Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

‘শুটিং বন্ধ করে বেশি দিন ইন্ডাস্ট্রি চলতে পারে না’

‘ফেডারেশন অব সিনে টেকনিশিয়ান্স অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’-র নির্দেশে, অশোক ধানুকা প্রযোজিত ‘চালবাজ’ ছবির শুটিং লন্ডনে বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে ক্ষুব্ধ টলিউডের বড় অংশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৭ ০৩:০৭
Share: Save:

বিদেশে বাংলা ছবির শুটিং বন্ধ হয়ে যাওয়ার পেছনে কলাকুশলীদের ফেডারেশনের যে ভূমিকা, তার বিরুদ্ধে নিন্দায় সরব অভিনেতা তথা প্রযোজক দেব। ঘটনাচক্রে যিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ। আবার কলাকুশলীদের ফেডারেশনের রাশ রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ভাই তৃণমূলের স্বরূপ বিশ্বাসের হাতে। শুক্রবার দেবের বক্তব্য, ‘‘কে কী ভাবছে, জানি না। আমার মনে হয় না, এ ভাবে শুটিং বন্ধ করে বেশি দিন ইন্ডাস্ট্রি চলতে পারে। ফেডারেশনের দিকটা মাথায় রেখেও এ কথাই বলছি আমি।’’

‘ফেডারেশন অব সিনে টেকনিশিয়ান্স অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’-র নির্দেশে, অশোক ধানুকা প্রযোজিত ‘চালবাজ’ ছবির শুটিং লন্ডনে বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে ক্ষুব্ধ টলিউডের বড় অংশ। কিন্তু ফেডারেশনের জেদই বহাল থেকেছে। বিলেত থেকে ফোনাফুনি, প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরে যোগাযোগের চেষ্টা সত্ত্বেও শুটিং শুরু হয়নি।

প্রযোজক দেব জানান, শুটিং শেষ করে কলকাতা ফেরার পর ওই প্রযোজনা সংস্থার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা যেতে পারত। প্রয়োজনে নিষিদ্ধ করা যেতে পারত ওই সংস্থাকে। কিন্তু শুটিং বন্ধ করাটা খুব খারাপ। ‘‘লন্ডনে এত বড় দল নিয়ে গিয়ে শুটিংয়ের অনুমতি বার করা, সকলের ভিসা বার করা প্রচুর খরচসাপেক্ষ। তাই নিজে সব রকম চেষ্টা করেছিলাম শুটিংটা যাতে শুরু হয়ে যায়। কিন্তু হল না!’’— স্পষ্ট বলেন দেব। স্বরূপ বিশ্বাস অবশ্য নিজের অবস্থানে অনড়। তাঁর কথায়, ‘‘দেব হয়তো সবটা না জেনেই মন্তব্য করেছেন। তবে শিল্পী হিসেবে উনি ওঁর মতামত জানাতেই পারেন। আমাদের ফেডারেশনের সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।’’ স্বরূপের অভিযোগ, “কিছু প্রযোজক বারবারই নিয়ম ভাঙেন। আশা করি তাঁরা ভুল বুঝতে পারবেন।”

ফেডারেশনের নিয়ম অনুযায়ী, বিদেশে শুটিং করতে গেলে, কলাকুশলীদের যে বিভিন্ন সংগঠন (গিল্ড) আছে, তার প্রতিটি থেকে নির্দিষ্ট সংখ্যক টেকনিশিয়ান (মোট ১৯ জন) নিয়ে যাওয়ার চুক্তি বহু দিনের। যদিও ২০১৫ সালের পর থেকে এই চুক্তির পুনর্নবীকরণ হয়নি। কলাকুশলীদের সংগঠনের অনেক অবশ্য বলছেন, ধানুকার প্রযোজনায় কলাকুশলীদের সংখ্যা কম থাকার ঘটনা নতুন নয়। ভিসা না-মেলার অজুহাত দেখিয়ে দিনের পর দিন বঞ্চিত করা হয় তাঁদের। প্রযোজক পরিচালকদের অনেকেরই অবশ্য ফেডারেশনের নিয়মের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন আছে।

আরও পড়ুন:শুটিং বন্ধের নিন্দায় সরব টলি-পাড়া

ব্রিটেনের প্লিমাথ থেকে ছবির প্রযোজক শুক্রবার দুপুরে জানান, টেকনিশিয়ানদের ‘বিদ্রোহে’ শুটিং করা যাচ্ছে না। ফিরছেন তাঁরা। স্বরূপ বিশ্বাসের দাবি, নিয়মমাফিক ১৯ জন কলাকুশলী নিয়ে বিলেতে যাননি প্রযোজক। ট্রলি, আর্টসেটিং, প্রোডাকশনের লোক নেওয়া হয়নি শুটিংয়ে। প্রযোজক অবশ্য জানান, ১৯ জনই এসেছেন। তবে ভিসা-সমস্যার জন্য ধাপে ধাপে এসেছেন তাঁরা।

ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সূত্রের খবর, এমনিতেই বাংলা ছবির ছোট বাজারে দু’তিন কোটির বাজেটের খরচ তুলতে হিমশিম খেতে হয়। প্রযোজক বলছেন, “৪ জুলাই অবধি বিলেতে নানা জায়গায় কাজ রাখা হয়েছিল। অন্তত ৫০-৬০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হল। শেষ মুহূর্তে বেশি টাকার টিকিট কেটে সবাইকে ফেরাতে হচ্ছে।”

ফেডারেশন অবশ্য অনড়। সাধারণ সম্পাদক অপর্ণা ঘটক সাফ জানাচ্ছেন, ‘‘নিয়ম মেনে কাজ হয়নি বলেই বন্ধ করা হয়েছে।’’ গোড়ায় আইনি লড়াইয়ের কথা ভাবলেও, শুটিং ভেস্তে যাচ্ছে দেখে এখন পিছিয়ে আসছেন ধানুকারা। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘কোনও অসুবিধা ছিল না। শুধু ইগোর লড়াইয়ে আমার টেকনিশিয়ানদের কাজ বন্ধ করিয়ে দেওয়া হল।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy