Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
FILM

‘ইন্ডাস্ট্রিতে পজিশন দিয়ে আমার শিল্পের বিচার হয় না’

গান আর অভিনয় হাত ধরাধরি করে চলে তাঁর জীবনে। সম্প্রতি নাট্যমঞ্চের আলো তাঁর সহজাত অভিনয়ে। মুক্তি পাচ্ছে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় আর নন্দিতা রায়ের ‘গোত্র’। সাহেব চট্টোপাধ্যায় মুখোমুখি আনন্দবাজার ডিজিটালের সামনে।

ফের নাটকের মঞ্চে দেখা যাবে সাহেব চট্টোপাধ্যায়কে। ছবি: সংগৃহীত।

ফের নাটকের মঞ্চে দেখা যাবে সাহেব চট্টোপাধ্যায়কে। ছবি: সংগৃহীত।

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৯ ১৬:০৬
Share: Save:

‘গোত্র’-য় আপনি কী করছেন?
মা আর ছেলের সম্পর্কের গল্প। আমি ছেলে। আমার চরিত্রের নাম অনির্বাণ। এর বেশি বলছি না। তবে গল্পটা অসম্ভব ভাল। প্রথম সিনেমায় শিবুদা-নন্দিতাদির সঙ্গে কাজ। পুরো ছবিটা ওদের মাথায়। ঠান্ডা মাথার পরিচালক। শিবুদা নিজে এক জন দুর্দান্ত অ্যাক্টর, তাই অভিনেতাকে স্পেস দিয়ে থাকেন। ডাবিং করতে গিয়ে ছবিটা ভাল লেগেছে। বাংলা ছবি যাঁরা ভালবাসেন তাঁরা এই ছবিটা দেখতে চাইবেন বলে আমার মনে হয়।

অফারটা কী ভাবে আসে?
উইনডোজ থেকে ফোন এসেছিল। শিবুদা-নন্দিতাদি দেখা করলেন। চরিত্রটা শুনলাম। মায়ের ছেলে যেমন হয়। আমি সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যাই। আসলে বাংলা ছবিতে ভাল কনটেন্ট দর্শকেরা খুব আগ্রহ নিয়ে দেখে।

বাংলা ছবি নিয়ে এত কথা বলছেন, কিন্তু আপনাকে বাংলা ছবিতে কম দেখা যায় কেন?
একটা সিনেমা এখন করছি। অঞ্জন চৌধুরীর মেয়ের ছবি ‘ছায়া সূর্য’। আমি লিড চরিত্র করছি। আর একটা বড় ব্যানারের ছবিতে নায়কের চরিত্রে কাজ করব। সেপ্টেম্বর থেকে ফ্লোরে যাবে ছবিটা। হাউস থেকে অনুমতি দিলে নিশ্চয়ই জানাবো। দেখুন আমি সন্দীপ রায়, শেখর দাস, রাজা সেনের মতো পরিচালকের সঙ্গেও কাজ করেছি, আবার বেশ কিছু তথাকথিত অর্থে ‘ভুল’ ছবিও করেছি।

আরও পড়ুন: স্ত্রী-মেয়েকে নির্যাতনের অভিযোগে অভিনেত্রী শ্বেতা তিওয়ারির স্বামীকে থানায় নিয়ে এল পুলিশ


‘গোত্র’-র সেটে অনসূয়া মজুমদারের সঙ্গে সাহেব চট্টোপাধ্যায়।

আপনি কেরিয়ারের প্রথমে তো যাত্রাও করেছেন?
হ্যাঁ, একেবারে শুরুতে। তার পর ধারাবাহিক।

এখন আবার নাটক করছেন কেন?
অস্ট্রেলিয়ায় সিডনি অপেরায় আগেই অভিনয় করেছি আমি, ২০১৩-য়। স্বামী বিবেকানন্দের চরিত্রে। এ বারে যে অফার এল নীল মানে সুজন মুখোপাধ্যায় আর ব্রাত্য বসুর তরফ থেকে। ‘চেতনা’-র প্রযোজনায় নতুন নাটক ‘রানি ক্রেউসা’, লিখেছেন ব্রাত্য বসু, নির্দেশনায় সুজন মুখোপাধ্যায়। ২৮ জুলাই এর সূচনা হয়। রিপিট শো চলছে এখন। বহু মানুষ দেখেছেন। ভাল লেগেছে তাঁদের। ছোটবেলায় মঞ্চে অভিনয় তো করেছি, কিন্তু প্রফেশনাল থিয়েটারে এ রকম কনটেন্টে কাজ করা একটা বিরাট অভিজ্ঞতা। এই গ্রিক নাটক গণতন্ত্রের ফ্যালাসি নিয়ে কথা বলে। এক জন শিল্পীর না পাওয়ার দুঃখ মঞ্চে মিটে যায়। আমি করি গ্রিক রাজা জেথাস-এর চরিত্র। যখন মঞ্চে আমার মুখে আলোটা পড়ে, এক অদ্ভুত অনুভূতি হয়। এক জন অভিনেতার পরীক্ষা আবার কিছু নিজস্ব পাওয়া...

কারও কাছে সাহেব চট্টোপাধ্যায় গায়ক। কারও কাছে অভিনেতা। এই দুই সত্ত্বা কি কোথাও আপনার প্রফেশনাল কেরিয়ারে আইডেন্টিটির সমস্যা তৈরি করেছে?
আমি সেটা একেবারেই মনে করি না। বরং আমার মনে হয়, একটা অপরটাকে কমপ্লিমেন্ট করেছে। আমি ধারাবাহিকে অভিনয় করেছি। আবার সেই ধারাবাহিকে অভিনয়ের সুবাদে গান করেছি নিজের গলায়। এটাই পাওয়া। মানুষ, দর্শক দুই সত্ত্বাকেই গ্রহণ করেছে। আমি বাইরে অনুষ্ঠান করতে গিয়ে দেখেছি। এটাই আমার প্রাপ্তি।

আর ইন্ডাস্ট্রি?
ইন্ডাস্ট্রির কথা বলতে পারব না। আমি শুনেছি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির লোকেরা বলেছে ও গান গাইতে ব্যস্ত আর মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির লোকেরা বলেছে ও অভিনয় করতে ব্যস্ত। ইন্ডাস্ট্রিতে আমার পজিশন দিয়ে আমার শিল্পের বিচার হয় না। আমি একটু অন্য রকম করেই ভাবি। ইন্ডাস্ট্রিতে আমার পজিশন দিয়ে আমার শিল্পের বিচার হয় না। আমি একটু অন্য ভাবনার মানুষ। আমি এটাই ভাবি।

আরও পড়ুন: ‘আমি প্রচণ্ড দেশভক্ত’, পাক মহিলার অভিযোগের উত্তরে প্রিয়ঙ্কার জবাব মন জিতল নেটিজেনদের

২০০২ থেকে ২০১৯— এখনও স্ট্রাগল করেই চলেছি: সাহেব।

ধারাবাহিক থেকে সরে এলেন কেন?
সরে আসেনি। পটলকুমার তো বাম্পার হিট। আর ‘সন্ন্যাসী রাজা’-র সময়ে অসুস্থ হয়ে যাই। ভাল অফার এলে নিশ্চয়ই ধারাবাহিক করব। কিন্তু পটলকুমার আর সন্ন্যাসী রাজার পর তো আর ছোট চরিত্র করব না। দুম করে ছোট চরিত্রে ঢুকতে পারব না। আশা করি, আমার ডেডিকেশন নিয়ে কারও কোনও প্রশ্ন নেই।

শুধু রবীন্দ্রনাথের গান নিয়ে থাকলেন না কেন?
আমি বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে একটা কথা বলি। কথাটা বলতে আমার মোটেও ভাল লাগছে না। কিন্তু এটাই বাস্তব। শুধু রবীন্দ্রনাথের গানের শো পেলে দেখেছি, আমায় যে টাকাটা দেওয়া হয় তাতে আমার সংসার চলে না। কিন্তু যদি আমি মাচায় গান গাই, হিন্দি, আধুনিক বা ‘কী করে তোকে বলব’-র মতো গান গাইলে তার চেয়ে অনেক বেশি টাকা আমি পাই। এটা খুব দুঃখজনক। উল্টো হওয়া উচিত ছিল। কমার্শিয়ালি যে মিউজিক কোম্পানি ডিজিটালি সার্ভাইভ করছে রবীন্দ্রনাথের গান বিক্রি করেই, তারা কিন্তু টিকে আছে। এটা তো ঠিক যে রবীন্দ্রনাথকে বেচে প্রচুর মানুষের পেটের ভাত চলে। অভিনয় কিন্তু আমায় গায়কের পরিচিতি দিয়েছে। এই প্রসঙ্গেই বলে রাখি, সম্প্রতি আশা অডিয়ো থেকে সিঙ্গলস প্রকাশিত হয়েছে আমার। আর সে অর্থে আমি কিছুই প্ল্যান করে করিনি। কিন্তু ছোটবেলা থেকে গায়ক আর অভিনেতাই হতে চেয়েছি। আমি আজ অবধি কোনও পরিচালককে বলিনি, আমায় কাজ দিন। আমি পিআর-ও করিনি। ২০০২ থেকে ২০১৯— এখনও স্ট্রাগল করেই চলেছি। আমার ইচ্ছেশক্তিই আমার সম্বল।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy