শুটের ফাঁকে শ্যামা-নিখিল।
শুটিং পাড়ার সেই আড্ডাটা আজ আর নেই
অতিমারি কী হাল করেছে! কোথাও জটলা নেই! চায়ের ভাঁড় হাতে গুলতানি নেই! গেটের ও পারে ব্যস্ত বিকেলের শহর। এ পারে ঝিমোচ্ছে স্টুডিয়ো ১৩। একদিকে ‘আলো ছায়া’র সেট। অন্য দিকে ‘কৃষ্ণকলি’র।
এই যদি স্টুডিয়ো চত্বরের ছবি হয় ভিতরের গল্প কেমন? পায়ে পায়ে সেটে পৌঁছতেই দেখা গেল, মুখে মাস্ক সকলের। হাতে গ্লাভস, মাথায় ক্যাপও আছে কারও কারও। সিন নিয়ে গুণগুণ আলোচনায় হালকা প্রাণের সাড়া।
সেট জুড়ে ‘কৃষ্ণকলি’র ঘরবাড়ি। সোফা সেট দিয়ে সাজানো বসার ঘর, আধুনিক সরঞ্জামে গোছানো রান্নাঘর, হাল ফ্যাশনের শোকেস, যুগলের ছবিতে রঙিন নিখিল-শ্যামার ঘর, অনবরত ওঠানামার জন্য কাঠের সিঁড়ি। কিন্তু শ্যামা, নিখিল, অশোক, দিশা, আম্রপালি, বসন্ত, সুজাতারা কোথায়?
শান্ত শ্যামা প্রয়োজনে কোমর বেঁধে ঝগড়া করে
নজরে এল, একটু দূরে দাঁড়িয়ে তিয়াসা রায় ওরফে ‘শ্যামা’ ব্যস্ত মোবাইলে। হালকা গোলাপি, জরির বুটিওয়ালা শাড়ি, গয়না, তিলক, কণ্ঠীতে সেজে, তার পরেই শট চ্যানেলের বিজ্ঞাপনী শুটে। মোবাইল হাতেই মুখোমুখি আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে। কিসে এত মনোযোগ? জানতে চাইতেই বিড়ম্বিত তিয়াসা, ‘‘চ্যানেলের মহালয়ায় ‘রক্ত দন্তা’ হয়েছিলাম তো! ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বারে বারে সেটাই দেখছি। বেশ নেচেছি। তাই না?’’
বিছানার উপর উপুড় হয়ে সিন মুখস্থ করছেন তিয়াসা
মানতেই হবে, তিয়াসাকে শ্যামা রূপে যেন মানায় ভাল। তিয়াসা কী বলেন? ‘‘একদম ঠিক কথা। শ্যামা হলেই যেন রূপ খোলে আমার।” একটি বিষয়ে মিল রয়েছে শ্যামা-তিয়াসার। দু’জনেই শান্ত! পাশ থেকে মন্তব্য ইপি সংযুক্তার, “শান্ত? মতে না মিললেই কোমর বেঁধে ঝগড়া করে! আবার মিটেও যায় ঝটপট।’’
ধারাবাহিকে যাই চলুক না কেন, তিয়াসা বললেন, ‘‘রিমঝিমদি, বিভানদা, নীল আর আমি একটা গ্রুপ। সিন না থাকলে আড্ডা, খাওয়াদাওয়া, ছোট করে পার্টি চলতেই থাকে।’’ কথা শেষ হওয়ার আগেই হাতে লম্বা সিনের কাগজ। আড্ডা থামিয়ে ‘শ্যামা চললেন মেকআপ রুমে। ওখানেই বিছানার উপর উপুড় হয়ে সিন মুখস্থ। সঙ্গে ড্রেস চেঞ্জ।
সবাই বলল, প্লাজমা লাগলে নীল দেবে
তিয়াসা যেতেই শূন্যস্থান পূরণ ‘নিখিল’ ওরফে নীল ভট্টাচার্যের। ফাঁস করলেন ‘রক্ত দন্তা’ ছাড়াও আরও একটি পর্ব নাকি চলছে তিয়াসার। কী সেটা? ‘‘ও এখন পিৎজা মোডে। আমরা কেউ পিৎজা অর্ডার করলেই ওকে দিতে হচ্ছে’’,জানালেন তিয়াসার তিন বছরের অনস্ক্রিন হাজব্যান্ড। শটের আগে ছোট্ট ন্যাপ! দুর্বলতা কমেনি? সদ্য কোভিড জয়ীকে প্রশ্ন করতেই চনমনিয়ে উঠলেন, ‘‘আমি সারাক্ষণ এনার্জিতে ফুটছি। ছোট্ট ঘুম পাওয়ার ন্যাপের কাজ করে।’’ ধারাবাহিক দুটো বউ উপহার দিয়েছে। সেই আনন্দেই একটানা ‘সেরা’-র তকমা? মুচকি হাসি নীলের মুখে, ‘‘নিখিল শ্যামাকে কতটা ভালবাসে? সেটা বাজিয়ে দেখতেও এই টুইস্ট।’’ তিন বছর ধরে ‘শ্যামা’-কে পর্দায় সামলাচ্ছেন। সেটেও পজেসিভ? ‘‘ধুরর!তিয়াসা সবার ছোট এখানে। সবাই মিলে ওকে সামলাই।’’
কৃষ্ণকলির অন্দরে...
সাফল্য নেচেকুঁদে উদযাপন করছেন? সোশ্যাল মিডিয়া বলছে। ‘‘নাচাগানা প্রায় রোজই হয়। মন ভাল করার টনিক’’, জবাব নীলের। মনখারাপ হয় ধারাবাহিক ট্রোলড হলে? ঝগড়াঝাঁটি? ‘‘আমার অন্তত হয় না। একজোটে আছি বলেই তো আমরা সেরা’’,সাফ জবাব। করোনামুক্ত হয়ে ফিরে ওয়ার্ম রিসেপশনই পেয়েছেন অভিনেতা। গোলাপ ফুল দিয়ে রিসেপশন জানিয়েছে সবাই। বলেছে, আর কারও হলে প্লাজমা দেবে নীল!
ছিলেন তিন ছেলের মা ‘সুজাতা’ নিবেদিতা মুখোপাধ্যায়ও। দুই ছেলের পর পর করোনা হওয়ায় বেশ মুষড়ে পড়েছিলেন। পাড়াতেও নাকি ট্রোলড হয়েছিলেন এই কারণে! সবাইকে চুপ করিয়েও দিয়েছিলেন, ‘‘যথেষ্ট সতর্ক, সাবধানী স্টুডিয়ো ১৩। তার পরেও সংক্রমণ ছড়ালে কারও দোষ নেই।’’ তিন ছেলেকে সেটের বাইরেও সামলাতে হয় বকুনি দিয়ে? ‘‘বকুনি যাতে না খেতে হয় তার জন্য আগেই ওরা কোনও দৃশ্য না বুঝলে বুঝে নেয়। খটোমটো কোনও বাংলা শব্দ উচ্চারণে অসুবিধে হলে সমার্থক শব্দ জেনে নিয়ে বলে। বকার স্কোপই নেই’’,মায়ের তৃপ্ত জবাব। উল্টে, ছেলে, ছেলের বৌয়েরা মন্দারমণি টেনে নিয়ে যায় সাফল্য সেলিব্রেট করতে!
বাইরে সন্ধে। সেটে মায়ের সঙ্গে বড়, ছোট বৌমা, নিখিল। পরিচালক বিজয় মাজি ঘরোয়া দৃশ্যের শট বোঝাচ্ছেন। শটের মাঝে আড্ডা দিচ্ছেন তিয়াসা। আচমকাই ‘শ্যামা’র হাত ধরে টান দিলেন নিখিল! হুঁশ ফেরাতে চাইলেন নায়িকার! হয়তো আড্ডা থেকে কাজে ফেরাতে চাইলেন! কী বলবেন একে? পজেসিভনেস?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy