Advertisement
০৯ জানুয়ারি ২০২৫
Bengal’s Baul song

একই মঞ্চে স্যাক্সোফোনের সঙ্গে বাজল একতারা, খমক! পুরুলিয়ার মাটিতে যেন মিলন হল তিন সমুদ্রের

শুধু বাউল গান নয়। এই অনুষ্ঠানে বিদেশি বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে একই মঞ্চে উঠে এল ঝুমুর গান ও সাঁওতালি গান।

The Three Seas band amalgamates Jazz music with Bengal’s Baul song

অস্ট্রেলিয়ার গানের সঙ্গে সঙ্গত বাংলার বাউলের একতারার, সাক্ষী থাকল পুরুলিয়া। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:০১
Share: Save:

এক দিকে বাংলার মাটির গান। অন্য দিকে পশ্চিমা স্যাক্সোফোন। সুরের ভাষায় মিলে গেল দুই সংস্কৃতি। সুদূর অস্ট্রেলিয়ার যন্ত্রানুসঙ্গের সঙ্গে মিশে গেল মেঠো সুরের বাউল গান ও খমকের মন মাতানো সুর। সাক্ষী থাকল পুরুলিয়ার মানুষ। আয়োজক, 'রঞ্জিত ঝর্ণা কাঁসাই ইকো ফাউন্ডেশন’ নামের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

ব্যান্ডের নাম ‘দ্য থ্রি সিজ়’। একাধিক সংস্কৃতিকে এক সুতোয় বেঁধেছেন অস্ট্রেলিয় সঙ্গীত পরিচালক ও স্যাক্সোফোন বাদক ম্যাট কিগান। ব্যান্ডের উদ্যোক্তা তিনিই। ২০০৯ সালে নতুন সুরের খোঁজে ভারত এসেছিলেন। সুরেলা ভ্রমণে মনের মতো শব্দের হদিশ পেয়েছিলেন শান্তিনিকেতনে। সেখান থেকেই গড়ে তুললেন এই ব্যান্ড। পাশ্চাত্য সঙ্গীতের সঙ্গে মিলিয়েছিলেন রাজু দাস বাউলের গান।

বিশ্ব মঞ্চে জায়গা করে নিয়েছে পঞ্জাবি লোকসঙ্গীত। রক, পপ-এর সঙ্গে এক মঞ্চে স্থান পাচ্ছে পঞ্জাবি সঙ্গীত। কিন্তু অক্ষত থাকছে তাঁর নিজস্বতা। বাংলার মাটিতেও রয়েছে একাধিক লোক সঙ্গীত। বিশ্বের সঙ্গে সেই সংস্কৃতির পরিচয় করানোর দায়িত্ব নিয়েছে ‘দ্য থ্রি সিজ়’ ব্যান্ড এবং পুরুলিয়ার 'বনপুলক'।

The Three Seas band amalgamates Jazz music with Bengal’s Baul song

বিশ্বের সঙ্গে লোক সঙ্গীতের সংস্কৃতির পরিচয় করানোর দায়িত্ব নিয়েছে ‘দ্য থ্রি সিজ়’ ব্যান্ড এবং পুরুলিয়ার 'বনপুলক'। —নিজস্ব চিত্র।

শুধু বাউল গান নয়। এই অনুষ্ঠানে বিদেশি বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে একই মঞ্চে উঠে এল ঝুমুর গান ও সাঁওতালি গান। উল্লিখিত সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা রাজর্ষি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সুরের কোনও ভাষা নেই। অস্ট্রেলিয়ার ‘জ্যাজ়’ শিল্পীরা এসে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন ঝুমুর গানের শিল্পীদের দিকে। সারা বিশ্বে যখন শুধুই নৃশংসতা, হিংসা ও দুঃসংবাদ, সেই সময়ে এমন দৃশ্য সত্যিই বিরল। গানের মাধ্যমে এক হয়ে গেল ভিন্ন সংস্কৃতি।”

বাংলার সংস্কৃতিকে বিশ্বমঞ্চে পৌঁছে দিতেই এই উদ্যোগ বলে জানান রাজর্ষি। তাঁর কথায়, “পঞ্জাবিরা পেরেছেন। ভাংড়াকে কানাডাতে নিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। একই ভাবে বাংলার মাটির গানকেও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, গান হারিয়ে যাচ্ছে। হয়তো নির্দিষ্ট শ্রোতা কিছু রয়েছেন। এমন শ্রোতা রয়েছেন, যাঁরা কেবল সুবিনয় রায়ের রবীন্দ্রসঙ্গীতই শোনেন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সঙ্গীতায়োজনেও বদল প্রয়োজন। কিন্তু গানের আসল অর্থ যাতে অক্ষত থাকে সেটা দেখা উচিত। সেই এক চেষ্টাই করা হয়েছে পাশ্চাত্য সঙ্গীতের সঙ্গে লোকগানের মেলবন্ধন ঘটিয়ে।”

‘দ্য থ্রি সিজ়’ ব্যান্ডে রয়েছেন গৌরব চট্টোপাধ্যায়ও। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, “আমাদের এই ব্যান্ডের বয়স ১৫ বছর। ম্যাট কিগানেরই পরিকল্পনা ছিল একসঙ্গে কিছু করার। ২০১৩-য় আমাদের প্রথম অ্যালবাম। ব্যান্ডের নামের মধ্যেই রয়েছে তিন সমুদ্রের কথা। তাই একাধিক সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটছে। আমরা বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠান করছি। পুরুলিয়ার অনু্ষ্ঠানে আমাদের ব্যান্ডের পাশাপাশি ছৌ নাচ, সাঁওতাল নাচ, ঝুমুর গান হয়েছে।” এই মঞ্চের অন্যতম আকর্ষণ ছিলেন ঝুমুর শিল্পী তথা নাচনি পোস্তোবালা দেবী। জানা যায়, তিনিই শেষ নাচনি এই সংস্কৃতিতে।

অন্য বিষয়গুলি:

Baul Song Bangla Band Jazz Musician
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy