কাজ করেছেন ব্যাঙ্ক এবং এনজিও-তে, প্রত্যাশাপূরণের পিছনে না দৌড়ে জীবনকে উপভোগ করতে ভালবাসেন সোহা
কিছু বছর লিভ ইন সম্পর্কে থাকার পরে ২০১৪-এ প্যারিসে তাঁদের এনগেজমেন্ট হয়। পরের বছর বিয়ে করেন সোহা-কুণাল। ২০১৭ সালে জন্ম হয় তাঁদের মেয়ে ইনায়ার।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২০ ১৩:২৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
রাজ-আভিজাত্য, ক্রিকেট অধিনায়কত্বের গরিমা এবং বলিউডের প্রথম সারির নায়িকার জনপ্রিয়তা ও গ্ল্যামার—এত রকমের বৈশিষ্ট্য মিলেমিশে গিয়েছে তাঁর নামের সঙ্গে। বলিউডে স্টার কিডদের মধ্যে তাঁর উজ্জ্বলতা ছিল বোধহয় সবথেকে বেশি। কিন্তু সোহা আলি খান থেমে রইলেন প্রত্যাশার সর্বোচ্চ বিন্দুর অনেক আগেই।
০২১৬
পটৌডীর নবম নবাব তথা দেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক মনসুর আলি খান পটৌডী এবং তারকা অভিনেত্রী শর্মিলার ছোট মেয়ে সোহার জন্ম ১৯৭৮-এর ৪ অক্টোবর, দিল্লিতে। তাঁর শৈশবের একটা বড় অংশও কেটেছে এই শহরে।
০৩১৬
দিল্লির দ্য ব্রিটিশ স্কুল থেকে পড়াশোনার পরে তিনি পাড়ি দেন ইংল্যান্ড। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যালিয়োল কলেজে পড়াশোনা করেন আধুনিক ইতিহাস নিয়ে। পরে স্নাতকোত্তর সম্পূর্ণ করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে। লন্ডনের স্কুল অব ইকনমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্স থেকে।
০৪১৬
অভিনেত্রী হওয়ার আগে সোহা ব্যাঙ্ক এবং এনজিও-তে কাজ করেছেন। তাঁর অভিনয় শুরু বাংলা ছবি দিয়ে। ২০০৪- এ মুক্তি পায় সোহার প্রথম বাংলা ছবি ‘ইতি শ্রীকান্ত’। সে বছরই মুক্তি পায় তাঁর প্রথম হিন্দি ছবিও। অনন্ত মহাদেবনের পরিচালনায় ‘দিল মাঙ্গে মোর’ ছবি দিয়ে তাঁর আত্মপ্রকাশ বলিউডে।
০৫১৬
সোহার ফিল্মোগ্রাফিতে উল্লেখযোগ্য হল ‘প্যায়ার মে টুইস্ট’, ‘রং দে বসন্তী’, ‘মুম্বই মেরি জান’, ‘তুম মিলে’, ‘সাহেব বিবি অউর গ্যাংস্টার রিটার্নস’, ‘গো গোয়া গন’, এবং ‘সাহেব বিবি অউর গ্যাংস্টার থ্রি’।
০৬১৬
২০০৫-এ সোহা অভিনয় করেন ঋতুপর্ণ ঘোষের পরিচালনায় ‘অন্তরমহল’-এ। এই ছবিতে অভিষেক বচ্চনের বিপরীতে সোহার অভিনয় প্রশংসিত হয়।
০৭১৬
‘ঢুঁঢতে রহ জাওগে’ ছবিতে সোহা অভিনয় করেছিলেন বাঙালি তরুণী নেহা চট্টোপাধ্যায়ের ভূমিকায়। ২০০৯-এ মুক্তি পাওয়া এই ছবিতে অভিনয় করতে গিয়ে সোহার আলাপ অভিনেতা কুণাল খেমুর সঙ্গে।
০৮১৬
কিছু বছর লিভ ইন সম্পর্কে থাকার পরে ২০১৪-এ প্যারিসে তাঁদের এনগেজমেন্ট হয়। পরের বছর বিয়ে করেন সোহা-কুণাল। ২০১৭ সালে জন্ম হয় তাঁদের মেয়ে ইনায়ার।
০৯১৬
পরবর্তী কালে এক সাক্ষাৎকারে সোহা জানান, তাঁর নায়িকা হওয়ার কোনও ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন ঘটে দিল্লি থেকে মুম্বইয়ে থাকতে আসার পরে। বলিউডের হাতছানি উপেক্ষা করতে পারেননি। নিজেই জানান শর্মিলা-কন্যা।
১০১৬
বাকি স্টারকিডদের মতো তাঁকেও তুলনার মুখোমুখি হতে হয়েছে। সবসময় তাঁর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে মা, শর্মিলার। তারকার সন্তান হলে এ সব জীবনেরই অঙ্গ বলে মনে করেন সোহা।
১১১৬
কেরিয়ারের উত্থান পতন নিয়েও বেশি উদ্বিগ্ন নন সোহা। অভিনেত্রী হিসেবে কী পেয়েছেন, বা কী পাননি, সেই হিসেবের মধ্যেও যান না। তাঁর কাছে কেরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেটা জীবনের সর্বস্ব নয়।
১২১৬
বরং, সোহার ভাল লাগে কাছের মানুষদের সঙ্গে সময় কাটাতে। পছন্দের জায়গায় যেতে। কেরিয়ারের পিছনে না দৌড়ে জীবনকে উপভোগ করতে চান তিনি। মেয়েকে গল্পের বই পড়ে শোনানোও তাঁর প্রিয় অবসর।
১৩১৬
জীবনের একটা দীর্ঘ পর্ব যে তিনি কাটিয়েছেন খ্যাতির বৃত্তের বাইরে, সে কথাও স্পষ্ট স্বীকার করেন পটৌডীর রাজপরিবারের মেয়ে। বাবা-মা-দাদা, তিনজনেই সেলেব্রিটি। বার বার তাঁর পরিচয় আটকে থেকেছে ‘সেফ আলি খানের বোন’ অথবা ‘মনসুর আলি খান পটৌডী ও শর্মিলার মেয়ে’ হিসেবে। কিন্তু তাতে কোনও আক্ষেপ বা অনুশোচনা নেই সোহার।
১৪১৬
এমনকি, সোহাকে এও শুনতে হয়েছে, তিনি দেখতে মায়ের মতো। কিন্তু অভিনয় করেন বাবার মতো। এতেও বিরূপ হননি তিনি। বরং, বলেছেন, তাঁর বাবা-ও ভাল অভিনেতা। এক সময়ে বহু বিজ্ঞাপনে তাঁকে নিয়মিত দেখা গিয়েছে।
১৫১৬
স্বামী কুণালের সঙ্গে মিলে একটি প্রযোজনা সংস্থা শুরু করেছেন সোহা। তাঁর ধারণা, কুণাল ভবিষ্যতে ছবি পরিচালনা করতে পারেন। তবে তাঁর নিজের পরিচালনায় আসার ইচ্ছে আপাতত নেই।
১৬১৬
জীবনের মুখোমুখি হতে ভালবাসেন সোহা। সাফল্যের পাশাপাশি ব্যর্থতাকে মেনে নেন জীবনের অংশ হিসেবেই। তাঁর কাছে জীবন উপভোগ করার। সাফল্য আর খ্যাতির পিছনে দৌড়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতা নয়।