সৌমিত্র-নাসিরুদ্দিন
ফের ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ পরিচালক শৈবাল মিত্রের। এই মুহূর্তে দেশে শিক্ষা আর ধর্ম, জ্বলন্ত বিষয়। পাশাপাশি, পাঠ্যসূচিতে বিজ্ঞানের বদলে বৈদিক বিজ্ঞান রাখার পক্ষেও রয়েছেন অনেকে। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে এক জন শিক্ষক কি নিজের ইচ্ছেয় চলতে পারবেন? এমন তর্ক পরিচালক নতুন করে উস্কে দিতে চলেছেন। তর্ক যাতে জাতীয় স্তরে পৌঁছোয় তারও বন্দোবস্ত করেছেন তিনি। তাঁর পছন্দের দুই তার্কিক সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, নাসিরুদ্দিন শাহ! আনন্দবাজার অনলাইনকে পরিচালক জানিয়েছেন, এঁদের তর্কের জল নাকি আদালত পর্যন্ত গড়াবে।
শৈবালের কথায়, ‘‘কাঁটায় কাঁটায় ঠিক একটি মাস। ২৯ জুলাই সারা দেশ বড়পর্দায় দেখবেন দুই বিদগ্ধ তার্কিকের দ্বন্দ্ব।’’ বিবাদের মীমাংসা হবে? পরিচালকের মতে, ‘‘‘শেষ নাহি যে শেষ কথা কে বলবে?’ তবে ইতিবাচক বার্তা দেবে এই ছবি।’’ এই ভাবনা থেকেই তিনি ২০১৯-এ পরিচালনা করেছেন ‘আ হোলি কন্সপিরেসি’। যার চিত্রনাট্য শুনেই এক কথায় রাজি দুই অভিনেতা।
এই ছবির দৌলতেই প্রথম এবং শেষ বার মুখোমুখি সৌমিত্র-নাসির। এঁদের সঙ্গী শ্রমণ চট্টোপাধ্যায়, অমৃতা চট্টোপাধ্যায়, আন্তর্জাতিক মূকাভিনেতা পার্থপ্রতিম মজুমদার প্রমুখ।
শ্রমণ এবং অমৃতা খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের। পর্দায় শ্রমণ সেই শিক্ষক, যাঁর ভাবনার স্বাধীনতাকে কেন্দ্র করে গল্প আবর্তিত হবে। ‘চিত্রকর’ ছবির পরিচালকের দাবি, ‘‘দেশে ধর্ম এবং শিক্ষার জিগির তুলে হিন্দু রাষ্ট্র পুনরুত্থানের চেষ্টা চলছে। আমার ছবি সেই ভাবনায় প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দেবে।’’ দুই অভিনেতার মাতৃভাষা এক নয়। তাই ছবির ৮০ শতাংশ সংলাপ ইংরেজিতে। প্রযোজনায় ইন্দো-আমেরিকান প্রযোজনা সংস্থা ওয়ালজেন মিডিয়া এবং এএমসি মিডিয়া। এ ছাড়াও প্রযোজনায় আছেন জয়দীপ রায়চৌধুরী, শুভ্র চক্রবর্তী, সন্দীপ সরকার।
আমেরিকার টেনিসি প্রদেশের এক শিক্ষক বিজ্ঞান পড়াতে চেয়েছিলেন। বদলে তাঁর উপরে অপবিজ্ঞান পড়ানোর দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া হয়। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর স্বাধীন ভাবনা প্রকাশিত হওয়ার আগেই হোঁচট খেয়েছিল! এবং শেষ পর্যন্ত আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল। তাঁকেই ভারতীয় প্রেক্ষাপটে দেখাবেন পরিচালক। ইতিমধ্যেই এই বিষয় নিয়ে হলিউডে একাধিক ছবি, নাটক হয়েছে। কোর্টরুম ড্রামায় সৌমিত্র-নাসির দু’জনেই আইনজীবী। ২০১৮-য় ছবি তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন শৈবাল। এক বছর লেগে যায় ছবিটি শেষ করতে। মুক্তির সময়েই অতিমারির দাপট। পরিচালকের কথায়, ‘‘আড়াই বছরের অপেক্ষার পরে ছবিটি মুক্তির আলো দেখবে। সৌমিত্রবাবু সম্ভবত এই ছবিতেই অভিনয়ের পাশাপাশি শেষ ডাবিং করেছেন।’’
ছবির বিষয় বলছে, জ্বলন্ত ইস্যু নিয়ে তর্ক জমিয়ে দেবেন দুই তারকা অভিনেতা। তাঁদের ক্যামেরাবন্দি করতে গিয়ে কতটা ঘেমেছেন পরিচালক? শৈবালের দাবি, ‘‘যে কেউ এঁদের ক্যামেরায় বাঁধতে গিয়ে ঘামবেন। সৌমিত্রবাবু তখন অসুস্থ। টানা ৪ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে পারতেন না। নাসির সাহেব তুলনায় সুস্থ। ফলে, সব দিক বিবেচনা করে শ্যুটিং করতে হয়েছে।’’ পাশাপাশি, অনেক কিছু শিখেওছেন সবাই। পরিচালকের মতে, ওঁদের অভিনয় ক্যামেরাবন্দি করতে গিয়ে, ওঁদের সঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে উপস্থিত অভিনয়ের অনেক গুপ্তকথা জেনে ফেলেছেন পরিচালক! এ ছাড়া, এঁদের পারস্পরিক শ্রদ্ধাও দেখার মতো ছিল। নাসিরুদ্দিনের অভিনয়ের সময় হয়তো সৌমিত্রবাবু অনুপস্থিত। তাই বলিউড তারকা নিজে কিউ দিতেন। যা অতি বিরল দৃশ্য। ছবিতে থাকছে ব্রহ্মসঙ্গীত, যিশু-কীর্তন এবং কানাডার কবি-গায়ক লেনার্ড কোহেনের লেখা একটি গান। গান তিনটি শোনা যাবে বাসবী দত্ত, সোফিয়া চৌধুরী বসুর গলায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy