প্রতিবাদে পথে নামলেন ঋতব্রত
ছাত্রসমাজ যে কোনও দেশের গর্ব। কারণ তাদের কণ্ঠেই ঘোষিত হয় আগামীর পদধ্বনি। কিন্তু সেই ছাত্রসমাজের উপরেই যখন নেমে আসে রাষ্ট্র-রাজনীতির খড়্গহস্ত, সেটাই কি তবে শেষের শুরু? দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে (জেএনইউ) রবিবার রাতে যে ভাবে ছাত্রদের উপরে নির্যাতন চালিয়েছে একদল মুখোশধারী দুষ্কৃতী, তার নিন্দায় সরব গোটা দেশ। প্রতিবাদ-প্রতিরোধ চলতে থাকবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের চার দেওয়ালের মধ্যে এই বিভীষিকা উদ্রেককারী ঘটনা তাড়া করছে টলিউডের নতুন প্রজন্মকেও।
শহরের বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডাকা সোমবারের প্রতিবাদ মিছিলে সমবেত হয়েছিলেন হাজার হাজার পড়ুয়া। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়, অনুষা বিশ্বনাথন, উজান গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখ। ক্ষোভ ফেটে পড়ল ঋতব্রতর কণ্ঠে, ‘‘আমার ধারণা আগামী দিনে এই অত্যাচার আরও বাড়বে। যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে বিজেপির ছাত্র সংগঠন নেই, সেখানেই ওরা এই হামলা চালাচ্ছে। যদিও ওরা কেউ ছাত্রই নয়, সেটা আলাদা কথা! তবে এই আগুন ক্যাম্পাস ছাড়িয়ে যতক্ষণ না মানুষের ঘরে গিয়ে পৌঁছচ্ছে, ততক্ষণ কিছু মানুষের হুঁশ হবে না।’’ এখনও প্রশ্ন ওঠে, কেন এমন ঘটনা যাদবপুর বা জেএনইউতে-ই শুধু হয়? ঋতব্রতর কথায়, ‘‘সাধারণ মানুষ এটাও বোঝে না, মিছিল করতেও পড়াশোনা লাগে। শুধু দেখে, যাদবপুরে মিছিল হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোও সেটা ভাঙিয়েই চলছে।’’
একই সুর ঋদ্ধি সেনের কণ্ঠেও। এই ঘটনার পরে ছাত্র-রাজনীতি থেকে কি মুখ ফেরাবেন অনেকেই? ‘‘সিএএ এবং এনআরসির বিরুদ্ধে যে বড় বড় মিছিল হয়েছে, সেখানে পুরোভাগে ছিল ছাত্ররা। কোনও রাজনৈতিক রঙের ছত্রচ্ছায়ায় তা হয়নি। সেটাই সরকারের কাছে সবচেয়ে বড় ভয়ের জায়গা। তবে মানুষ হিসেবে এই পুরো ঘটনা থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকা অপরাধ। এখনও যাঁরা মুখ ফিরিয়ে আছেন, তাঁদের চোখে কি ঠুলি রয়েছে?’’ প্রশ্ন ঋদ্ধির। সৌরসেনী মৈত্রের গলায়ও উৎকণ্ঠা, ‘‘ভায়োলেন্স সমর্থন করি না। পুরো ঘটনায় প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সকলেরই দায় রয়েছে।’’ প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের পারফর্মিং আর্টসের ছাত্রী মেঘলা দাশগুপ্তও প্রতিবাদে শামিল। ‘‘পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, বলার মতো কিছু নেই,’’ বললেন বিরসা-বিদীপ্তার কন্যা মেঘলা।
‘‘কলেজেও নিজেকে আর নিরাপদ মনে হয় না। নতুন বছরের শুরুতেই এমন একটা ঘটনা, এর চেয়ে খারাপ আর কী হতে পারে? সারাক্ষণ রক্তারক্তির ছবি-খবর দেখতে দেখতে মনে হচ্ছে পরের মুহূর্তে কী হবে! প্রতিটা দিনই ভয়ে কাটে। ছাত্রদের এখন জোট বেঁধে প্রতিবাদ করার সময়। সেটাই আমরা করছি,’’ বললেন শ্রীকান্ত আচার্যের ছেলে পুরব। ‘জেনারেশন আমি’র অভিনেত্রী অনুষা বিশ্বনাথন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। তিনি বলছেন, ‘‘যে জায়গাটা আমাদের কাছে দ্বিতীয় বাড়ির মতো, সেখানে অকারণে হিংসার পরিবেশ তৈরি করা মানে তো নিজের বাড়িতে আঘাত করার শামিল।’’
ইয়ং ব্রিগেডের সঙ্গে এই ঘটনার নিন্দায় মুখর হয়েছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, আবীর চট্টোপাধ্যায়, মিমি চক্রবর্তী, নুসরত জাহান প্রমুখ। যতই আঘাত আসুক, প্রতিকূলতা তৈরি করার চেষ্টা হোক, সকলের মুখে এখন একটাই মন্ত্র, ‘‘এ দেশের বুকে আঠারো আসুক নেমে...’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy