Advertisement
E-Paper

শুটিং শুরু বুধবার, কাজে যোগ দেওয়া নিয়ে বয়স্কদের মধ্যে মতভেদ টলিপাড়ায়

যেতেই পারি, কিন্তু এখনি? প্রশ্ন বয়স্কদের মনে! বয়সে প্রবীণ হলেও কিন্তু ক্যামেরার সামনে এখনও তাঁদের দাপট কম নয়! আনলক-১ এ ১০ জুন থেকে ক্যামেরা চালুর সিদ্ধান্তে ঠিক কী ভাবছেন তাঁরা?

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২০ ১৫:০৫
Share
Save

যেতেই পারি, কিন্তু এখনি? প্রশ্ন বয়স্কদের মনে! বয়সে প্রবীণ হলেও কিন্তু ক্যামেরার সামনে এখনও তাঁদের দাপট কম নয়! আনলক-১ এ ১০ জুন থেকে ক্যামেরা চালুর সিদ্ধান্তে ঠিক কী ভাবছেন তাঁরা?


“যাব না কেন?” ‘মোহর’ ধারবাহিকের সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় পালটা প্রশ্ন ছুড়লেন। না যাওয়ার কোনও কারণ দেখছেন না তিনি। বললেন, “আজ নাকি? সেই ছোট থেকে অভিনয় করে আসছি। যত দিন বাঁচব ওটাই করব।এই একটা কাজ ছাড়া আর কিছুই পারি না। আর আমি তো সুস্থই। ফলে, অসুবিধে কোথায়?” রীতিমতো আত্মবিশ্বাসী মহানায়কের আদরের ‘সাবু’। প্রযোজনা সংস্থা থেকে কি ডাক পেয়েছেন? খুব স্বাভাবিক ভাবে জানালেন, এখনও ডাক পাননি। তবে এই সব নিয়ে চিন্তিত নন আদৌ। মোহরের ঠাম্মার মতে, “সরকার অনেক করছেন অভিনেতা-অভিনেত্রীদের জন্য। সুবিধে-অসুবিধে দেখছেন। আমাদেরও তাই বোধহয় ভেবে দেখা উচিত। নির্দেশ মেনে কাজে নামা উচিত।” কথায় কথায় জানালেন, একদম ঘরোয়া ভাবে হঠাৎ পাওয়া ছুটি দিব্য কাটছে তাঁর। রাঁধছেন, বই পড়ছেন, গান শুনছেন। পুজো করতে বসলেই অনেকটা সময় কেটে যায় তাঁর। আর মনে থাকে অপেক্ষা, কবে ডাক পড়বে শুটিং ফ্লোরে?

রিল দুনিয়ার মা-বাবা, দাদু-ঠাম্মি যাঁদের উপস্থিতি ছাড়া জমতই না পরিবারের হুল্লোড়, ঝগড়া, তাঁরা কি তবে ফিরবেন না?

সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের মতের উল্টো পথে গেলেন পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বললেন, “অগস্ট-সেপ্টেম্বরের আগে ফ্লোরে কিছুতেই নয়।” তিনি জানালেন এই মুহূর্তে চার বছর বয়সের প্রেমিকা (নাতনি)তাঁকে এত ব্যস্ত রেখেছে যে সময় কোথা দিয়ে কেটে যাচ্ছে টেরই পাচ্ছেন না তিনি।
শুটিং ফ্লোর থেকে তা হলে দূরেই থাকবেন তিনি? প্রশ্ন করতেই খুব স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন টলিউডের চিরনবীন অভিনেতা “এখনি শুটিং? খুব ইচ্ছে নেই। কারণ, এখন অতিমারির যাকে বলে পিক আওয়ার্স। এখন আমি অন্তত বেরোতে চাইছি না”। ডাক পড়লে কী করবেন? এই কথায় অভিনেতার যুক্তি, “আগে চিত্রনাট্য দেখব। বুঝব কী ভাবে কাজ হবে। তার পর ভাবব। নিজের সাবধানতার দিকটাও দেখতে হবে। এই মুহূর্তে কী করে হ্যাঁ বলে দিই।”

আরও পড়ুন- ১০ বছরের কমবয়সী খুদে অভিনেতারা কতটা মিস করছে টলিপাড়া?


এ্রর সঙ্গে পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কমবয়সী অভিনেতাদের সতর্ক করেছেন।তিনি জানিয়েছেন করোনার সঙ্গেই সকলকে থাকতে হবে। আগে যেমন ছিল কলেরা, যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়া।তাই অতিমারিকে সঙ্গে নিয়েই চলতে হবে। কাজে নামার আগে সরকারের দেওয়া সমস্ত নির্দেশ মেনে, নিজেদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করে তবেই যেন টলিপাড়া ময়দানে নামে।
আড়াই মাস অভিনয় বন্ধ।লকডাউনে পড়ে ফেলেছেন স্বপ্নময় চক্রবর্তীর ‘হলদে গোলাপ’।রবীন্দ্রনাথ, তারাশঙ্কর, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর অবসরের দোসর। তবে লকডাউনে নাটক লিখেছেন নিজের নাট্যগোষ্ঠী ‘শ্রুতি রঙ্গম’-এর জন্য, নাম ‘সকাল তিনটে’। ভোর তিনটে নয় কেন? প্রশ্ন করতেই পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাসিমাখা জবাব, “নাটকের প্রধান চরিত্র উমার জীবনে তিনটে সকাল বা অধ্যায়।” তাই উমার সকাল না দিয়ে নাম রেখেছেন সকাল তিনটে। পুজোর আগে নাটক নিয়ে ভাবনা চিন্তা করবেন বলে জানালেন তিনি।


সাবিত্রীর মতো এখুনি যেমন শুটিং ফ্লোরে যেতে চাইছেন না অভিনেত্রী মাধবী মুখোপাধ্যায়।বললেন, “এখনও কেউ ডাকেনি আমায়।তবে একটা কথা বলি, শুধু টেলিপাড়া বলে নয়, টালিগঞ্জে এমন অনেক টেকনিশিয়ান, অভিনেতা-অভিনেত্রী আছেন যাঁদের কাজ না করলে চলবে না।তাঁরা কাজে যাবেন।আর যাঁদের ততটাও দুরবস্থা নেই তাঁরা অপেক্ষা করবেন। এখুনি হয়ত কাজে যোগ দেবেন না তাঁরা।’

"আমি তো সুস্থই। ফলে, অসুবিধে কোথায়?”


তিনিও কি অপেক্ষা করবেন? খুব সহজ ভাবেই মাধবীর উত্তর, “আস্তে আস্তে শুরু হোক কাজ।আপাতত শুটিংয়ের চিন্তা একটুও নেই মাথায়।”
অতিমারি জন্য এই ছুটি তাহলে উপভোগ-ই করছেন সত্যজিৎ রায়ের নায়িকা? এ বার গলার স্বরে হাসির ছোঁয়া, জানালেন ছ’বছর বয়স থেকে অভিনয় করছেন। এ ভাবে এক টানা ঘরে বসার সুযোগই মেলেনি। তাই এই সুযোগে মন দিয়ে রাঁধছেন। কাজের লোক আসছে না। তিনিই ঘর মুছছেন, কাপড় কাচছেন, বাসন মাজছে্ন।সংসারী মাধবীর টেলিপাড়ায় পৌছতে এখনও বেশ কিছু সময় লাগবে।


যদিও সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের কথার সুর শোনা গেল আরেক প্রবীণ অভিনেতা সুমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গলাতে। তিনিও ডাক পেলে শুটিংয়ে যেতে আগ্রহী। লকডাউনের আগে ‘কোরাপাখি’ ধারাবাহিকে কাজ করছিলেন অভিনেতা। তাহলে ১০ জুন বা তার পরে যে কোনও দিন ডাক আসতেই পারে? এ প্রসঙ্গে সুমন্তের বক্তব্য, চিত্রনাট্য বদল হবে কি না, হলে তাঁর ভূমিকায় কতটা পরিবর্তন হবে কিছুই জানেন না। কী মুচলেকা দিয়ে কাজে আসতে হবে, সেটাও পরিষ্কার করে জানা নেই। শুধুই প্রাথমিক কথাবার্তা হয়েছে। ফলে, এই মুহূর্তে এ সব নিয়ে বিস্তারিত কিছুই বলা সম্ভব হচ্ছে না তাঁর পক্ষে।


আরও পড়ুন- আসছে কমিউনিটি কিচেন, বাইরের প্রবেশ নিষেধ, টলিপাড়া যেন দুর্গ!


তবে সাবিত্রীর মতো তাঁরও যুক্তি, “আমি অভিনেতা। এটাই আমার পেশা। এর বাইরে কিচ্ছু জানা নেই। রোজগার করে খেতে হবে তো! ফলে, আমি সুস্থ আছি যখন অবশ্যই কাজ করব।”

সুমন্তের কথায়, যাঁরা চাইবেন না তাঁরা দু’দিন অপেক্ষা করতে পারবেন। তবে তিনি অপেক্ষার পক্ষপাতী নন।
আপাতত ১০ জুন কাজে যোগ দেওয়া নিয়ে ভাগাভাগি টালিগঞ্জের প্রবীণ ব্যাটেলিয়ান। দুই পক্ষের যুক্তিই অকাট্য। দু’তরফই তাই পুরো বিষয়টি ছেড়ে দিয়েছেন সময়ের হাতে।

Tollywood Lockdown coronavirus Sabitri Chatterjee Paran Bandyopadhyay

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

Best Value
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।