প্রয়াত কবি অরুণ চক্রবর্তী লজেন্স খাওয়াতেন গায়ক সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে। ছবি: সংগৃহীত।
অরুণ চক্রবর্তী, আমাদের অরুণদা। ওঁর নাম উঠলেই সকলের মুখে একটাই গানের কথা, ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’। আফসোস, আজীবন ‘ওয়ান টাইম ওয়ান্ডার’ হয়ে থেকে গেলেন। অথচ ওঁর প্রচুর কবিতা রয়েছে। সে গুলোও একই ভাবে উল্লেখযোগ্য। যা ভাল গান হয়ে উঠতে পারত। অরুণদাও আমাদের অনেক বার কথায় কথায় অনুরোধ জানিয়েছিলেন, “আমার আরও লেখা আছে, সে গুলোও তোমরা গান আকারে গাও।”
ওঁর সঙ্গে আলাপ কিন্তু ভুল বোঝাবুঝি দিয়ে। এক বার ‘ভূমি ইস্পেশ্যাল’ বলে পুজোর সময় একটি অ্যালবাম প্রকাশ হল। সেখানে দুটো প্রচলিত গান ছিল। তার মধ্যে একটি অরুণদার লেখা বিখ্যাত গান। তখন আমরা একদম নতুন। ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’ গানটি বাউলদের মুখে শুনেছিলাম। জানতাম না, ওটা অরুণদার লেখা। ফলে, অ্যালবামের কভারের গায়ে লেখা ছিল সুর ও কথা প্রচলিত। সেটা নিয়ে কিছু জন অরুণদার কান ভাঙিয়েছিল, “এরা তোমার গান নিজের গান বলে চালানোর চেষ্টা করছে।” দাদা স্বাভাবিক ভাবে রেগে গিয়েছিলেন। কারণ, তিনি প্রকৃত ঘটনা জানতেন না। শেষে আমরা ওঁর সঙ্গে দেখা করে পুরোটা জানালাম। গান নিয়ে গন্ডগোল মিটল। তার পর এতটাই ভাব হল যে, অরুণদা দেখা হলেই আদর করে ‘খ্যাপা’ সম্বোধন করতেন।
আমার চোখে অরুণদা কবির থেকেও বাউল বেশি। ও ভাবেই জীবন কাটাতেন। দেখা হলে সকলকে বলতেন, “এক দিন এসো। ঝুরিভাজা আর চা খাওয়াব।” ইঁদুরদৌড়ে ছিলেন না। কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। যাঁরা এই প্রতিযোগিতায় শামিল, তাঁদের বিরুদ্ধেও মুখ খুলতে দেখিনি। জীবন যে ভাবে বয়েছে তিনিও সে ভাবেই নিজেকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। সদা হাস্যমুখ। আর ঝোলায় নানা স্বাদের লজেন্স । দেখা হলেই হাত ঢুকিয়ে মুঠো ভর্তি তুলে সবাইকে লজেন্স বিলোচ্ছেন। সব হারিয়ে গেল অরুণদা...।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy