Sharman Joshi, talented yet one of the underrated actors in Bollywood dgtl
bollywood
‘থ্রি ইডিয়টস’ থেকে শেষে বি গ্রেড ছবি, বলিউডের প্রথম সারিতে এখনও অনিয়মিত প্রেম চোপড়ার জামাই শরমন
‘১৯২০ লন্ডন’, ‘ওয়াজাহ তুম হো’, ‘থ্রি স্টোরিজ’-সহ শরমনের আরও কিছু বি গ্রেডের ছবি বক্স অফিসে মুথ থুবড়ে পড়ে। এই ছবিগুলির পর থেকে তাঁর কাছে সুযোগ ক্রমে কমতে থাকে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২১ ১১:৩০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৪
যত বড় তারকার সঙ্গেই স্ক্রিন শেয়ার করুন না কেন, তিনি থাকলে দর্শকদের নজর পড়বে তাঁর উপরেই। তিনি শরমন জোশী। ‘থ্রি ইডিয়টস’-এর রাজু রস্তোগী, ‘গোলমাল’-এর ‘লক্ষ্মণ’ এবং ‘রং দে বসন্তী’-র ‘সুখি’ চরিত্রে সুঅভিনয়ের আড়ালে চাপা পড়ে যায় তাঁর জন্মগত পরিচয়।
০২২৪
মহারাষ্ট্রের নাগপুরে শরমনের জন্ম ১৯৭৯ সালের ২৮ এপ্রিল। তাঁর বাবা অরবিন্দ জশী ছিলেন থিয়েটারের নামী অভিনেতা। ‘শোলে’ ছবিতেও একটি ছোট ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন অরবিন্দ।
০৩২৪
শুধু বাবা-ই নন। অভিনয়ের ধারা শরমন পেয়েছেন পরিবারের অন্য সদস্যদের কাছ থেকেও। অভিনেত্রী কেতকী দাভে এবং পূর্বী জোশী তাঁর আত্মীয়া। শরমনের বোন মানসীর বিয়ে হয়েছে অভিনেতা রোহিত রায়ের সঙ্গে।
০৪২৪
মুম্বইযে বড় হওয়া শরমনের অভিনয়ে হাতেখড়ি হয় তাঁর বাবা অরবিন্দের কাছেই। সিনেমায় অভিনয়ের আগে শরমন কাজ করেছিলেন থিয়েটার জগতেও।
০৫২৪
কলেজে শরমনের সহপাঠী ছিলেন প্রেরণা চোপড়া। তিনি বলিউডের খলনায়কের ভূমিকায় বিখ্যাত অভিনেতা প্রেম চোপড়ার কন্যা। বলিউডে কেরিয়ারের সূত্রপাতের আগেই ২০০০ সালে মাত্র ২১ বছর বয়সে প্রেরণাকে বিয়ে করেন শরমন।
০৬২৪
১৯৯৭ সাল থেকে তিনি অভিনয় করতেন গুজরাতি থিয়েটারের মঞ্চে। বেশ কিছু নামী নাটকের অংশ ছিলেন তিনি। ‘অল দ্য বেস্ট’ নাটকে মূক ও বধিরের ভূমিকায় তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়। নাটকটির শো অন্তত ৫০০ রজনী পার করেছিল।
০৭২৪
ছোট পর্দায় তাঁর প্রথম কাজ ১৯৯৯ সালে, ‘গুব্বারে’ ধারাবাহিকে। সে বছরই তিনি প্রথম সুযোগ পান সিনেমায়। অভিনয় করেন ‘গডমাদার’-এ। এই ছবিতে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়। এর পর ‘লজ্জা’-য় একটি ছোট ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি।
০৮২৪
২০০১ সালে ছোট বাজেটের ছবি ‘স্টাইল’-এ শরমনের অভিনয় দর্শকদের নজর কাড়ে। এই ছবির পর থেকে তাঁর কাছে সুযোগের অভাব হয়নি। তবে তাঁর বেশ কিছু ছবির কাজ অর্ধসমাপ্ত থেকে যায়।
০৯২৪
ফলে শরমনকে আবার দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হয় দর্শকদের। ২০০৩ সালে তিনি অভিনয় করেন ‘এক্সকিউজ মি’-তে। তবে ছোট বাজেটের এই ছবিটি ‘স্টাইল’-এর মতো সফল হয়নি।
১০২৪
২০০৫ সালে বহু তারকাখচিত ‘শাদি নম্বর ওয়ান’-এ অভিনয় করেন শরমন। কিন্তু ছবিটি সাফল্য পায়নি। অর্থাৎ পর পর সুযোগ পেলেও প্রথম ছবির সাফল্য তাঁর কাছে অধরাই থেকে যাচ্ছিল।
১১২৪
তার পরের ছবিতে অবশ্য অনুরাগীদের ইচ্ছে পূরণ করেন শরমন। অসাধারণ অভিনয় করেন ‘রং দে বসন্তী’ ছবিতে। এর পর ‘গোলমাল’, ‘লাইফ ইন এ মেট্রো’-র মতো সুপারহিট ছবিতে অভিনয় করে তিনি চলে আসেন বলিউডের প্রথম সারির অভিনেতাদের মধ্যে।
১২২৪
সিরিয়াস এবং কমেডি—দু’টি ধারাতেই চুটিয়ে অভিনয় করছিলেন তিনি। এ সময় ইন্দ্রকুমারের ‘ধমাল’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। কিন্তু প্রথমে রাজি হয়েও পরে সরে আসেন। কারণ চরিত্রের বিষয়ে তিনি নাক উঁচু হয়ে পড়েছিলেন। ফলে ‘ধমাল’-এ তাঁর বদলে সুযোগ পান আশিস চৌধুরী।
১৩২৪
রোহিত শেট্টির ‘গোলমাল রিটার্নস’-ও তাঁর হাতছাড়া হয়ে যায়। কারণ তিনি মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক চেয়েছিলেন। শোনা যায়, তিনি দেড় কোটি টাকা চেয়েছিলেন। তাঁর ম্যানেজার বহু চেষ্টা করেও প্রযোজকদের রাজি করাতে পারেননি। তাঁর বদলে সুযোগ পান শ্রেয়স তলপড়।
১৪২৪
এই দু’টি প্রত্যাখ্যানে অবশ্য শরমনের বিশেষ ক্ষতি হয়নি। কারণ তার পরেই তিনি সুযোগ পান ‘থ্রি ইডিয়টস’-এ। সুপারডুপার হিট এই ছবির অংশ হয়ে বলিউডের আইকনিক চরিত্রদের মধ্যে অন্যতম হয়ে ওঠেন শরমন।
১৫২৪
কিন্তু তার পর কমেডি চরিত্রে অভিনয়ে অনাগ্রহী হয়ে পড়েন। ফিরিয়ে দেন ‘গোলমাল’-এর পরের অংশে অভিনয়ের প্রস্তাবও। তাঁর পরিবর্তে সুযোগ পান কুণাল খেমু।
১৬২৪
শরমনের অভিনয়ে মুগ্ধ বিধুবিনোদ চোপড়া তাঁকে কেন্দ্রীয় নায়ক করেন ‘ফেরারি কি সওয়ারি’ ছবিতে। ছবিটি মুক্তি পেতে বেশ কিছুটা সময় লাগে। ২০১২ সালে মুক্তি পাওয়ার পরে বক্স অফিসেও ছবিটি মিশ্র প্রতিক্রিয়া পায়।
১৭২৪
২০১২ সালে ‘থ্রি ব্যাচেলর্স’ মুক্তি পায়। ছবিটির কাজ শুরু হয়েছিল ১০ বছর আগে। মুক্তি পায় ১০ বছর পরে। শরমনের অভিযোগ ছিল, প্রযোজকরা তাঁর জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়েছেন। কেরিয়ারের সেই মুহূর্তে এ রকম একটি ছবি মুক্তি পাওয়া শরমনের কেরিয়ারকে এক ধাক্কায় পিছিয়ে দেয় অনেকটাই।
১৮২৪
এর পরের বছরগুলোয় শরমনের একটি বা দু’টি করে ছবি মুক্তি পেতে থাকে। এই সময় তিনি রেখার সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন ‘সুপার নানি’ ছবিতে। কিন্তু এই ছবিটিও মুখ থুবড়ে পড়ে বক্স অফিসে।
১৯২৪
২০১৫ সালে শরমনের অনুরাগীরা তাঁর ছবি দেখে আশাহত হয়ে পড়েন। কারণ সে বছর তিনি অভিন করেছিলেন ‘হেট স্টোরি থ্রি’-তে। শরমনের ভক্তরা ভাবতেও পারেননি তাঁর মতো অভিনেতা এরকম ছবিতে অভিনয় করতে পারেন!
২০২৪
‘১৯২০ লন্ডন’, ‘ওয়াজাহ তুম হো’, ‘থ্রি স্টোরিজ’-সহ শরমনের আরও কিছু বি গ্রেডের ছবি বক্স অফিসে মুথ থুবড়ে পড়ে। এই ছবিগুলির পর থেকে তাঁর কাছে সুযোগ ক্রমে কমতে থাকে।
২১২৪
কমেডি ছবি থেকে তিনি তো মুখ ফিরিয়ে নিয়েইছিলেন। এ বার সিরিয়াস ছবির সুযোগও তাঁর কাছ থেকে ক্রমে দূরে সরে যেতে থাকল। ধীরে ধীরে তিনি ফিরে গেলেন শূন্যতে, যেখান থেকে শুরু করেছিলেন, সেই বিন্দুতে।
২২২৪
ছবিতে সুযোগ না পেয়ে তিনি ফিরে যান থিয়েটারে। কঠোর প্রতিযোগিতার ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর অভাবও বোঝা যায়নি সেভাবে। শুধু তাঁর অভিনীত চরিত্রগুলি দেখে অনুরাগীদের মনে প্রশ্ন আসত, কোথায় গেলেন শরমন জোশীর মতো বলিষ্ঠ অভিনেতা?
২৩২৪
২০১৯ সালে তিনি অভিনয় করেন ‘মিশন মঙ্গল’-এ। কিন্তু ছবিটিতে তাঁর বিশেষ কিছু করার ছিল না। তবে এত সহজে হাল ছাড়তে নারাজ তিনি। এই মুহূর্তে অভিনয় করছেন আমির খানের সঙ্গে ‘লাল সিংহ চড্ডা’ ছবিতে।
২৪২৪
ছবির সুযোগ না থাকলে শরমন ব্যস্ত থাকেন থিয়েটারে। পাশাপাশি, স্ত্রী প্রেরণা এবং তিন সন্তানের সঙ্গে সময় কাটাতেও তিনি ভালবাসেন। অনুরাগীদের আশা, ওয়েব সিরিজের যুগে যেখানে তারকাদের থেকেও বিষয়বস্তু বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সে রকম একটা মঞ্চে নতুন করে ফিরে আসবেন ‘রাজু রস্তোগী’।