অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ ফাইল চিত্র
কথা বলার স্বাধীনতা, পোশাক পরার স্বাধীনতা, খাদ্যাভাসের স্বাধীনতা— প্রতিহিংসার আস্ফালনে যেন সব কিছু এখন সংকটে। গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য লড়াই করতেই হবে। না হলে এই অনধিকার প্রবেশ আরও বড় আকার ধারণ করবে। এই দাবিতে পথে নামলেন হাজারো মানুষ। ছিল না কোনও রাজনৈতিক পতাকা। ছিলেন কেবল মানুষ, যাঁরা মনে করেন, বিজেপির মতো ফ্যাসিবাদী শক্তির আগ্রাসনে তাঁদের অস্তিত্ব সংকটে। বলা ভাল, বাংলার অস্তিত্ব সংকটে। তাঁদের কোনও বিশেষ রং প্রকাশ পায়নি এ দিনের প্রতিবাদ সভায়। শুধু মানবিকতার ধ্বজা ও়ড়ানো হয়েছে এ দিন।
অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ, দেবলীনা দত্ত এবং সুরকার-পরিচালক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় নিজেদের মতপ্রকাশ করেছিলেন টেলিভিশনে। তার পর থেকে অনলাইনে খুনের হুমকি পেতে পেতে বিধ্বস্ত সেই মানুষগুলো। বিশেষ করে সায়নী ঘোষ ও দেবলীনাকে লক্ষ্য করে কুমন্তব্যের জোয়ার আসতে থাকে। গণধর্ষণ, অ্যাসিড আক্রমণ, ইত্যাদি ভয়াবহ হুমকির সম্মুখীন হতে হয় তাঁদেরকে। বেশ কয়েক সপ্তাহ এটা চলতে থাকার পর সোমবার বিকেল ৩টে নাগাদ তারকা মহল সহ সাধারণ মানুষরা জড়ো হন মেট্রো চ্যানেলে।
সম্প্রতি আক্রান্ত অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ নিজের মতামত জানাতে উঠলেন মঞ্চে। যাঁরা আজ স্বৈরাচারীদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছেন, প্রথমেই তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গকে ক্রমশ বাকহীন করে দেওয়ার প্রয়াসে নেমেছে একটি দল। আমি আজ প্রথম বিরোধী আওয়াজ তুলছি না। আগেও অনেক কিছু বিষয়ে মুখ খুলেছি আমি। মনে পড়ছে, বেশ কয়েক বছর আগে এই ধরণেরই একটি জনসভায় মঞ্চে উঠেছিলাম বক্তব্য রাখার জন্য। তখনও কিন্তু খুনের হুমকি বা ধর্ষণের হুমকি আসার অবকাশ ছিল। তবে সে সব কিছু হয়নি। কিন্তু এখন বিষয়টা ভয়াবহ। শুধু আমি না, আমার আশেপাশের মানুষদের, আমার পরিবারকেও টেনে আনা হল।"
অভিনেত্রী জানালেন, ‘‘ছোটবেলা থেকেই রামায়ণ শুনে অভ্যস্থ, রাম কেবল একটি দলের সম্পত্তি নয়।’’ রামকে শ্রদ্ধা করেন সায়নীও। কিন্তু তাঁকে কোনও দিন রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার করা হতে পারে, এটা ভাবেননি। যে বিশেষ রাজনৈতিক দল নিজেদের স্বার্থে শ্রীরামের নাম উচ্চারণ করছে, তাদেরকে সায়নী বলতে চান, রাম তাদের একার নয়। রাম সকলের। আর সেই দেবতার নাম নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকেও হেনস্থা করা হল। ‘সায়নী ঘোষ তো কোন ছাড়!’ বললেন খোদ অভিনেত্রী।
‘‘সরকার যদি কেবল মানুষের কথা ভাবত, তাহলে দলের নেতৃবৃন্দরা অনাহার, কর্মহীনতা, অর্থনৈতিক মন্দা এ সব নিয়ে আলোচনা করত। কিন্তু নাহ, তার বদলে অন্য সব কিছু করা হচ্ছে। ধর্মের দোহাই দিয়ে আসল সমস্যাগুলোকে চেপে দেওয়া যায় না। বাংলার মানুষ এত বোকা নয়। কড়ায়গণ্ডায় তারা এই অপমানের শোধ তুলে নেবে।’’ শেষে জোর কণ্ঠে দাবি সায়নীর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy