বড় হয়েছেন, কাজ হারিয়েছেন। মনের মতো কাজ না পেয়ে তাঁর অভিনেতাসত্তা ডুব দিয়েছিল ছবি সম্পাদনা এবং কম্পিউটার প্রযুক্তিতে। এখনও আন্তর্জাতিক প্রকল্পে কালার কারেকশন করেন তিনি। ভালবেসে ফেলেছেন সম্পাদনার কাজও। তবে ফিরে আসতেই হত।
সম্প্রতি অরিত্রের পোস্ট করা ‘ওয়েবলেন্থ’ ছবির লুক দেখে বিস্ময় প্রকাশ করলেন অনেকেই। অরিত্রের এ ভাবে ফিরে আসাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মন্তব্যের বন্যা। অভিনেতার বক্তব্য, ‘‘আমি মূলত কমেডি চরিত্রেই অভিনয় করে এসেছি শুরু থেকে। ফাজিল, ফচকে ছেলে হিসেবেই হিট হয়ে গিয়েছিলাম। সেই ধরনের চরিত্রেই দর্শক আমায় গ্রহণ করছিলেন শুধু, আমার পারফরম্যান্সও একঘেয়ে হয়ে যাচ্ছিল। এই চরিত্র করে নিজেকে ভাঙতে পেরেছি।’’
পেশায় চিকিৎসক রুদ্রজিৎ রায় তৈরি করেছেন কল্পবিজ্ঞান-নির্ভর ছবি ‘ওয়েভলেন্থ’। কলকাতা শহরে বসে বিশ্বমানের কাজ করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন তিনি। এর আগে বানিয়েছেন তথ্যচিত্র। তবে এই প্রথম প্রযোজক-পরিচালক হিসাবে এত বড় পরিধিতে কাজ করলেন রুদ্রজিৎ।
ছবির মূল চরিত্রে অরিত্র। অভিনেতা জানালেন, এর আগে পরিচালকের ইন্দোনেশিয়ার উপর করা স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবির কালার কারেকশনের কাজ করেছিলেন তিনি। তখন থেকেই এই গল্পের চরিত্রটির জন্য অরিত্রকে ভেবে রেখেছিলেন পরিচালক। মনে হয়েছিল, অভিনেতার শারীরিক গঠন এবং ভঙ্গির সঙ্গে মিল পাচ্ছেন টেক স্যাভি, অ্যাস্ট্রোফিজিক্স নিয়ে কাজ করতে চাওয়া চরিত্রটির।
অরিত্রের কথায়, ‘‘রুদ্রদা আমার মধ্যে সেই ডায়নামিক্স দেখেছিলেন। চরিত্রটার জন্য লুক বানানোর একটা প্রয়োজন ছিল। চেহারা খানিকটা ভাঙতে হত। প্রস্থেটিকের বিষয়ও ছিল। সেগুলো এড়াতে গিয়ে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। চরিত্রটা তৈরি করতে হয়েছে ভিতরে-ভিতরে। প্রচুর রিহার্সাল করতে হয়েছে।’’
গ্রাফিক্সের অনেক কাজ আছে ছবিতে। তাই, শুটিং শেষ হওয়ার পর আরও দেড় বছর লেগেছে সেই কাজে। অরিত্রের কথায়, ‘‘কলকাতা শহরে বসে যে এমন বিশ্বমানের কাজ করা যায়, এ ছবি সেটা দেখাল। ছবিতে সংলাপ নেই। পুরোটাই ভিজ্যুয়াল।’’
কিছু দিন আগেই বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেছেন অরিত্র। ‘ক্র্যাশ কোর্স’ ওয়েব সিরিজে কাজ করেছেন। এ মাসের ৭ তারিখে মুক্তি পাচ্ছে অরিত্র অভিনীত আরও একটি ছবি ‘বরফি’। তার পরই মে মাসের শেষ দিকে মুক্তি পেতে পারে ‘ওয়েভ লেন্থ’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy