সুশান্ত। ফাইল চিত্র।
‘যন্ত্রণাহীন মৃত্যু’, ‘স্কিৎজ়োফ্রেনিয়া’, ‘মানসিক বৈকল্য’। এই শব্দগুলিই পাওয়া গিয়েছে সুশান্ত সিংহ রাজপুতের কম্পিউটার ও ফোনের ‘সার্চ হিস্ট্রি’ ঘেঁটে। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন মুম্বইয়ের পুলিশ কমিশনার পরমবীর সিংহ। তিনি আরও জানান, ২০১৯-এর জানুয়ারি থেকে এ বছর জুন পর্যন্ত সুশান্তের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। বিভিন্ন জায়গা থেকে এই সময়ে সাড়ে চোদ্দো কোটি টাকা জমা পড়েছিল সুশান্তের অ্যাকাউন্টে। তা ছাড়া, একটি চার কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজ়িটও ছিল অভিনেতার।
সুশান্তের বাবা কে কে সিংহের অবশ্য দাবি, তাঁর ছেলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ১৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন সুশান্তের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী। মুম্বই পুলিশের দাবি, তাদের তদন্তে এই অভিযোগের কোনও প্রমাণ মেলেনি। আজ কে কে সিংহ আরও দাবি করেছেন যে, সুশান্তের কোনও বড় বিপদ হতে পারে এই আশঙ্কা প্রকাশ করে গত ফেব্রুয়ারিতেই তিনি বান্দ্রা থানার পুলিশকে সতর্ক করেছিলেন। প্রায় দেড় মাস ধরে মুম্বই পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা দেখার পরেই পটনা পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।
একটি সংবাদ সংস্থাকে পাঠানো ভিডিয়ো-বার্তায় কে কে সিংহ বলেছেন, ‘‘২৫ ফেব্রুয়ারি আমি বান্দ্রা পুলিশকে জানিয়েছিলাম যে, আমার ছেলেকে নিয়ে খুব চিন্তায় আছি। ওর কোনও বড় বিপদ হতে পারে। ১৪ জুন সুশান্তের মৃত্যুর পরে মুম্বই পুলিশকে দেওয়া বয়ানে আমি কয়েক জনের নামে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। কিন্তু দেখলাম, ৪০ দিন ধরে কিছুই হল না। বাধ্য হয়ে পটনা পুলিশের কাছে নতুন করে এফআইআর দায়ের করি। দেখলাম, তারা খুবই তৎপর ভাবে তদন্ত চালাচ্ছে। তবে অভিযুক্ত এখনও পালিয়ে বেড়াচ্ছে। পটনা পুলিশকে (মুম্বই পুলিশের) সাহায্য করা উচিত।’’ এই দুঃসময়ে তাঁদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ও আর এক মন্ত্রী সঞ্জয় ঝা-কে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সুশান্তের বাবা।
আরও পড়ুন: রিয়া আত্মগোপন করেননি, মুখ খুললেন তাঁর কৌঁসুলি
রিয়া অবশ্য আজও বিহার পুলিশের সামনে আসেননি। বিহার পুলিশের ডিজি গুপ্তেশ্বর পাণ্ডে জানিয়েছেন, এ বার রিয়ার নামে লুকআউট নোটিস জারির কথা ভাবছেন তাঁরা। সাংবাদিকদের ডিজিপি বলেন, ‘‘তদন্তের স্বার্থে রিয়া-সহ অভিযুক্তদের নামে লুকআউট নোটিস জারি করতে পারে পটনা পুলিশ। যাতে তাঁরা দেশ ছেড়ে পালাতে না-পারেন। বোঝাই যাচ্ছে মুম্বইয়ে তাঁদের ‘সোর্স’ রয়েছে, এবং এই ‘সোর্স’রাই অভিযুক্তদের সাহায্য করছেন।’’
রিয়ার আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডে আজ জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেল আত্মগোপন করেননি, তিনি নিরুদ্দেশও নন। মুম্বই পুলিশ তাঁকে চার বার থানায় ডেকে পাঠায়। প্রতি বার হাজিরা দিয়েছেন রিয়া। এত দিন পরে পটনায় করা এফআইআরের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে আপিল করেছেন তাঁরা। বিষয়টি বিচারাধীন। ফলে এখন আর এ নিয়ে মুখ খুলছেন না রিয়া। বিহার পুলিশ রিয়াকে সমনও পাঠায়নি, দাবি আইনজীবীর।
২৭ জুলাই থেকে মুম্বইয়ে ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে বিহার পুলিশের চার সদস্যের দল। আজ দলটির দায়িত্ব নিতে বিহার পুলিশের সদর দফতর থেকে পটনা সিটি পুলিশের সুপার বিনয় তিওয়ারিকে পাঠানো হয় মুম্বইয়ে। বিকেল চারটের সময়ে মুম্বই পৌঁছন বিনয়। আসামাত্র এই আইপিএস অফিসারকে কোয়রান্টিনে পাঠিয়েছেন মুম্বই পুরসভা কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, কোভিড-১৯ প্রোটোকল মেনেই এই পদক্ষেপ। আট দিন আগে শহরে পা দেওয়া বাকি চার অফিসারের ক্ষেত্রে কেন এই প্রোটোকল মানা হয়নি, তার অবশ্য কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, পটনা থেকে এ বার পাঠানো হবে এক মহিলা আইপিএসকেও। কারণ রিয়া সামনে এলে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে এক জন মহিলা অফিসারকে লাগতে পারে।
আজ পটনা পুলিশের দলটি মালাওয়ানি থানায় গিয়ে সুশান্তের প্রাক্তন ম্যানেজার দিশা সালিয়ানের মৃত্যু-তদন্তের নথিপত্র খুঁটিয়ে দেখে। সুশান্তের মৃত্যুর মাত্র কয়েক দিন আগে ৮ জুন মালাডের একটি বহুতল থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন তিনি। বিহার পুলিশ জানিয়েছিল, দিশার মৃত্যু নিয়েও তারা তদন্ত করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy