Simple Kapadia turned into a costume designer after failure as an actress dgtl
bollywood
ব্যর্থ নায়িকাই পরে সফল কস্টিউম ডিজাইনার, জাতীয় পুরস্কারও পান ডিম্পলের প্রয়াত বোন
বলিউডের প্রথম সারির নায়িকাদের মধ্যে জায়গা পাননি সিম্পল। প্রায় সব ছবিতেই তিনি সহনায়িকা। কেরিয়ারের আগাগোড়া মূল নায়িকাদের ছায়ায় আড়ালে থাকা সিম্পল আশির দশকে অভিনয় ছেড়ে দেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১০:১৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
নায়িকা হিসেবে জনপ্রিয়তায় দিদির ধারেকাছে পৌঁছতে পারেননি। কিন্তু দুই বোনের ঘরোয়া ঘেরাটোপে পা রাখতে পারেনি বলিউড। সেই বলিউড, যেখানে দিদিকে অনুসরণ করে যেখানে পা রেখেছিলেন সিম্পল কাপাডিয়া। পর্দায় এবং পর্দার বাইরে, দু’ দিকেই ডিম্পলের এই বোনের জীবন ছিল স্পল্পস্থায়ী।
০২১৮
গুজরাতি ব্যবসায়ী চুনীভাই কাপাডিয়ার মেজো মেয়ে সিম্পলের জন্ম ১৯৫৮-র ১৫ অগস্ট। দিদি ডিম্পল, বোন রীম এবং ভাই সুহেলের সঙ্গে সিম্পলের শৈশব কেটেছিল মুম্বইয়ে। তাঁদের মা বিট্টি কাপাডিয়া ছিলেন গৃহবধূ।
০৩১৮
কোদাইকানালের এক আবাসিক স্কুলে পড়তেন সিম্পল। কিন্তু ছোট থেকেই তাঁর আগ্রহ ছিল না স্কুলের পড়ায়। তবে সিনেমা দেখতেও যে ভালবাসতেন, তা-ও নয়। হিন্দি ছবির প্রতি ভাললাগা এল সত্তরের দশকে। ‘ববি’-তে দিদির আকাশছোঁয়া সাফল্য দেখার পরে।
০৪১৮
অভিনয়ের সুযোগ পেতে দেরি হল না সিম্পলের। জামাইবাবু রাজেশ খন্নার নায়িকা হিসেবে প্রথম বার পর্দায় দেখা গেল তাঁকে, ‘অনুরোধ’ ছবিতে। ‘দেয়া নেয়া’-অনুসরণে তৈরি এই ছবির পরিচালক ছিলেন শক্তি সামন্ত।
০৫১৮
তবে ‘অনুরোধ’-এ রাজেশ খন্না-সিম্পলের রসায়ন পর্দায় জনপ্রিয় হয়নি। প্রথম ছবিতে সেভাবে দাগ কাটতে না পারলেও সুযোগের অভাব হয়নি সিম্পলের। এরপর তিনি অভিনয় করেন বাসু ভট্টাচার্যের ‘চক্রব্যূহ’ ছবিতে। এখানে তিনি রাজেশ খন্নার প্রার্শ্বনায়িকা। রাজেশ ছিলেন ছবির সহ প্রযোজক।
০৬১৮
‘চক্রব্যূহ’ বক্স অফিসে সফল হলেও এই ছবি সিম্পলের কেরিয়ারে নতুন কোনও গতি যোগ করতে পারেনি। এরপর বলিউডের প্রথম সারির অভিনেতদের সঙ্গে সিম্পল অভিনয় করেন ‘এহসাস’, ‘মন পসন্দ’, ‘লুটমার’, ‘দুলহা বিকতা হ্যায়’, ‘জীবনধারা’-সহ বেশ কিছু ছবিতে। ১৯৮৫ সালে মুক্তি পাওয়া সমান্তরাল ছবি ‘রহগুজর’-এ শেখর সুমনের বিপীরতে নায়িকা ছিলেন সিম্পল।
০৭১৮
প্রায় কুড়িটি ছবিতে অভিনয় করার পরেও বলিউডের প্রথম সারির নায়িকাদের মধ্যে জায়গা পাননি সিম্পল। প্রায় সব ছবিতেই তিনি সহনায়িকা। কেরিয়ারের আগাগোড়া মূল নায়িকাদের ছায়ায় আড়ালে থাকা সিম্পল আশির দশকে অভিনয় ছেড়ে দেন।
০৮১৮
১৯৮৬ সালে মুক্তি পেয়েছিল তাঁর অভিনীত শেষ ছবি ‘প্যায়ার কে দো পল’। পরের বছর ‘পরখ’-এ তিনি আইটেম ডান্স করেছিলেন। এর পরেও তিনি টিনসেল টাউনের অংশ ছিলেন। কিন্তু কস্টিউম ডিজাইনার হিসেবে।
০৯১৮
‘ইনসাফ’, ‘দৃষ্টি’, ‘লেকিন’, ‘আজুবা’, ‘ডর’, ‘আজ কি অউরত’, ‘বরসাত’, ‘ঘাতক’, ‘জান’, ‘চাচি ৪২০’, ‘জব প্যায়ার কিসি সে হোতা হ্যায়’, ‘ইন্ডিয়ান’, ‘ইয়ে হ্যায় মুম্বই মেরি জান’, ‘রোক সাকো তো রোক লো’, ‘শোচা না থা’-সহ বেশ কিছু বক্সঅফিস সফল ছবির পোশাক পরিকল্পক ছিলেন তিনি।
১০১৮
‘রুদালী’ ছবির জন্য জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত হন সিম্পল। ওই একই ছবিতে নায়িকা ‘শনিচরী’-র ভূমিকায় অভিনয় করে জাতীয় পুরস্কার পান তাঁর দিদি, ডিম্পলও। সানি দেওল, তব্বু, অমৃতা সিংহ, শ্রীদেবী, প্রিয়ঙ্কা চোপড়া-সহ বলিউডের বহু তারকা সেজেছেন সিম্পলের সৃষ্টিতে।
১১১৮
অভিনেত্রীর তুলনায় কস্টিউম ডিজাইনার হিসেবে বেশি পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন সিম্পল। কিন্তু সেই কেরিয়াও থমকে গেল আচমকা। ২০০৫-এ জানা গেল, সিম্পল ক্যানসার-আক্রান্ত।
১২১৮
অসুস্থ অবস্থাতেও জীবনের শেষ শক্তিবিন্দু অবধি কাজ করে গিয়েছেন তিনি। চার বছর মরণপণ যুদ্ধের পরে হার মানলেন সিম্পল। অন্ধেরীর এক হাসপাতালে তিনি মারা যান ২০০৯-এর ১০ নভেম্বর।
১৩১৮
সিম্পলের ছোট বোন রীম মারা গিয়েছিলেন আগেই। মৃত্যুর কারণ ছিল অতিরিক্ত মাদকসেবন। পরবর্তীতে তাঁদের ভাই সুহেলের অকালমৃত্যু হয় পথ দুর্ঘটনায়।
১৪১৮
সিম্পলের বিবাহিত জীবনও ছিল সংক্ষিপ্ত। বিয়ে করেছিলেন শিখ পরিবারে। বিয়ের কিছু পরেই বিচ্ছেদ। ছেলে কর্ণকে নিয়ে আলাদা থাকতেন সিম্পল। তিনি যখন মারা যান, তাঁর একমাত্র ছেলের বয়স মাত্র পনেরো বছর।
১৫১৮
এরপর কর্ণের জীবনে মায়ের জায়গা নেন ডিম্পল। সাক্ষাৎকারে বারবার ডিম্পলের প্রতি নিজের কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন কর্ণ। তাঁর কথায়, মাসি ডিম্পল তাঁর দ্বিতীয় মা। ইতিমধ্যে অভিনয়ও করেছেন কর্ণ। ২০১৯-এ মুক্তি পেয়েছে তাঁর প্রথম ছবি ‘ব্ল্যাঙ্ক’।
১৬১৮
অভিনয়ের পাশাপাশি কর্ণ কাজ করেছেন সহকারী পরিচালক হিসেবেও। তাঁর অভিনেতা হয়ে ওঠার পিছনে টুইঙ্কল খন্না এবং অক্ষয়কুমারের অবদান গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন তিনি।
১৭১৮
সিম্পলের মৃত্যুতে মানসিকভাবে অত্যন্ত ভেঙে পড়েছিলেন ডিম্পল। সে সময় শোকগ্রস্ত ডিম্পলের পাশে ইন্ডাস্ট্রির সহকর্মীদের মধ্যে ছিলেন সানি দেওল, ঋষি কপূর, নীতু সিংহের মতো ঘনিষ্ঠ তারকারা। সিম্পলের জন্য শোকপ্রকাশ করেছিলেন পর্দার খলনায়ক রঞ্জিতও।
১৮১৮
শোনা যায়, রঞ্জিতের সঙ্গে সিম্পলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে আপত্তি ছিল রাজেশ খন্নার। অবশ্য শেষ দিকে, কাপাডিয়া পরিবারের সঙ্গে রাজেশের দূরত্ব বেড়ে গিয়েছিল অনেকটাই। ১৯৮২ সালে ডিম্পলের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর থেকে শ্যালিকা সিম্পলের সঙ্গেও তাঁর প্রথম ছবির নায়ক রাজেশের যোগাযোগ ধীরে ধীরে ক্ষীণ হয়ে গিয়েছিল।