জিজ্ঞাসাবাদের তলব পেয়ে নারকোটিক্স কন্ট্রোল বুরোর অফিসে পৌঁছলেন রিয়া চক্রবর্তী। সোমবার। ছবি: পিটিআই।
সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যু নিয়ে তদন্তে নতুন মোড়। সিবিআই, ইডি, নারকোটিক্স কন্ট্রোল বুরো (এনসিবি) যখন তদন্ত চালাচ্ছে, তখনই সুশান্তের বোন প্রিয়ঙ্কা সিংহের বিরুদ্ধে মুম্বই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেন অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী। তাঁর অভিযোগ, মৃত্যুর পাঁচ দিন আগে সুশান্তকে অবসাদ ও দুশ্চিন্তা কাটানোর বিভিন্ন ওষুধ সম্বলিত প্রেসক্রিপশন পাঠিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা। যা ছিল ভুয়ো, কারণ সুশান্তকে পরীক্ষা না করেই দিল্লির রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালের চিকিৎসক তরুণ কুমারের প্রেসক্রিপশনটি পাঠানো হয়। ওই ডাক্তারের বিরুদ্ধেও অভিযোগ জানিয়েছেন রিয়া।
আজ সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ এনসিবি দফতরে পৌঁছন রিয়া। সন্ধে ছ’টা পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন তিনি। দ্বিতীয় দিন টানা জিজ্ঞাসাবাদের পরে আগামিকাল ফের ডেকে পাঠানো হয়েছে রিয়াকে। সুশান্তের মৃত্যুর সঙ্গে মাদক যোগ সামনে আসায় রিয়াকে তাঁর ভাই শৌভিক, সুশান্তের হাউস ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডা, রাঁধুনি দীপেশ সবন্তের মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছেন এনসিবি-র গোয়েন্দারা। এঁদের আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের পরে এনসিবি-র ডেপুটি ডিজি মুথা অশোক জৈন আজ সাংবাদিকদের বলেন, তদন্তে সহযোগিতা করছেন রিয়া। তিনি জানান, সুশান্তের মৃত্যু ও মাদক যোগের বিষয়ে তদন্তের বিষয় তাঁরা আদালতে পেশ করবেন। এনসিবি এ ব্যাপারে আইন মেনে চলছে বলেই দাবি করেছেন তিনি। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর, গত দু’বছরে মুম্বই ও পুণেতে গ্রেফতার হওয়া মাদক পাচারকারীদের নানা তথ্য এবং মুম্বইয়ের রেভ পার্টিগুলি নিয়ে খোঁজ চলছে।
এনসিবি-র দ্বিতীয় দিনের জিজ্ঞাসাবাদের পরেই রিয়াকে গ্রেফতার করা হতে পারে, এমন জল্পনা ছিল। কিন্তু আজ আট ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পরে এনসিবি দফতর থেকে বেরিয়ে আসেন রিয়া। তার পরেই পৌঁছন বান্দ্রা থানায় প্রিয়ঙ্কার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে। পুলিশকে রিয়া জানিয়েছেন, ৮ জুন সকালে তিনি লক্ষ্য করেন, সুশান্ত একমনে মোবাইল দেখছেন। প্রশ্ন করলে সুশান্ত তাঁকে বোন প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে তাঁর আলোচনার কথা জানান। রিয়ার দাবি, তিনি দেখেছিলেন, প্রিয়ঙ্কা বেশ কয়েকটি ওষুধের তালিকা পাঠিয়েছেন সুশান্তকে। সেগুলি খাওয়ার জন্য বলেছেন। সুশান্তকে ওষুধগুলি খেতে বারণ করেন রিয়া। কারণ, বেশ কয়েকমাস ধরে অন্য ডাক্তারের কাছে অভিনেতার চিকিৎসা চলছিল। আর তাঁর মনের অবস্থাও ভাল ছিল না। সুশান্ত অবশ্য রিয়ার পরামর্শ মেনে নেননি। জানিয়েছিলেন, তাঁর বোন যা বলছেন, সেটা মেনেই এগোবেন।
আরও পড়ুন: সুশান্তের অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব ১৫ কোটি! আদৌ কি টাকা জমা পড়েছিল? পরিচালকের মন্তব্যে বাড়ছে ধন্দ
আরও পড়ুন: সুশান্তের ডেথ সার্টিফিকেট নিজে হাতে নেওয়াটা কি ভুল হল? সন্দীপ-সুশান্তের চ্যাট ফাঁস
পুলিশকে রিয়া বলেছেন, এখন জানা গিয়েছে, ওই দিনই প্রিয়ঙ্কা রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালের কার্ডিয়োলজি বিভাগের চিকিৎসক তরুণ কুমারের একটি প্রেসক্রিপশন পাঠিয়েছিলেন সুশান্তকে। সেটি ছিল ভুয়ো প্রেসক্রিপশন। কারণ, সুশান্তকে পরীক্ষা না করেই মানসিক রোগের চিকিৎসায় ওষুধ খেতে বলা হয়েছিল। এ ছাড়া, সুশান্তকে দিল্লির হাসপাতালের ওপিডি-র রোগী হিসেবে দেখানো হলেও সে দিন তিনি ছিলেন মুম্বইয়ে। যা টেলি মেডিসিন প্র্যাকটিস গাইডলাইনের বিরোধী। প্রিয়ঙ্কাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার জন্য মুম্বই পুলিশকে আর্জি জানিয়েছেন রিয়া। সুশান্তের বাবা বিহার পুলিশকে জানিয়েছিলেন, অভিনেতার মানসিক রোগ সংক্রান্ত কোনও তথ্য পরিবারের কাছে ছিল না। প্রিয়ঙ্কাকে নিয়ে রিয়ার দাবি সেই বক্তব্যের বিরোধিতা করছে।
সুশান্তের বাবার আইনজীবী বিকাশ সিংহ প্রশ্ন তুলেছেন, অভিনেতার মৃত্যু তদন্ত যখন সিবিআইয়ের হাতে ছেড়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট, তখন পুলিশের কাছে কেন অভিযোগ জানাতে গেলেন রিয়া?
এ দিকে, এমসের চিকিৎসকদের একটি দল সুশান্তের ভিসেরা পরীক্ষা করেছে। সেই তদন্তের রিপোর্ট মিলবে দশ দিনের মধ্যে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy