সুশান্তের জন্মদিনে এই ছবিই ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছিলেন রিয়া।
রিয়া চক্রবর্তী। বেঙ্গালুরুতে বেড়ে ওঠা বাঙালি মেয়ে। সুশান্তের জীবনে যিনি এসেছিলেন শেষ বসন্ত হয়ে। সুশান্তের মৃত্যুর পর আজ তিনি কোথায়?
মিডিয়াকে এড়িয়ে চলেছেন। ফোন বন্ধ। অথচ তাঁর ইনস্টাগ্রাম বলছে, সকালেও স্যাসি ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন প্রোফাইলে। কালকেও পিৎজা বানিয়েছেন মায়ের সঙ্গে। প্রেমিকের জীবনে যে ঝড় উঠেছিল তা কি এক বারের জন্যও টের পাননি রিয়া? নাকি সম্পর্কটাই আর ছিল না দু’জনের মধ্যে?
কে এই রিয়া চক্রবর্তী? কী তাঁর পরিচয়? কেন সুশান্তের মৃত্যুতে বারে বারে উঠে আসছে বছর ২৭-এর এই মেয়ের নাম?
পেশায় অভিনেত্রী রিয়ার বাবা ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। সৈনিক পরিবারে মানুষ। তাই রিয়ার ছোটবেলা কেটেছে ভারতের নানা প্রান্তে। পড়াশোনা করেছেন হরিয়ানার আম্বালার আর্মি পাবলিক স্কুলে। অভিনয়ে আসার ইচ্ছা ছিল ছোট থেকেই। ২০০৯-এ এমটিভি আয়োজিত এক রিয়্যালিটি শো-তে বিজয়ী হয়েই বিনোদন জগতে হাতেখড়ি হয় তাঁর। এর পর তেলুগু ছবি দিয়ে তাঁর অভিনয় জীবনের শুরু।
বলি ব্রেক মেলে ২০১৩-তে। ছবির নাম ‘মেরে ড্যাড কি মারুতি’। ধীরে ধীরে ‘সোনালি কেবল’, ‘দোবারা’ সমেত বেশ কিছু হিন্দি ছবিতে অভিনয় করতে শুরু করেন রিয়া। এই সময়েই মহেশ ভট্টর সঙ্গে তাঁর প্রেমের গুঞ্জন ছড়ায় বাজারে।
অসমবয়সী এই প্রেম নিয়ে কম কথা হয়নি বলিপাড়ায়। রিয়া বলেছিলেন, ‘‘উনি আমার শিক্ষক। ওঁকে আমি শ্রদ্ধা করি।’’
দু’জনে সে ভাবে একসঙ্গে কাজ না করলেও সুশান্তের সঙ্গে রিয়ার পরিচয় কী করে হল? কী ভাবেই বা সেই পরিচয় পরিণতি পেল প্রেমে? বলিউড তা জানে না। দু’জনের কেউই আগে বিনোদন জগতের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। উঠে এসেছিলেন সাধারণ পরিবার থেকে। এমনও হতে পারে, তাই হয়তো অন্য কোনও সমীকরণ কাজ করেছিল দু’জনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে।
‘কেদারনাথ’ মুক্তির পর যখন সারা আর সুশান্তের প্রেম নিয়ে খুব গুঞ্জন বাজারে ঠিক সেই সময়েই সবাইকে অবাক করে গত বছরের জুনে রিয়ার সঙ্গে লাদাখ ঘুরতে যান সুশান্ত। যদিও লাদাখ থেকে একসঙ্গে ছবি তাঁরা দেননি। প্রথমে ফ্যানেরা অতটা ঠাওর করতে না পারলেও দু’জনের একসঙ্গে লাদাখ যাওয়াটা যে নেহাতই কাকতালীয় নয়, তা বুঝতে বাকি ছিল না কারও।
কখনও রেস্তরাঁ, আবার কখনও বা জিমে...।সুশান্ত-রিয়ার প্রেম নিয়ে তখন তোলপাড় হয়েছিল বলিউড।
তার ঠিক কয়েক মাস পর, অক্টোবরের মাঝামাঝি চুপিচুপি প্যারিস পাড়ি দিয়েছিলেন রিয়া-সুশান্ত। সেলেব মানুষ। খবর চাউর হতে বেশি সময় লাগেনি। তার পরেই জোর গুঞ্জন। ও দিকে রিয়ার সঙ্গে আবার মহেশ ভট্টর নাকি সম্পর্ক রয়েছে, বলাবলি করতে শুরু করেন অনেকেই। সে যা-ই হোক, হ্যাঁ-না কিছুই বলেননি সুশান্ত-রিয়া। কথাতেই তো আছে, নীরবতা সম্মতির লক্ষণ। এর পরে কখনও রেস্তরাঁ, আবার কখনও বা জিমে... একসঙ্গে দু’জনেই ধরা পড়তে লাগলেন পাপারাৎজির লেন্সে। মুখে ‘উই আর জাস্ট ফ্রেন্ডস’ বলে কাটিয়ে দিলেও সুশান্ত-রিয়ার প্রেম নিয়ে তখন তোলপাড় বলিউড।
ওদের লাভ স্টোরি যেন মান্যতা পায় গত ২১ জানুয়ারি। সুশান্তের ৩৪ বছরের জন্মদিনে। তামাম দুনিয়াকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রায় খোলাখুলি সুশান্তের সঙ্গে প্রেমকে প্রকাশ্যে আনেন রিয়া। ইনস্টাতে দু’জনের আদরের ছবি পোস্ট করে রিয়া লেখেন, ‘মাই ক্রেজি ডায়মন্ড’। অতঃপর সম্পর্কে শিলমোহর। যদিও রিয়া বলেছিলেন, ‘‘ধুস, আমরা তো বন্ধুই। খুব ভাল বন্ধু।’’
আরও পড়ুন: মানসিক চাপ, আত্মহত্যা..এর আগেও এমন বহু ঘটনার সাক্ষী হয়েছে বলিউড
এরই মাঝে খবর আসে, সম্পর্কে নাকি চিড় ধরেছে ওঁদের। একসঙ্গে আর নেই তাঁরা। শোনা যাচ্ছিল, সুশান্তের পর পর কয়েকটা ফ্লপ নাকি এর পিছনে দায়ী।
তবে সে সমস্তকে মিথ্যে প্রমাণ করে ১১ মার্চ মুম্বইয়ের এক জিমের সামনে দু’জনে একসঙ্গে ধরা দেন ক্যামেরার লেন্সে। জনসমক্ষে রিয়া আর সুশান্তকে ওই শেষ বারই দেখা গিয়েছিল।
আরও পড়ুন: তারা দেখা ছিল নেশা, মেধাবী ছাত্র, ইঞ্জিনিয়ারিং ছাড়েন অভিনয়ের টানে
এর পর শুরু হয়ে যায় লকডাউন। ঘরবন্দি হয়ে পড়েন তারকারাও। সুশান্ত আর রিয়ার প্রেমেও কি অশনি সঙ্কেত হয়ে দাঁড়ায় এই লকডাউন?
বান্দ্রার ফ্ল্যাটে একা থাকতেন সুশান্ত। মা মারা গিয়েছেন কয়েক বছর আগে। বাবা রয়েছেন দেশের বাড়িতে। দিন দিন যে হতাশার অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছিলেন তার বিন্দুমাত্র আঁচও কেন পেতে দেননি রিয়াকে?
কী বা হল ১১ মার্চের পর? কথা বলাও কি বন্ধ করে দিয়েছিলেন ওঁরা দু’জন? উঠে আসছে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন? মহিলা ম্যানেজারের আত্মহত্যার চার দিন পর সুশান্তের মৃত্যু, ‘বয়ফ্রেন্ড’-এর মৃত্যুর পরেও রিয়ার হাসিখুশি ইনস্টা পোস্ট কোন রহস্যের ইঙ্গিত?
ধরে নেওয়া যাক, বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল তাঁদের। যদি তাই হয়, কারণ কী? আর সে কারণেই এত বড় একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন সুশান্ত? প্রশ্ন অনেক। উত্তর জানা নেই। চারি দিকে জট পাকিয়ে যাওয়া এক থমথমে রহস্য।
মাত্র ৩৪ বছরেই জীবন থেমে গেল সুশান্তের। তাঁর জীবনের শেষ ভালবাসা হয়ে রয়ে গেলেন বাঙালি মেয়ে রিয়া চক্রবর্তী!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy