বৃহস্পতিবার কলকাতায় ‘ভোলা শঙ্কর’ ছবির শুটিংয়ে তমন্না ভাটিয়া এবং চিরঞ্জীবী। ছবি: সংগৃহীত।
কলকাতায় শুটিং করবেন চিরঞ্জীবী। ১ মে, সোমবার আনন্দবাজার অনলাইন প্রথম এই খবর জানিয়েছিল। বুধবার দুপুরে কলকাতায় পৌঁছন দক্ষিণী মহাতারকা। বৃহস্পতিবার থেকে শহরে তেলুগু ছবি ‘ভোলা শঙ্কর’-এর শুটিং শুরু করলেন চিরঞ্জীবী। ছবিতে তাঁর বিপরীতে রয়েছেন এই মুহূর্তের আরও এক চর্চিত অভিনেত্রী তমন্না ভাটিয়া।
বৃহস্পতিবার সকালে ছবির শুটিং লোকেশন ছিল শহরের প্রাণকেন্দ্র ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। সকাল ৭টা থেকে ভিক্টোরিয়ার সামনে ইউনিটের ব্যস্ততা চোখে পড়ল। মূল ফটকের সামনে সার দিয়ে দাঁড় করানো হয়েছে গোটা দশেক হলুদ ট্যাক্সি। খবর পাওয়া গেল চিরঞ্জীবী এবং তমন্না, দুই অভিনেতাই শুটিং করবেন। দু’জনেই রূপটানে ব্যস্ত। শুরু হল অপেক্ষার পালা। ইউনিট প্রস্তুত। পরিচালক মেহের রমেশ মনিটরের পিছনে। নিরাপত্তাকর্মীরা মেকআপ ভ্যানের দরজা খুলতেই বেরিয়ে এলেন তিনি। চোখে রোদচশমা। পরনে কলকাতার হলুদ ট্যাক্সিচালকদের পোশাক। পায়ে সাদা-কালো স্নিকার্স। বাকি ট্যাক্সিচালকদের সঙ্গে স্ট্যান্ডে বসে অভিনেতার গল্প করার দৃশ্য টেক করলেন পরিচালক। ভিক্টোরিয়ায় পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে। দক্ষিণ ভারত থেকে আগত পর্যটকদের চোখের সামনে চিরঞ্জীবীকে দেখতে পাওয়াটা মেঘ না চাইতে জলের সমান। তাঁদের উৎসাহকে অবশ্য বিশেষ পাত্তা দিলেন না মেগাস্টার। শট শেষ হতেই ফের নিজের ভ্যানের দিকে এগিয়ে গেলেন চিরঞ্জীবী।
ইতিমধ্যে ভিক্টোরিয়ার গেটের সামনের আইল্যান্ডের গায়ে একটি লাল অডি গাড়ি এনে রাখা হল। ইউনিট সূত্রে খবর পাওয়া গেল, তমন্না এই গাড়িটি চালিয়ে আসবেন এবং গাড়ি বিকল হবে। শেষে আর উপায় না দেখে উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে থাকা চিরঞ্জীবীর ট্যাক্সিতে উঠবেন। এর পরে আরও চমক। তমন্না লোকেশনে আসবেন। তৎপর নিরাপত্তাকর্মীরা। অভিনেত্রী ভ্যান থেকে নেমে এলেন আইনজীবীর পোশাকে! তমন্না প্রথমে গাড়ি চালিয়ে কয়েক বার রিহার্সাল করে নিলেন। গাড়ি এসে থামতেই নীচে নকল ধোঁয়া দেওয়া হল। পার্কিং ইন্ডিকেটর জ্বালিয়ে দেওয়া হল। গাড়ি থেকে নেমে সাহায্যের জন্য কাউকে ফোন করলেন উত্তেজিত নায়িকা। সেই দৃশ্যের টেক করলেন পরিচালক। শট শেষ হতেই অভিনেত্রী মনিটরে শটের রিভিউ দেখলেন। তত ক্ষণে তাঁর রূপটানের টিম টাচআপে ব্যস্ত। সকালে কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি হলেও কলকাতায় যথেষ্ট গরম। তমন্না ঘাম শুকোতে মুখের সামনে পোর্টেবল ফ্যান ধরে থাকলেন। সহকারী মাথায় ধরলেন ছাতা।
দুপুর ১২.৩০। ইউনিট তখন ট্যাক্সিতে চিরঞ্জীবীর ক্লোজ়আপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সাধারণত এই ধরনের শুটিংয়ে পরিচালকের ব্যস্ততা থাকে তুঙ্গে। কিন্তু নিরাশ করলেন না মেহের রমেশ। কলকাতায় শুটিং করতে এসে প্রাথমিক অভিজ্ঞতা কী রকম? বললেন, ‘‘তেলুগু এবং তামিল ইন্ডাস্ট্রি কলকাতাকে খুবই সম্মান করে। আমার দীর্ঘ দিনের ইচ্ছে ছিল কলকাতায় এসে শুটিং করা। আর চিরঞ্জীবী স্যর নিজেও বাংলাকে খুব শ্রদ্ধা করেন। প্রস্তাব দিতেই উনি কলকাতায় শুটিং করতে রাজি হয়ে যান।’’
এর আগে ১৯৯৮ সালে একটি তেলুগু ছবির শুটিং করতে কলকাতায় এসেছিলেন চিরঞ্জীবী। পরিচালকের থেকে জানা গেল, চিরঞ্জীবী এই নিয়ে দ্বিতীয় বার ট্যাক্সিচালকের ভূমিকায় অভিনয় করছেন। এর আগে ২০০২ সালে ‘ইন্দ্র’ ছবিতে ট্যাক্সিচালকের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন চিরঞ্জীবী। তবে এই ছবিতে অভিনেতাকে ‘লার্জার দ্যান লাইফ’ চরিত্রেই উপস্থিত করবেন বলে জানালেন রমেশ।
লোকেশনে এর পর চিরঞ্জীবী আসবেন। ভ্যানের সামনে তাঁর জন্য সাদা গাড়ি অপেক্ষা করছে। এ দিকে নির্দেশ এল গাড়ি সরানোর। সকলকে অবাক করে পাঁয়ে হেঁটে ভিক্টোরিয়ার ফটকের দিকে এগিয়ে গেলেন তিনি। ট্যাক্সির গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়ালেন পরিচিত ভঙ্গিতে। তা দেখে লোকেশনে উপস্থিত অনুরাগীদের হৃৎস্পদন কিছুটা হলেও যে বাড়ল তা নিয়ে সন্দেহ নেই। ক্লোজ়আপ শট নিলেন পরিচালক। শটের আগেই রমেশ বলছিলেন, ‘‘বুধবার কলকাতা বিমানন্দরে স্যরকে দেখে অনুরাগীদের উন্মাদনা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতাম না। এই ছবির পোস্টার নিয়ে তাঁরা স্যরের স্বাক্ষর নিতে হাজির।’’ এই প্রসঙ্গেই বললেন, ‘‘বর্তমান সময়ে আঞ্চলিক ইন্ডাস্ট্রির বিভাজন বলে আর কিছু নেই। যে ভাষারই ছবি হোক না কেন, সেটা ঠিক দর্শকের কাছে পৌঁছে যায়।’’ আগামী দশ দিন কলকাতার বিভিন্ন লোকেশন শুটিং সারবে ‘ভোলা শঙ্কর’ ছবির ইউনিট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy