অভিনেতারা আবার সেটমুখো হবেন।
অনেক আনন্দ চাপা উত্তেজনা, সব মিলিয়ে সাজ সাজ রব টলিপাড়ায়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী, ১৬ জুন থেকে ৫০ জনের ইউনিট নিয়ে আবার খুলে যাবে স্টুডিয়োর দরজা। বাড়ি থেকে শ্যুটিংয়ের পর্ব মিটিয়ে অভিনেতা, কলাকুশলী, পরিচালক আবার সেটমুখো হবেন। প্রস্তুতির জন্য হাতে সময় মাত্র এক দিন। এই অবস্থায় ঠিক কী অনুভূতি সবার মনে? আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে মুখ খুললেন দেবশ্রী রায়, রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়, অন্বেষা হাজরা, শ্বেতা ভট্টাচার্য-সহ টলি পাড়ার একাধিক ব্যক্তিত্ব।
লকডাউনের আগে টেলিপাড়া সরগরম হয়েছিল দেবশ্রী রায়ের প্রত্যাবর্তনের খবরে। ১০ বছর ক্যামেরা থেকে দূরে থাকার পর তিনি ফিরছেন স্নেহাশিস চক্রবর্তীর নতুন ধারাবাহিক ‘সর্বজয়া’র হাত ধরে। এই ধারাবাহিকে দেবশ্রীই মুখ্য ভূমিকায়। কথা ছিল, প্রোমো মুক্তির পর মে মাসের শেষে শ্যুট শুরু হবে ‘সর্বজয়া’র। লকডাউন সেই তোড়জোড়ে দাঁড়ি টেনেছিল। প্রযোজক জানিয়েছেন, খুব শিগগিরিই শ্যুট শুরু হবে। কী বলছেন ‘সর্বজয়া’ দেবশ্রী? তিনি জানালেন, কোভিড প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ তাঁর নেওয়া হয়ে গিয়েছে। প্রযোজক, পরিচালক যে দিন বলবেন সে দিন থেকেই তিনি শ্যুট শুরু করবেন। ‘‘প্রায় জন্ম থেকে অভিনয় করছি। ক্যামেরা আমার সবচেয়ে ভাল বন্ধু। তাই আলাদা করে অভিনয় বা শ্যুটিংয়ের জন্য কোনও প্রস্তুতি নিতে হয় না,’’ দাবি তাঁর। পাশাপাশি, ব্যক্তিগত সতর্কতাও বেশি করে মানবেন অভিনেত্রী। দেবশ্রীর কথায়, ‘‘পরিচ্ছন্ন থাকলে সব রোগের মোকাবিলা করা যায়। আমি সে দিকেই বেশি জোর দেব।’’
শ্যুটিং শুরুর খবরে খুশি ধারাবাহিক ‘দেশের মাটি’র ‘রাজা’ ওরফে রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর কথায়, ‘‘অভিনয়কে পেশা হিসেবে বেছেছি ক্যামেরার মুখোমুখি হব বলে। মুঠোফোন সেই স্বাদ দিতে পারে না। তাই অপেক্ষায় ছিলাম, কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে?’’ সম্প্রতি, করোনা থেকে ভুগে উঠেছেন রাহুল। যদিও তিনি জানিয়েছেন, ‘‘আমার ২১ দিন হয়ে গিয়েছে। সম্পূর্ণ সুস্থ। কোনও দুর্বলতা নেই। তাই নির্দিষ্ট দিনেই শ্যুটে যোগ দেব।’’ সংক্রমণ এড়াতে বাড়তি কোনও সাবধানতা অবলম্বন করবেন অভিনেতা? রাহুলের দাবি, কোভিড-বিধি মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েই দিয়েছেন। তা ছাড়া, স্টুডিয়োতেও সাবধানতা অবলম্বন করা হয়। তিনি সেই সমস্ত নিয়ম মানার পাশাপাশি চেষ্টা করবেন মুখে কম হাত দিতে। তাঁর মতে, মুখে হাত দিলে রোগ ছড়ায় দ্রুত।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রযোজক স্বাগত জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে। তাঁর দাবি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া মানেই সব সমস্যার সমাধান। আবার কাজের চেনা পরিবেশ ফিরতে চলেছে। পাশাপাশি তিনিও জোর দিয়েছেন স্যানিটাইজেশনের উপর। খাওয়ার জায়গায় যাতে ঠিক মতো স্যানিটাইজেশন হয়, সে দিকে সবার আগে নজর দেবেন তিনি। পাশাপাশি, তাঁর সংস্থার সমস্ত কর্মীই প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ নিয়েছেন। নির্দিষ্ট সময়ে দ্বিতীয় ডোজও নেবেন সবাই। প্রযোজকের দাবি, মাস্ক, গ্লাভস, স্যানিটাইজার, ফেসশিল্ড-- সব কিছুর ব্যবস্থা থাকবে আগের মতোই।
আনন্দের পাশাপাশি হালকা মনখারাপ ‘এই পথ যদি না শেষ হয়’ ধারাবাহিকের ‘ঊর্মি’ তথা অন্বেষা হাজরার, ‘যমুনা ঢাকি’ ধারাবাহিকের ‘যমুনা’ ওরফে শ্বেতা ভট্টাচার্যের। ২ জনেরই দাবি, যেন ছুটির মেজাজে দিন কাটাচ্ছিলেন। হালকা চালে কাটানো দিনগুলো ফের ডুব দেবে তুমুল ব্যস্ততায়। ছুটির কারণে বর্ধমানে নিজের বাড়িতে চলে এসেছিলেন অন্বেষা। মঙ্গলবারেই তিনি কলকাতায় ফিরছেন বলে জানিয়েছেন। শ্বেতার কথা, ‘‘বাড়িতে আমিই ছোটখাটো ইউনিট খুলে ফেলেছিলাম। এক দাদা ক্যামেরা ধরত। আরক দাদা সাজিয়ে দিত। বৌদি কিউ দিত। শ্যুট শেষে মুড়ি, সিঙাড়া আর আড্ডা।’’ বুধবার থেকে সে সবে দাঁড়ি।
কী বলছে আর্টিস্ট ফোরাম, ফেডারেশন? আর্টিস্ট ফোরামের পক্ষ থেকে দিগন্ত বাগচী জানিয়েছেন, আলাদা করে কোনও নিয়ম এখনই তাঁরা ঘোষণা করছেন না। মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া নির্দেশাবলিই আপাতত মানতে বলবেন অভিনেতাদের। পাশাপাশি মিটিংও চলবে। সর্বসম্মতিক্রমে নতুন পদক্ষেপ করা হলে বিবৃতি দিয়ে জানানো হবে সে কথা। প্রায়ই একই সুর শোনা গিয়েছে ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের কথাতেও। আপাতত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনেই চলবে সংগঠন, এমনটাই জানিয়েছেন তিনিও। স্বরূপ এও জানালেন, লকডাউন উঠলেই ৮-১০টি ছবির শ্যুট শুরু হবে। শুরু হবে একাধিক ওয়েব সিরিজের শ্যুটিংও। সবাই যাতে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশিত কোভিড বিধি মেনে চলেন, সে দিকে কড়া নজর রাখবে ফেডারেশন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy