বাঁ দিকে দেবলীনা এবং ডান দিকে জ্যাকলিন।
অত্যাশ্চর্য ব্যাপার। নতুন রূপে ফিরছে 'গেন্দা ফুল'। এক ফ্রেমে এ বার জ্যাকলিন, দেবলীনা এবং রতন কাহার। চমকের এখানেই শেষ নয়, গেন্দা ফুলের স্রষ্টা রতন কাহার এই নতুন রূপে শুধু গানই গাননি, ৮৫ বছরেও পাল্লা দিয়ে নেচেছেন দেবলীনা-জ্যাকলিনের সঙ্গে। বাদশার র্যাপের সঙ্গেই মিশে গিয়েছে বাংলার লোকগান, ছৌ নাচ। আর এই গোটা ব্যাপারটিকেই সত্যি করেছেন বিক্রম ঘোষ এবং পরিচালক অরিন্দম শীল।
সোনি মিউজিকের তরফে বিক্রম ঘোষের কাছে লকডাউন পরবর্তী সময়ে একটি অফার আসে। বলা হয় 'গেন্দা ফুল'-এর একটি তবলা বিট মিক্স করতে হবে। বিক্রম প্রথমটায় অবাক হয়ে যান। তাঁর কথায়, "ডিজে মিক্স হয় শুনেছি, রিমিক্স শুনেছি। কিন্তু তবলা বিট মিক্স!" তবে প্রস্তাব আসতেই তিনি ঠিক করে ফেলেন, এ তবলা মিক্স যদি করতেই হয়, তবে রতন কাহারকে দিয়েই গাওয়াবেন তিনি। সোনির কাছে সে প্রস্তাব রাখতেই প্রথমটায় খানিক ইতস্তত করেছিলেন তারা। আদৌ রতন কাহার রাজি হবেন কিনা, তা নিয়েও ছিলেন সন্দিহান। হাজার হোক, মাস কয়েক আগে মুক্তি পাওয়া বাদশা-জ্যাকলিনের রিমেক নিয়ে কম জলঘোলা তো হয়নি।
রতন কাহারকে রাজি করার দায়িত্বটা বিক্রমই নিজের কাঁধে নিয়ে নেন। বিক্রমের কথায়, "ওঁর সঙ্গে কথা বলি। পুরো ব্যাপারটা জানাই। উনি রাজি হয়ে যান।" এর পরেই জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু। শিউড়ি থেকে কলকাতা এলেন ৮৫তেও তরুণ ওই গায়ক। বিক্রম ঘোষের বেহালার বাড়িতেই হল শুটিং। "গান তো গাইলেনই। একই সঙ্গে মিউজিক ভিডিয়োর জন্য শুটিংও করলেন। নাচলেনও। এই বয়সেও মারাত্মক এনার্জি লেভেল। অবাক হতে হয়", বলছিলেন বিক্রম ঘোষ।
রতন কাহারকে রাজি করার দায়িত্বটা বিক্রমই নিজের কাঁধে নিয়ে নেন।
বাদশার রিমিক্সে ইউটিউব ডেসক্রিপশনে প্রথমে উল্লেখ করা হয়নি রতন কাহারের নাম। সে নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছিল বাঙালি। বাদশার বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন নেটাগরিকদের একটা বড় অংশ।সোশ্যাল মিডিয়ায় রতন কাহার সম্পর্কে বাদশা বলেছিলেন, “আমি ওই গান রচয়িতার নাম খোঁজার চেষ্টা করেছি কিন্তু খুঁজে পাইনি। ২৬ মার্চ আমি জেনেছি, রতন কাহারের নাম। আমি জানি উনি একজন মহান শিল্পী। শুনেছি ওঁর অর্থনৈতিক অবস্থাও ভাল নয়। আমি ওঁকে সম্মান দিয়ে সাহায্য করতে চাই।’’ যদিও পরে রতন কাহারকে অর্থসাহায্য করেছিলেন ওই র্যাপার।
এত সব বিতর্কের মধ্যেও, বাদশা আছেন জেনেও কেন গান গাইতে রাজি হলেন রতন কাহার? বিক্রমের কথায়, "আসলে আমার মনে হয়, নতুন কিছুর প্রতি আমাদের সবারই একটা আকর্ষণ থাকে। এই তবলা বিট মিক্সে একটা বড় অংশ জুড়ে উনি। যেটা আগের বার হয়নি। হয়তো সে জন্যই। টেকের পর টেক নিয়ে গিয়েছি। উনিও ক্লান্ত হননি।"
বাদশার র্যাপের সঙ্গেই মিশে গিয়েছে বাংলার লোকগান, ছৌ নাচ
অরিজিনাল গানে কোনও অন্তরা ছিল না। এই নতুন ভিডিয়োতে যোগ করা হয়েছে অন্তরাও। সেই অন্তরা লিখেছেন সুগত গুহ। গেয়েছেন ইমন। নতুন মিউজিক ভিডিয়োতে জ্যাকলিনের মতোই লাল পেড়ে শাড়িতে দেখা যাচ্ছে দেবলীনা কুমারকে। কোমরে উঁকি দিচ্ছে প্রজাপতি ট্যাটু। দেবলীনার নাচের প্রতি অনুরাগ 'রঙ্গবতী'তেই দেখেছিলেন দর্শকেরা। তাঁর কথায়, "অফার আসতেই আমি রাজি হয়ে যাই। নাচতে খুব ভালবাসি। আর এত বিক্রমদা অরিন্দমদা রতন কাহারের মতো মানুষদের সঙ্গে কাজের সুযোগ..."।
আরও পড়ুন: মুম্বই পুলিশ সমন পাঠাল অনুরাগ কশ্যপকে
সোনি বলেছিল, বাদশার মিউজিক ভিডিয়োর সঙ্গেই মিক্স করতে। কিন্তু কাজ শেষ হবার পরেই সোনি ক্লিন বোল্ড। "আমাদের মিউজিক ভিডিয়ো দেখার পর, তার কালার কারেকশন থেকে শুরু করে এডিটিং দেখে ওরা বলছে বিশ্বাসই হচ্ছে না এট আলাদা শুট করা",বলছিলেন অরিন্দম। বিক্রম জানালেন, সোনি নাকি বলেছে, বাংলার গন্ধ মাখা ভিডিয়োটিই মুখ্য করতে। ফলে ব্যাপার দাঁড়িয়েছে, গোটা ভিডিয়োতেই বাদশা-জ্যাকলিন ১০ শতাংশ। আর বাকি ৯০ শতাংশ জুড়ে রতন কাহারের গান-নাচ, বিক্রম ঘোষের তবলা, ইমনের কণ্ঠ, সুগত'র লেখা, দেবলীনার মোহময়ী অবতার, মধুরার ক্যামেরা এবং অরিন্দম শীলের পরিচালনা।
আর মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা। পুজোর আগেই অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই আসতে চলেছে 'গেন্দা ফুল'-এর তবলা বিট মিক্স।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy