গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
সুশান্ত সিংহ রাজপুতের অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা যদি বিহার থেকে মুম্বইয়ে স্থানান্তরিত না করা হয় তবে কিছুতেই বিচার পাবেন না রিয়া।মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে এ ভাবেই সুশান্তের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর হয়ে আর্জি জানালেন তাঁর আইনজীবী শ্যাম ডিভান।
সুশান্ত মামলা বিহার থেকে মুম্বইয়ে সরিয়ে আনার জন্য শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন রিয়া চক্রবর্তী। এ দিন ছিল সেই মামলার শুনানির দ্বিতীয় দিন। বিহার পুলিশ, মুম্বই পুলিশ এবং মহারাষ্ট্র সরকার— এই তিন পক্ষের কৌঁসুলির উপস্থিতিতে আজ প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলে শুনানি। শীর্ষ আদালত আজ কোনও ফয়সালা শোনায়নি, রায় স্থগিত রেখেছে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে সব পক্ষের বক্তব্য লিখিত ভাবে জানাতে হবে। পরবর্তী শুনানি বৃহস্পতিবার, ১৩ অগস্ট।
এ দিন রিয়ার আইনজীবী শীর্ষ আদালতে বলেন, তাঁর মক্কেল রিয়া খুবই ভালবাসতেন সুশান্তকে। তাঁর মৃত্যুর শোক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। শ্যাম ডিভান বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমেরিয়াকে নিয়ে চরম ট্রোল চলছে। পাশাপাশি, সুশান্তের মৃত্যুর ৩৮ দিন পরে কেন পটনার রাজেন্দ্রনগর থানায় এফআইআর দায়ের করলেন সুশান্তের পরিবার, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শ্যাম। শীর্ষ আদালতে তিনি বলেন, “সুশান্তের বাবা প্রভাবশালী আত্মীয়দের মাধ্যমে রিয়াকে এই মামলায় জড়ানোর চেষ্টা করছেন, তাই মামলা যদি বিহার থেকে মুম্বইয়ে স্থানান্তরিত করানা হয় তবে কিছুতেই বিচার পাবেন না রিয়া।’’
গোটা ঘটনায় সিবিআই তদন্ত প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “আমার মক্কেল চান মুম্বই পুলিশ আগে পুরো ঘটনার অনুসন্ধান করুক। এর পরেও যদি সিবিআই তদন্তের দরকার হয়, তো হোক। কিন্তু ঘটনার উৎসস্থল যেখানে, সেই মুম্বই ছেড়ে অন্য কোনও রাজ্যে এফআই আর দায়ের আইনত ঠিক নয়। যদি এফআইআর দায়ের করা হয়েও থাকে সে ক্ষেত্রেও তা যে জায়গায় ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে স্থানান্তরিত করা উচিত।’’রিয়ার উপর রাজনৈতিক এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ইচ্ছাকৃত ভাবে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ জানান তিনি।
যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিহার সরকারের কৌঁসুলি মনিন্দর সিংহ বলেন, “বিহার সরকারের পক্ষ থেকে কোনওভাবেই এফআইআর দায়ের করার জন্য চাপ দেওয়া হয়নি। যদি মুম্বই পুলিশ সঠিক ভাবে অনুসন্ধান করত তা হলে এফআইআরের কোনও প্রয়োজনই ছিল না।” তিনি আরও বলেন, “আবেদনকারী নিজেই পিটিশন দায়ের করে সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে মিডিয়ার চাপ কথাটি তিনি কী করে ব্যবহার করতে পারেন?”
অন্যদিকে, রিয়ার কৌঁসুলির সঙ্গে প্রায় একই সুরে গলা মিলিয়ে মহারাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে অভিষেক মনু সিঙ্ঘবি বলেন, “এফআইআরে ঠকানো, বিশ্বাসভঙ্গ, আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়েছিল। এই সব অভিযোগ যদি সত্যিই হয় তবে এদের মধ্যে কোন জিনিসটি মুম্বইয়ের বাইরে হয়েছিল?” তিনি আরও যোগ করেন, “সামনেই নির্বাচন, আর সে জন্যই বিহার সরকার এত তৎপর। নির্বাচন শেষ হয়ে গেলেই এই মামলা আর কেউ ফিরেও দেখবেন না।’’ বিহারের আইনজীবীর পাল্টা অভিযোগ, রাজনীতির কারণেই মহারাষ্ট্র পুলিশ সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে এফআইআর করতে পারেনি। কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, এই মামলার তদন্ত সিবিআইয়ের হাতেই থাকা উচিত।
সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর শীর্ষ আদালত জানায়, রিয়া চক্রবর্তী আদপে অভিযুক্ত, না প্রত্যক্ষদর্শী, নাকি ষড়যন্ত্রের শিকার তা এখনও জানা না গেলেও যেহেতু তিনি সুপ্রিম কোর্টের কাছে মামলা বিহার থেকে মুম্বই নিয়ে আসার আবেদন জানিয়েছেন, তাই তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy