Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Rajanya Haldar

অভিনয় ও পরিচালনায় তৃণমূল নেতারা, আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে রাজন্যার ছবি কি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত?

তৃণমূল নেত্রী রাজন্যা হালদার ও ছাত্র পরিষদের নেতা প্রান্তিক চক্রবর্তী মিলে আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে নির্মাণ করছেন ছবি।

রাজন্যা হালদর।

রাজন্যা হালদর। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:০৬
Share: Save:

এ বার পর্দায় আরজি কর-কাণ্ড! মহালয়ার দিনই মুক্তি পেতে চলেছে একটি স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি। তা নিয়েই শুরু হয়ে চাপান-উতর। কারণ, ছবিটির পরিচালনা এক তৃণমূল নেতার, অভিনয়ও করছেন এক নেত্রী।

গত ৯ অগস্টের পর যে মেয়ে গোটা দেশে সকলের আপন হয়ে গিয়েছেন, তিনি আরজি কর-কাণ্ডে নিহত চিকিৎসক-পড়ুয়া। তাঁর মৃত্যুর বিচার চেয়ে পথে নেমেছে শহরবাসী। সতীর্থের মৃত্যুতে ৩৮ দিন ধর্না দিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। বহু বছর পর ফের কলকাতা হয়েছে ‘মিছিল নগরী’। ১৪ অগস্ট থেকে লাগাতার শহরে চলছে মিছিল, প্রতিবাদ। দাবি ‘বিচার চাই’। গায়ক অরিজিৎ সিংহ গান বেঁধেছেন।

আবার এরই বিরুদ্ধে একের পর এক কটাক্ষ হেনেছে শাসকদল। প্রতিবাদী আন্দোলনের বিপক্ষে কথা বলেছেন তৃণমূলের মুখপত্র, মন্ত্রী-বিধায়ক থেকে সাংসদ সকলেই। এ বার তৃণমূল নেত্রী রাজন্যা হালদার ও ছাত্র পরিষদের নেতা প্রান্তিক চক্রবর্তী মিলে নির্মাণ করছেন একটি ছবি। দাবি, আরজি কর-কাণ্ড নিয়েই তৈরি হতে চলেছে এই ছবি। নাম— ‘আগমনী: তিলোত্তমাদের গল্প’।

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভিতরে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত হন এক চিকিৎসক-পড়ুয়া। ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু কেন হত্যা করা হল, কী ভাবে হাসপাতালের ভিতরে ধর্ষিতা হলেন তিনি, তা নিয়ে উঠছে একের পর এক প্রশ্ন। উত্তাল রাজ্য। প্রতিবাদ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। দেশের বাইরেও। ঘটনায় মুখ পুড়েছে শাসকের।

এ বার শাসক-ঘনিষ্ঠ রাজন্যা-প্রান্তিকই আরজি কর নিয়ে ছবি করছেন। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, কেন তৈরি হচ্ছে এই ছবি? তবে কি এই ছবি নির্মাণের পিছনে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে? আনন্দবাজার অনলাইনকে উত্তর দিলেন রাজন্যা।

২১ জুলাইয়ের মঞ্চে ‘আজ়াদি’ ধ্বনি তুলে রাতারাতি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হন প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী রাজন্যা হালদার। তার পর তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে বেশ কিছু দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। এ বার রুপোলি পর্দায় দেখা যাবে তাঁকে। রাজনীতি করতে করতে হঠাৎ এই বাঁক বদল কেন? প্রশ্নের উত্তরে রাজন্যা বলেন, “একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে এক রাজন্যার জন্ম হয়েছে। কিন্তু, রাজনীতিতে আসার আগে থেকেই রাজন্যার একটা শিল্পীসত্তা ছিল। একটা শৈল্পিক মনন ছিল। একই ভাবে প্রান্তিকেরও তা ছিল। সেই কারণেই এই ছবিটা করছি আমরা। রাজনীতি আমাদের পেশা। শিল্পসত্তার সঙ্গে এটার সম্পর্ক নেই।”

যে হেতু এই ছবির অভিনেত্রী রাজন্যা ও পরিচালক প্রান্তিক, দু’জনেরই রাজনৈতিক পরিচিতি রয়েছে, তাই পক্ষপাতের একটা আশঙ্কা থেকেই যায়। যদিও রাজন্যা এ কথা মানতে নারাজ। তিনি বলেন, “আজকে রাজন্যার জায়গায় অন্য কেউ হলে এটা বলত না কেউ। অথচ, আমাদের রাজনৈতিক পরিচিতি শুধুই আমাদের কাজের জায়গায়। আর এই ছবিতে আমরা কোনও রাজনীতির পক্ষ নিয়ে কথা বলছি না। এটা আমাদের চারপাশের তিলোত্তমাদের গল্প। হেনস্থার শিকার একজন নারী হতে পারেন। পুরুষও হতে পারেন।”

এই মুহূর্তে বিচারাধীন একটি বিষয় নিয়ে ছবি। নিহত চিকিৎসকের চরিত্রের প্রতিরূপও থাকছে এই ছবিতে, জানালেন রাজন্যা। তবে, আরজি কর কী ঘটেছে তা দেখানো হবে না। তার বদলে ছবির পটভূমিতে দেখা যাবে চারপাশের পরিস্থিতি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE