এনসিবি দফতরের বাইরে রিয়া চক্রবর্তী। রবিবার মুম্বইয়ে। ছবি: পিটিআই
রিয়া চক্রবর্তী গ্রেফতার হওয়ার জন্য প্রস্তুত— নারকোটিক্স কন্ট্রোল বুরোর (এনসিবি) জিজ্ঞাসাবাদের মুখেই আজ এই মন্তব্য করেছেন তাঁর আইনজীবী। মাদক চক্রে যোগের অভিযোগ নিয়ে অভিনেত্রীকে আজ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছিল এনসিবি। প্রায় ছ’ঘণ্টা ধরে এনসিবি-র গোয়েন্দাদের প্রশ্নের মোকাবিলা করতে হয়েছে রিয়াকে। আগামিকাল আবার তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে।
সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু তদন্তে মাদক যোগের বিষয়টি রিয়ার হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা থেকেই প্রথম সামনে আসে। ইডি-র তদন্তকারীদের বক্তব্য ছিল, রিয়ার মোবাইল থেকে মিরান্ডা সুসি নামে কারও সঙ্গে মাদক কেনা নিয়ে কথাবার্তা হয়েছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, রিয়ার মোবাইলে সেভ করা নাম, মিরান্ডা সুসি আসলে সুশান্তের হাউস ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডা। গত শুক্রবারই মাদক যোগে যাঁকে গ্রেফতার করেছে এনসিবি। রিয়ার ভাই শৌভিককে গ্রেফতারের পরে এনসিবি-র গোয়েন্দারা দাবি করেছেন, মাদক চক্রে তাঁর সঙ্গে যোগ রয়েছে, এমন অনেকের নামই করেছেন অভিনেত্রীর ভাই। রিয়ার সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে তাঁকে জেরা করার প্রয়োজন রয়েছে বলেও গত কাল গোয়েন্দারা জানিয়েছেন।
এই প্রেক্ষাপটে আজ সকালেই এনসিবি রিয়াকে তাঁদের মুম্বইয়ের দফতরে তলব করে। বিকেলে মাস্ক পরিহিত রিয়া এনসিবি-র দফতরে পৌঁছলে সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। ধাক্কাধাক্কির মধ্যেই পথ করে অভিনেত্রী পৌঁছন তদন্তকারীদের মুখোমুখি হতে। এনসিবি দফতরের বাইরে করোনা আবহে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হয়নি এবং রিয়াকে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তপসী পান্নু, স্বরা ভাস্করের মতো বলিউডের অভিনেত্রীরা এ ব্যাপারে সরব হয়েছেন। এই ঘটনায় সংবাদ মাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মাও।
আরও পড়ুন: সুশান্তের পার্টি-তে ড্রাগ নিয়ে আসা বলিস্টারদের নাম ফাঁস স্যামুয়েল-দীপেশের!
তবে গত কাল রিয়ার বাবা ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তী ও আজ রিয়ার আইনজীবী মানেশিন্ডের বক্তব্যে স্পষ্ট, রিয়ার গ্রেফতারির আশঙ্কা করছেন তাঁরা। শৌভিকের গ্রেফতারির পরে ক্ষোভ জানিয়ে ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তী বলেছিলেন, ‘‘আমার ছেলেকে গ্রেফতার করার জন্য ভারতকে অভিনন্দন। আমি নিশ্চিত, এর পরেই আমার মেয়ের পালা...।’’ আজ অভিনেত্রীর আইনজীবী বলেন, ‘‘রিয়া চক্রবর্তী গ্রেফতারির জন্য প্রস্তুত হয়ে আছেন... যেন তেন প্রকারে কাউকে অপরাধী করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। যদি কাউকে ভালবাসা অপরাধ হয়ে থাকে, তার মাসুল উনি দেবেন।’’ মানেশিন্ডের দাবি, রিয়া নির্দোষ। বিহার পুলিশ থেকে শুরু করে সিবিআই, ইডি কিংবা এনসিবি— এত তদন্তের মধ্যেও আদালতে আগাম জামিনের জন্য আবেদন করেননি তিনি।
বিকেলে এনসিবি দফতরে রিয়াকে যখন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তখনই মুম্বইয়ের ডিআরডিও গেস্ট হাউসে সিবিআই তদন্তকারীদের মুখোমুখি হন সুশান্তের দিদি মিতু সিংহ। আজই সুশান্তের বিজনেস ম্যানেজার শ্রুতি মোদী, ট্যালেন্ট ম্যানেজার জয়া সাহা ও রাঁধুনি নীরজকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা।
সুশান্তের মৃত্যু, মাদক যোগের বিষয়টি নিয়ে তদন্ত যখন দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে, তখন অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতের মন্তব্য নিয়ে বিতর্কও জোরালো হয়ে উঠেছে। সুশান্তের মৃত্যুর পরে কঙ্গনা বলেছিলেন, মুম্বইয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তিনি। মুম্বই পুলিশেরও সমালোচনা করেছিলেন অভিনেত্রী। যা নিয়ে পাল্টা আক্রমণে যায় শিবসেনা। দলের নেতা সঞ্জয় রাউতের সঙ্গে চাপানউতোরে জড়িয়ে পড়েন কঙ্গনা। শিবসেনা নেতারা তাঁকে মুম্বইয়ে পা না রাখার জন্য হুঁশিয়ারি দিলে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন কঙ্গনাও। সঞ্জয় রাউত আজ দাবি করেছেন, মহারাষ্ট্রের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে অভিনেত্রীকে। তিনি বলেন, ‘‘উনি (কঙ্গনা) যদি মহারাষ্ট্রের কাছে ক্ষমা চান, তা হলে আমি তাঁকে মার্জনা করার কথা ভাবতে পারি।’’ এই পরিস্থিতিতে কঙ্গনাকে নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হিমাচল প্রদেশ সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy