রিল বানানোকে গুরুত্ব দিতে চান না শ্রীলেখা। কখনও যদি হাতে সময় থাকে তবে চট করে একটু নাচ করে নিতে রাজি তিনি। কিন্তু একটি কয়েক সেকেন্ডের ভিডিয়ো বানিয়ে নেটমাধ্যমে পোস্ট করার জন্য নতুন প্রজন্ম যে ভাবে পরিশ্রম করে, তা দেখে তিনি খুশি নন।
রিল নিয়ে শ্রীলেখার মতামত
রিল-সংস্কৃতি নিয়ে হতাশ শ্রীলেখা মিত্র। নতুন প্রজন্ম কেবল মোবাইল ফোনে মুখ গুঁজে। অথবা নাচ করে ভিডিয়ো করছে। বইয়ের পাতার গন্ধ ভুলে গিয়েছে। নিজের পেজ থেকে রিলের বিরোধিতা করে ভিডিয়োও বানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি তাঁর ইনস্টাগ্রামেও একই ভিডিয়ো দেখা যাচ্ছে। কোথাও ‘সামি সামি’ গান, কোথাও বা ‘গেহরাইয়াঁ’, কোনও দিন আবার ইংরেজি গান। শ্রীলেখা নাচ করছেন। নাচ করে ভিডিয়ো বানাচ্ছেন। নিজের সঙ্গেই নিজেই বিরোধিতা করলেন তিনি? জানতে চাইল আনন্দবাজার অনলাইন।
রিল বানাচ্ছেন শ্রীলেখা। তা বলে রিল-এই মজে নেই তিনি। রাস্তায় হাঁটতে রিলের জন্য উপযুক্ত আলো খোঁজেন না। রিলের জন্য উপযুক্ত জায়গা খোঁজেন না। তিনি প্রাণ ভরে নিশ্বাস নেন মুক্ত আকাশ দেখতে দেখতে। সে কথাতেই সায় দিয়ে শ্রীলেখা বললেন, ‘‘আমার সহকারী সুব্রত এক দিন বলল, ‘তোমাকে এত মানুষ ভালবাসে, ইনস্টাগ্রামে অনুগামী সংখ্যাও এত বেশি, একটা রিল করো তো।’ সেই থেকে রিল করা শুরু করলাম। কিন্তু রিল মানেই যে কেবল নাচ করা বা লাফালাফি করা, আমি তা মনে করি না। আমি একটা রিল বানিয়েছিলাম মহিলাদের অন্তর্বাস নিয়ে। এই যে লোকে মুখ বেঁকিয়ে বা চুপি চুপি এসে বলে, ‘ব্রা-এর স্ট্র্যাপ (ফিতে) বেরিয়ে আছে।’ এই মানসিকতার বিরোধিতা করে কথা বলেছিলাম। রিল ভিডিয়োকে মাধ্যম করে জানিয়েছিলাম, ব্রা-এর স্ট্র্যাপ বেরিয়ে থাকা মানে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়া নয়।’’
শ্রীলেখার কথায় জানা গেল, ১২ মিলিয়ন মানুষ দেখেছিলেন সেই ভিডিয়ো। তার পরেই তিনি এক-দু’টি নাচের রিল ভিডিয়ো বানিয়েছেন। ভাল লেগেছে তাঁর। তা হলে কি রিল-প্রেমীদের সঙ্গে একই সারিতে আসছেন তিনি? দূরত্ব ঘোচাবেন নিজেই?
না, নিজের বক্তব্য থেকে সরে দাঁড়াতে রাজি নন শ্রীলেখা। রিল বানানোকে তিনি গুরুত্ব দিতে চান না। কখনও যদি হাতে সময় থাকে তবে চট করে একটু নাচ করে নিতে রাজি তিনি। কিন্তু একটি কয়েক সেকেন্ডের ভিডিয়ো বানিয়ে নেটমাধ্যমে পোস্ট করার জন্য নতুন প্রজন্ম যে ভাবে পরিশ্রম করে, তা দেখে তিনি খুশি নন। তাঁর মতে সেই খাটনি যদি বই পড়ার জন্য দেয়, তাতে বরং স্বস্তি পাবেন।
শ্রীলেখা বললেন, ‘‘রিল বানাতে ইচ্ছে করলে করুক! কিন্তু তার জন্য দেশের দশের জন্য চিন্তা ভাবনাটা বন্ধ হয়ে গেলে মুশকিল। চোখ কান খোলা রাখতে হবে। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ হচ্ছে, কেন হচ্ছে, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কী, এ সবও তো জানতে হবে। একটা রিলে কত লাইক পড়ল, কত জন মন্তব্য করল, সেটা যেন কারও জীবন নির্ধারণ না করতে পারে।’’ শ্রীলেখা এই উপদেশ কেবল রিল স্রষ্টাদের জন্য নয়, যাঁরা দেখছেন, তাঁদের জন্যেও। ভাল নাচ, গান, বা আঁকা নিয়ে রিল দেখলে সেগুলি নানা দিকে ছড়িয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিলেন শ্রীলেখা।
রবিবার ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ‘‘কিলি ও নিমার (তানজানিয়ার বিখ্যাত রিল জুটি) মতো বিভিন্ন রাজ্যের ছোটরা এমন ভিডিয়ো বানান।’’ ভারতীয় ভাষার প্রচার ও প্রসার বাড়াতে এই ধরনের লিপ সিঙ্কিং ভিডিয়ো বানানোয় ছোটদের উৎসাহ দিতে বলেন তিনি। মোদী চেয়েছেন, এক রাজ্যের গান গাক অন্য রাজ্যের ছেলেমেয়েরা। এর ফলে ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’ গঠনের লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন ভাষা জনপ্রিয় হবে।
সেই কথা উল্লেখ করে শ্রীলেখা বললেন, ‘‘ভারতীয় ভাষার প্রসার ঘটানোর জন্য রিল বানানোর দরকার আছে বলে আমার মনে হয় না। আমাদের জাতীয় সঙ্গীত ‘জন গণ মন’-ই তার জন্য যথেষ্ট। ভারতের সংস্কৃতিকে নানা জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া বা দেশের সমগ্রতার চেতনাকে জাগিয়ে তোলার জন্য এই রিল পদ্ধতিকে মাথায় তোলাকে আমি সমর্থন করি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy