তিনি পদ্ম শিবিরে। অভিনয় দুনিয়ার বন্ধুরা তাই কি দূরে সরে গিয়েছেন রুদ্রনীল ঘোষের থেকে? কোথাও কি অভিনেতা-রাজনীতিবিদ কোণঠাসা? জবাবে যেন ক্ষোভের সুর শোনা গেল তাঁর কথায়। শনিবার আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট জবাব অভিনেতা-রাজনীতিবিদের, একদা তাঁর বন্ধু যেমন, রাজ চক্রবর্তী, কাঞ্চন মল্লিক, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় সবাই রাজ্যের শাসকদল-ঘনিষ্ঠ। রাজ, কাঞ্চন শাসকদলের বিধায়ক। পরমব্রত বামপন্থার কথা বললেও শাসকদলের কোনও অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন না। রুদ্রনীলের ধারণা, সূক্ষ্ম ভেদ এই জায়গা থেকেই হয়তো তৈরি হয়ে গিয়েছে। কথা প্রসঙ্গে আরও বলেন, ‘‘শিক্ষিত, ভাল মনের মানুষ পরমব্রত। কিন্তু আমার সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ রাখেনি। ওর অভাব আন্তরিক ভাবেই অনুভব করি।’’ একই সঙ্গে দাবি, শাসকদল হয়তো ভয় পায় রুদ্রনীলকে। তাই তাঁর তিন বন্ধুকে তাঁর থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। নইলে কখন রুদ্রনীল তাঁর ধারালো যুক্তি-বুদ্ধির জোরে বন্ধুদের মাথা চিবিয়ে খাবেন, কে বলতে পারে?
পরমব্রত সম্পর্কে আরও অনুযোগ রয়েছে তাঁর অভিনেতা-বন্ধুর। রুদ্রনীলের কথায়, ‘‘পরমব্রত গান গায় আমাদের অর্থাৎ পদ্মগন্ধীদের বিরুদ্ধে। অথচ পশ্চিমবঙ্গে ঘটে যাওয়া একের পর এক অন্যায় নিয়ে ওর কোনও বক্তব্য নেই।’’ ‘ভিঞ্চিদা’-র আক্ষেপ, বেকারত্ব বৃদ্ধি, মইদুলের মৃত্যু বিচলিত করেনি তাঁর বন্ধুকে। তাই সেই সব ঘটনা তাঁর গান বা কথায় জায়গা পায়নি। যদিও এই নিয়ে ‘পরম বন্ধু’কে তিনি কোনও দোষারোপ করেন না। তার পরেও বন্ধু বিচ্ছেদের বেদনা তাঁর প্রতিটি বক্তব্যে, ‘‘পরম তো ঘোষণা করেই দিয়েছে, যারা ভারতীয় জনতা পার্টির সমর্থক, তাদের সঙ্গে ওর কোনও ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই।’’ একই সঙ্গে কটাক্ষও করেন, তিনি জানেন না প্রকৃত শিক্ষা এই ধরনের কোনও যুক্তি বা বুদ্ধির জন্ম দেয় কিনা।

রুদ্রনীলের দাবি, তিনি অনেক বার তাঁর মতো করে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছেন, পরমব্রত সেই হাত ধরেননি।
পরমব্রত বন্ধুত্বের হাত গুটিয়ে নিয়েছেন। পুরনো সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে রুদ্রনীল পাল্টা যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন কি? বিজেপি কর্মী রুদ্রনীলের দাবি, তিনি অনেক বার তাঁর মতো করে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছেন, পরমব্রত সেই হাত ধরেননি। পাশাপাশি, রাজনৈতিক দিক থেকে পরমব্রতর প্রকৃত অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। রুদ্রনীলের বক্তব্য, তাঁর বন্ধু কোন দলের সমর্থক? এই নিয়ে ধোঁয়াশা শাসকদল এবং বাম দলের মধ্যেও। উদাহরণ হিসেবে বলেন, ক’দিন আগে বাবুল সুপ্রিয় আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পরমব্রতকে কটাক্ষ করেন। একই ভাবে লাল শিবিরের যুব নেতা সৌরভ পালোধিও পরমব্রতর অবস্থান নিয়ে একাধিক বার প্রশ্ন তুলেছেন। অভিনেতার মতে, কোনও রাজনৈতিক দল যদি বন্ধুত্বে ভাঙন ধরায়, তার থেকে দুঃখের ঘটনা আর কিছুই হতে পারে না।