Sudha Chandran Conquered Life with Her Iron Determination dgtl
sudha chandran
কৃত্রিম পায়েই পুনর্জন্ম, ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনাও বন্ধ করতে পারল না সরস্বতীর বরপুত্রী সুধার বিশ্বজয়
অনুষ্ঠানে সুধার ভরতনাট্যমে মোহিত হয়ে যান অডিটোরিয়ামের দর্শক। স্ট্যান্ডিং ওভেশন দেওয়া হয় জীবনজয়ী তরুণীকে। অনুষ্ঠান শেষে সুধার আসল-নকল দু’টি পা স্পর্শ করেন তাঁর বাবা। মেয়েকে বলেন, তিনি দেবী সরস্বতীর পদযুগল স্পর্শ করলেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৯ ১০:৪৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
শুরু থেকে যদি শেষ হতে পারে, তবে শেষ থেকেও শুরু হতে পারে। জীবনের মূলমন্ত্র এটাই করে নিয়েছেন সুধা চন্দ্রন। যখন জীবনের কঠিনতম অধ্যায় এসেছিল, তখন তিনি কিশোরী। অন্য কারও ক্ষেত্রে হয়তো জীবনটাই স্তব্ধ হয়ে যেত। কিন্তু সুধা তাঁর চরৈবেতি মন্ত্র সাধনা বন্ধ করেননি। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
০২১৭
সুধার পরিবার তামিলনাড়ুর তিরুচিরাপল্লীর। তাঁর বাবা মা থাকতেন মুম্বইয়ে। সেখানেই ১৯৬৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জন্ম সুধার। নাচের প্রতি তীব্র আকর্ষণ দেখে মেয়ের নাচ শেখার ব্যবস্থা করলেন সুধার বাবা, কে ডি চন্দ্রন। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
০৩১৭
তিন বছর বয়সে শুরু হওয়া নাচ ক্রমশ প্যাশন হয়ে দাঁড়াল সুধার জীবনে। প্রতিদিন স্কুলের পরে নাচ শিখে তিনি গভীর রাতে বাড়ি ফিরতেন। মঞ্চে তাঁর প্রথম অনুষ্ঠান আট বছর বয়সে। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
০৪১৭
পড়াশোনা আর নাচ চলছিল সমান তালে। দশম শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষায় সুধা পেলেন ৮০ শতাংশ নম্বর। পরে তিনি অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর করেন। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
০৫১৭
সাফল্যের এই সিঁড়িতে পা রাখার আগেই সুধার জীবনে আসে দুঃস্বপ্ন। তাঁর ষোলোতম জন্মদিনের আগে এক ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় সুধার স্বপ্ন। তিরুচিরাপল্লীতে বাস দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন সুধা। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
০৬১৭
স্থানীয় হাসপাতালে তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়। অভিযোগ, সেখানে চিকিৎসকদের গাফিলতিতে তাঁর ডান পায়ে গ্যাংগ্রিন ধরে যায়। আঘাতের গুরুত্ব না বুঝে সাধারণ প্লাস্টার করে রাখা ছিল পায়ে। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
০৭১৭
এরপর আজকরে চেন্নাই, সেকালের মাদ্রাজের এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সুধাকে। চিকিৎসকরা বাধ্য হন সুধার ডান পা হাঁচুর নিচ থেকে বাদ দিতে। নইলে তাঁর সারা দেহে পচন ধরে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
০৮১৭
দুর্ঘটনার পরে শারীরিক আঘাতের থেকেও মানসিক আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছিলেন সুধা। আর কোনও দিন নাচতে পারবেন না, এই আশঙ্কায় তাঁর চোখে অন্ধকার নেমে এসেছিল। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
০৯১৭
দুর্ঘটনার পরে চার মাস লেগেছিল সুধার সোজা হয়ে দাঁড়াতে। ‘জয়পুর ফুট’ বা কৃত্রিম পায়ের ব্যবস্থা করেন তাঁর বাবা। এরপর তিন বছর ধরে ফিজিওথেরাপি। ধীরে ধীরে কৃত্রিম অঙ্গকেই এগিয়ে চলার মূল মাধ্যম করে নিলেন সুধা। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
১০১৭
একদিন সুধা তাঁর বাবাকে গিয়ে বললেন, তিনি আবার মঞ্চে অনুষ্ঠান করবেন। সেই অনুষ্ঠান হল সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে | এক শিল্পীর পুনর্জন্ম দেখতে কলেজের অডিটোরিয়াম কানায় কানায় ভর্তি | (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
১১১৭
মঞ্চে ওঠার আগে ঠাকুমা সুধার কানে কানে বললেন, ‘ভয় পেয়ো না | ঈশ্বর তোমার সঙ্গে আছেন |’ ক্ষোভে ফেটে পড়ে সুধার প্রতিক্রিয়া, ‘কক্ষণও না! ঈশ্বর আমার সঙ্গে থাকলে ওই দুর্ঘটনা হত না…’ (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
১২১৭
অনুষ্ঠানে সুধার ভরতনাট্যমে মোহিত হয়ে যান অডিটোরিয়ামের দর্শক। স্ট্যান্ডিং ওভেশন দেওয়া হয় জীবনজয়ী তরুণীকে। অনুষ্ঠান শেষে সুধার আসল-নকল দু’টি পা স্পর্শ করেন তাঁর বাবা। মেয়েকে বলেন, তিনি দেবী সরস্বতীর পদযুগল স্পর্শ করলেন। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
১৩১৭
দ্বিতীয় বার পথ চলা শুরু করে দেশ বিদেশ জয় করতে খুব বেশি সময় লাগেনি সুধার। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই তাঁর নাম পরিণত হল এক প্রতিষ্ঠানে। স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত হল তাঁর ‘লৌহকঠিন মানসিকতা’। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
১৪১৭
১৯৮৪ সালে মুক্তি পায় সুধার জীবনের উপর তৈরি ছবি তেলুগু ছবি ‘ময়ূরী’। তিনি নিজেই অভিনয় করেন নিজের ভূমিকায়। দু’বছর পরে মুক্তি পায় এর হিন্দি সংস্করণ ‘নাচে ময়ূরী’। ‘ময়ূরী’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য সুধা জাতীয় পুরস্কারে পুরস্কৃত হন। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
১৫১৭
এরপর তামিল, মালয়ালম, কন্নড়, মরাঠী, ভোজপুরি ও হিন্দিতে বেশ কয়েকটি ছিবেত অভিনয় করেছেন তিনি। তাঁর অভিনীত একমাত্র বাংলা ছবিটি হল ‘রাজনর্তকী’। বড় পর্দার পাশাপাশি টেলিভিশনেও দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন তিনি। তবে ছোট পর্দার মেগা সিরিয়ালে তাঁকে মূলত খলনায়িকার ভূমিকায় দেখা গিয়েছে। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
১৬১৭
১৯৯৪ সালে সহকারী পরিচালক রবি ডাং-কে বিয়ে করেন সুধা। নাচ-অভিনয় এবং নিজের নাচের স্কুল নিয়ে ময়ূরীর মতোই শত কলাপে আজ বিকশিত সুধা। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)
১৭১৭
সুধার অনুরাগী ও গুণমুগ্ধদের আশা, তাঁর দৃঢ় মানসিকতা পাথেয় হোক দেশের প্রত্যেক মেয়ের। ঠাকুমাকে বলা কৈশোরের সেই অভিমানের কথা পরিণত বয়সে ফিরিয়ে নিয়েছেন সুধা। তিনি বিশ্বাস করেন, ঈশ্বর তাঁর সঙ্গে আছেন। হয়তো ওই দুর্ঘটনা ঈশ্বরেরই পরীক্ষা ছিল। নাচের প্রতি সুধার নিখাদ প্যাশন কষ্টিপাথরে যাচাই করে নেওয়ার জন্য। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)