তথাগত মুখোপাধ্যায়
এই মুহূর্তে ভ্যাক্সিন নিয়ে প্রচুর বিভ্রান্তি। যদিও আমি ভ্যাক্সিনকে টিকা বলতে রাজি নই। কারণ, দুটোর মধ্যে বিস্তর পার্থক্য। সাধারণত নবজাতককে টিকা দেওয়া হয়। ভ্যাক্সিন এক ধরনের ওষুধ। যা বড়রা নিয়ে থাকেন। তাছাড়া, এখনও করোনার টিকা আবিষ্কৃত হয়নি। ফিরে যাই মূল বক্তব্যে। আমাদের রাজ্যে বেশ কিছু প্রবীণ নাগরিক ভ্যাক্সিন নিয়েও করোনায় আক্রান্ত। যেমন, হরনাথ চক্রবর্তী, কৌশিক সেন। অনেকের মৃত্যুও হয়েছে। সদ্য এই তালিকায় যুক্ত হয়েছেন তরুণ কুমারের জামাই পান্নালাল বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘটনাগুলো সাধারণের মনে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, আদৌ ভ্যাক্সিন নেওয়া উচিত? এছাড়া, ২-৩ ধরনের ভ্যাক্সিন বাজারে আসায় সেই নিয়েও আমরা ফাঁপড়ে পড়েছি। কোনটা নেব? তার থেকেও বড় প্রশ্ন, কোনটা নিলে আমাদের করোনা হবে না? যেহেতু অনেকেই ভ্যাক্সিন নিয়ে সংক্রমণে আক্রান্ত তাই এই প্রশ্নের জন্ম।
পাশাপাশি, অন্যান্য দেশে কী ভাবে ভ্যাক্সিন দেওয়া হচ্ছে সে বিষয়ে আমাদের কোনও স্পষ্ট ধারণা নেই। ফলে, কেউ কো-ভ্যাক্সিনকে ভাল বললে অন্য জন হয়তো স্পুটনিক ভ্যাক্সিনের নাম বলছেন। এ দিকে বেশির ভাগের মতে যেটি ভাল সেটি বাজারে নেই। এটা দ্বিতীয় সমস্যা।
তৃতীয় এবং সবচেয়ে বড় সমস্যা কেন্দ্রীয় সরকারের চূড়ান্ত গাফিলতি। কোভিড-বিধি, ভ্যাক্সিন নিয়ে মুখই খুলছে না কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, প্রতিটি রাজ্য তার নিজের মতো করে চলবে। ফলাফল কী? উত্তর প্রদেশে মাটির নীচ থেকে অসংখ্য করোনা মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। গঙ্গায় দেহ ভাসছে।
এই ছবি কিন্তু প্রথম সংক্রমণের সময় ছিল না। কারণ, তখন কেন্দ্র একটি নির্দিষ্ট কোভিড-বিধি চালু করেছিল। সেটা সমস্ত রাজ্য মেনে চলছিল। যেটা মেনে আমরা অতিমারিকে অনেকটাই ঠেকাতে পেরেছিলাম। এ বারে কেন্দ্র যেন নীরব দর্শক। একই সঙ্গে গলদ রয়েছে বণ্টন প্রণালীতেও। যার জন্য বাংলায় এখনও যথেষ্ট পরিমাণে ভ্যাক্সিন এসে পৌঁছোয়নি। কেন্দ্র না দিলে রাজ্য সরকার কোথা থেকে ভ্যাক্সিন দেবে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অক্সিজেন সিলিন্ডার চেয়ে চিঠির পর চিঠি লিখছেন কেন্দ্রকে। তার পরেও সিলিন্ডারের দেখা নেই। একই ঘটনা ভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রেও।
এই জায়গা থেকে প্রশ্ন জাগছে, ‘সোনার বাংলা’ গড়ার সুযোগ না পেয়েই কি কেন্দ্রের এই নীরবতা? আমি সেটা মানতে নারাজ। কারণ, সবচেয়ে খারাপ অবস্থা মহারাষ্ট্র, মুম্বইয়ের। তার পরে দিল্লির। মুম্বইয়ে এক মাত্র সোনু সুদ আছেন। দিল্লিতে আপ সরকার থাকলেও ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে কেন্দ্র। আবার বিজেপি শাসিত যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে শ’য়ে শ’য়ে মাটি চাপা দেওয়া লাশ মিলেছে। সেই তুলনায় বাংলার পরিস্থিতি অনেক ভাল। কারণ, এখানে সৃজিত মুখোপাধ্যায় সহ সমস্ত টলিউড এবং রেড ভলান্টিয়ার্সেরা রয়েছেন। এঁরা একেক জন সোনু সুদ। আমি বলব এটা বিজেপি-র সার্বিক ব্যর্থতা।
বরং, ভ্যাক্সিনের বদলে নারদা কেলেঙ্কারির জন্য ৪ প্রথম সারির নেতা-মন্ত্রীকে গ্রেফতার প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, কেন্দ্র কি শোধ নিচ্ছে? দোষীরা নিশ্চয়ই শাস্তি পাবেন। তা বলে অতিমারির সময়! এমন ৪ মন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে যাঁরা নিজেদের কেন্দ্রে প্রচণ্ড জনপ্রিয়। এবং দুর্দিনে ঝাঁপিয়ে পড়ে কাজ করেন। হাথরস কাণ্ডে যোগী সরকার পুলিশদের আটকে দিয়েছিলেন অতিমারির দোহাই দিয়ে। তাঁরা ভিন রাজ্য থেকে এসেছিলেন বলে।
একই ঘটনা এ বার কেন বাংলার সঙ্গে ঘটছে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy