এনসিবি-র দফতরে আনা হচ্ছে সুশান্ত সিংহ রাজপুতের ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডাকে। শুক্রবার মুম্বইয়ে। ছবি: পিটিআই
সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যু ও বলিউডে মাদক যোগের তদন্তে নেমে আজ রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীর ভাই শৌভিক ও সুশান্তের ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডাকে। সকালে রিয়ার বাড়িতে হানা দিয়েছিল নারকোটিক্স কন্ট্রোল বুরোর (এনসিবি) একটি দল। স্যামুয়েলের বাড়িতেও তল্লাশি চালায় তারা। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শৌভিক ও স্যামুয়েলকে নিয়ে যাওয়া হয় এনসিবি-র দফতরে। প্রথমে আটক করা হয়েছিল তাঁদের, পরে গ্রেফতার করা হয় দু’জনকে।
রিয়ার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের মাধ্যমেই সুশান্তের মৃত্যু তদন্তের মধ্যে মাদক যোগের বিষয়টি সামনে আসে। এই সংক্রান্ত তথ্য ইডির তরফে পাঠানো হয় সিবিআই ও এনসিবি-র কাছে। এর পরে বলিউডে ও মুম্বইয়ের অভিজাত মহলে মাদক যোগের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেন এনসিবি-র গোয়েন্দারা। মাদক চক্র খুঁজতে গিয়ে এনসিবি ইতিমধ্যেই জ়ায়িদ ভিলাত্রা ও আব্দুল বাসিত পারিহার নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। কাইজান ইব্রাহিম নামে আর এক ব্যক্তিকেও গত কাল থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন গোয়েন্দারা।
এনসিবি আজ মুম্বইয়ের আদালতে দাবি করে, সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে তদন্তের মধ্যে যে মাদক যোগের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে, সে ব্যাপারে পারিহারের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। কোর্টে এনসিবি বলেছে, পারিহার তাদের জানিয়েছে, শৌভিকের নির্দেশেই ভিলাত্রা ও কাইজানের থেকে মাদক কিনত সে। পারিহারের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, সমাজের উঁচুতলায় মাদক সরবরাহের যে সিন্ডিকেট, পারিহার তারই অংশ। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পারিহারকে এনসিবি-র হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত।
আরও পড়ুন: সুশান্তের মনে কী ছিল, জানালেন তাঁর ডাক্তারেরা
আরও পড়ুন: ছেঁড়া হচ্ছে ছবি, মাখানো হচ্ছে কালি, কঙ্গনার মুম্বই প্রবেশ নিয়ে উত্তাল নগরী
আরও পড়ুন: মাদক পাচার মামলায় গ্রেফতার কন্নড় অভিনেত্রী রাগিনী দ্বিবেদী
আদালতে অভিনেত্রীর ভাইয়ের প্রসঙ্গ তোলার আগেই অবশ্য ভোর সাড়ে ছ’টা নাগাদ এনসিবি-র গোয়েন্দারা রিয়া ও শৌভিকদের সান্তা ক্রুজ ও আন্ধেরির বাড়িতে পৌঁছন। রিয়ার সঙ্গেই থাকেন শৌভিক। এনসিবি-র আধিকারিকেরা পরে জানান, ওই বাড়ি থেকে বেশ কিছু নথি সংগ্রহ করেছেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, শৌভিকের ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
সুশান্তের মৃত্যু তদন্তের মধ্যেই বলিউডে মাদক যোগের বিষয়টি যখন সামনে নিয়ে আসছে এনসিবি, তখনই বলিউডের এক অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতের সঙ্গে মহারাষ্ট্র সরকার তথা শাসক দল শিবসেনার চাপান-উতোর চরমে পৌঁছেছে। সুশান্তের মৃত্যুর পরেই মহারাষ্ট্র পুলিশের সমালোচনা করেছিলেন কঙ্গনা। এর পরেই শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত বলেন, কঙ্গনার মুম্বইয়ে আসার প্রয়োজন নেই। হিমাচল প্রদেশ থেকে টুইটারে জবাব দেন কঙ্গনা। প্রশ্ন তোলেন, এই সব হুমকির মধ্য দিয়ে মুম্বইকে কেন পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মতো করে তোলা হচ্ছে। অভিনেত্রী পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, ৯ সেপ্টেম্বর তিনি মুম্বইয়ে যাবেন, কারও ক্ষমতা থাকলে যেন আটকায়। এই বিতর্কে শরিক হয়েছেন মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, এনসিপি নেতা অনিল দেশমুখও। তিনি বলেছেন, মুম্বইকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সঙ্গে তুলনা করা কিংবা শাসক জোটকে তালিবান আখ্যা দিয়ে অভিনেত্রী মুম্বইবাসীর মনে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছেন। কঙ্গনা পুলিশের বিরুদ্ধে যে সব কথা বলছেন, তা-ও মেনে নেওয়া যায় না। দেশমুখের মন্তব্য, ‘‘যদি কেউ মহারাষ্ট্রে বসবাস করতে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন, তা হলে এখানে থাকার তাঁর কোনও অধিকার নেই।’’ বিভিন্ন বিষয়ে নরেন্দ্র মোদীর সমর্থক কঙ্গনার পাশে অবশ্য দাঁড়ায়নি বিজেপিও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy