বাঙালির বিবাহবাসর গানবাজনা ছাড়া অসম্পূর্ণ। সুরে হোক বা বেসুরে, নবদম্পতির সঙ্গে সকলেই এই বাসররাতে কণ্ঠ মেলান। চোখে ঘুম লেগে থাকলেও আড্ডা ও সুরের মেলবন্ধনে রাত জেগেই কাটায় বাঙালিরা। কিন্তু বিয়ের আসরে বা প্রীতিভোজে আলাদা করে গানের আসর সেই ভাবে দেখা যায় না। অবাঙালি বিয়েতে প্রায়ই সঙ্গীতশিল্পীদের ডাকা হয়। তবে সেখানে বাংলা গানের ঠাঁই হয় না। হাল আমলে বাঙালি বিয়েতেও সঙ্গীতশিল্পীদের ডাকা হয়। কিন্তু সেখানেও জায়গা করে নেয় ‘কবীরা মান জা’, অথবা ‘কুড়মায়ি’র মতো হিন্দি গান। তবে এ বার সেই ছক ভাঙছেন দেবদীপ মুখোপাধ্যায়। বাঙালির বিয়েতে গাইছেন শুধুই বাংলা গান। তা-ও আবার নিজের তৈরি বাংলা গান।
দেবদীপ জানান, সঙ্গীতশিল্পী তথা অনুষ্ঠান আয়োজক রুবেশ সরকারের সঙ্গে জোট বেঁধে এই ভাবনা তৈরি করেছেন তিনি। বিয়েবাড়িতেও বাংলা গান গাওয়ার চল তৈরি করে দেওয়ার জন্যই এই ভাবনা তাঁদের। আনন্দবাজার ডট কমকে দেবদীপ বলেন, “বিয়েবাড়িতে গানবাজনা করব বলেই এই ভাবনা। বিয়েতে তো অনেক রকমের রীতি পালন হয়। যাঁরা বাংলা গান তৈরি করেন, তাঁদের জন্য বিয়েবাড়িগুলিই একটা মঞ্চ হয়ে উঠতে পারে।”
বিয়ে মানে দু’টি মানুষের জীবনের নতুন অধ্যায়ের শুরু। এই সময় সঙ্গীত সঙ্গে থাকলে সেই দু’টি মানুষের বিশেষ মুহূর্ত আরও সুন্দর হয়ে ওঠে, মনে করেন দেবদীপ। তবে শুধু প্রেমের গান নয়। দেবদীপ বলেন, “প্রেমের গান তো থাকবেই। অপ্রেমের গানও থাকবে। বিয়েতে তো প্রেমের পাশাপাশি তুমুল ঝগড়াও হয়। তেমন গানও হবে।”
তাই বিয়ে উপলক্ষে আলাদা করে কোনও গান তৈরি করেননি দেবদীপ। তাঁর কথায়, “আগে এক বার এক জনের ফরমায়েশে ‘কথায় কথায় জড়িয়ে পড়েছি’ বলে একটা গান লিখে দিয়েছিলাম। তবে বিয়েতে গাওয়ার জন্য আলাদা করে বিবাহকেন্দ্রিক গান তৈরি করিনি। আমার কাছে যেটুকু প্রেমের বোধ ও প্রেমের গান রয়েছে সেটাই ভাগ করে নেব।”
তবে শুধুই মৌলিক বাংলা গান নয়। বাঙালি বিয়েতে পুরনো বাংলা গান, রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুল গীতি-সহ যে কোনও বাংলা গান গাওয়া যেতে পারে বলে মনে করেন দেবদীপ। আনন্দপুরের বিয়েবাড়িতে ‘হয়নি আলাপ’, ‘প্রিয় বন্ধু’ থেকে শুরু করে নতুন গান ‘এমনি ভালবাসি’ ও ‘ভালবাসা চাই’-সহ নানা গান গাইবেন দেবদীপ।